জানুয়ারীতে চালু হচ্ছে আমেরিকান বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স

Share on Facebook

গত
বছরের ২৯শে অক্টোবর জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের ১৩ মিনিট পর লায়ন
এয়ারের একটি ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় ১৮৯ জনের প্রাণহানি হয় এবং এই বছরের
১০ই মার্চ
ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ৭৩৭ ম্যাক্স বিধ্বস্তের ঘটনায় ১৫৭ জন নিহত হয়। পাঁচ
মাসের ব্যবধানে দুটি দুর্ঘটনার কারণে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৪৬ জন। এরপর
মডেল নিয়ে তদন্ত করতে যাত্রীসেবা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স। তাই গ্রাউন্ডিংয়ে আছে বিমানগুলো মধ্য জানুয়ারী পর্যন্ত।

বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স গ্রাউন্ডিংয়ের ফলে এক
বছরে শতকোটি ডলার লোকসান গুনেছে বিভিন্ন এয়ারলাইন সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম ম্যাক্স
ব্যবহারকারী সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স বলছে, গ্রাউন্ডিংয়ের ফলে গত প্রান্তিকে তাদের লোকসান হয়েছে ২১ কোটি
ডলার। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে আয় হয়েছে ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। তাই ২০২০ সালে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আশা করছে এয়ারলাইন্সটি।

বৃহস্পতিবার সিএনবিসির স্কোয়াক অন দ্য
স্ট্রিট অনুষ্ঠানে সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনসের সিইও গ্যারি কেলি বলেন, আমরা আমাদের বর্তমান
পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নই। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ ম্যাক্সের হাতে সঁপে দিয়েছিলাম, কিন্তু সেগুলো এখন গ্রাউন্ডেড
রয়েছে। আমাদের ক্ষতিপূরণের জন্য বোয়িংয়ের সঙ্গে বসতে চাচ্ছি।

ইন্দোনেশিয়া ও ইথিওপিয়ায় বিমান দুর্ঘটনার
পর গ্রাউন্ডিং শুরু হওয়ার সময় সাউথওয়েস্টের হাতে ৩৪টি ম্যাক্স বিমান ছিল; যা যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো এয়ারলাইনসের
চেয়ে বেশি। গ্রাউন্ডিংয়ের সিদ্ধান্তে এয়ারলাইন্সটির টিকিট বিক্রি কমে যায় এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত
হয়। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে আগামী বছরে ৭৫টি ম্যাক্স বিমান সংগ্রহ করার কথা রয়েছে সাউথওয়েস্টের।

গ্রাউন্ডিং থাকা বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স

কেলি জানান, সাউথওয়েস্ট এতদিন বোয়িংয়ের
সিঙ্গেল আইলবিশিষ্ট বিমান ব্যবহার
করে এলেও বর্তমানে অন্যান্য ধরনের বিমানও ব্যবহারের কথা
ভাবছে তারা। তবে এ রকম একটি জটিল সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের
(এফএএ) পরিচালক স্টিভ ডিকসন গত মঙ্গলবার এক শিল্প সম্মেলনে জানান, বিমানটি
নিরাপদ কিনা, সে বিষয়ে এখনো সব পর্যালোচনা শেষ করেননি তারা। এই
প্রক্রিয়া শেষ হতে আরো কয়েক সপ্তাহ লাগবে।

আমেরিকান এয়ারলাইন্সের
সিইও ডাগ পার্কার বলেন, সেবা বিঘ্নের জন্য ক্ষতিপূরণ চাচ্ছেন তারা। গ্রাউন্ডিংয়ের ফলে
হাজারো ফ্লাইট বাতিল করেছে আমেরিকান, সাউথওয়েস্ট ও ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স।
এছাড়া যাত্রীদের চাহিদা পূরণে তাদেরকে অন্য মডেলের বিমানের
দ্বারস্থ হতে হয়েছে।

বোয়িং
৭৩৭ ম্যাক্সের সম্পর্কে জানা গেছে যে বিমানকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণে
রাখতে পাইলটদের জন্য আপডেট করা হয়েছে সফটওয়্যার। ইতোমধ্যে ৮০০টি
পরীক্ষা চালিয়েছে এই প্রতিষ্ঠান। গত মাস থেকে মিয়ামি, লন্ডন, ইস্তানবুল, সাংহাই ও সিঙ্গাপুরে
প্রশিক্ষণ সেশনে অংশ নিতে বিভিন্ন দেশের পাইলটকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বোয়িং। আশা করা যাচ্ছে যে মধ্য জানুয়ারীর আগেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে বোয়িং ৭৩৭
ম্যাক্সের উপরে থেকে।

Leave a Reply