আর্থিক সংকটে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ
Tweet
আর্থিক সংকট কাটাতে নতুন বিনিয়োগ খুঁজছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। তবে বিনিয়োগকারী না পাওয়ায় সংকট কাটেনি তাদের। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বকেয়া পরিশোধ না করায় দেনার পরিমাণ বাড়ছে।
রিজেন্ট এয়ারওয়েজ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ২০১০ সালের ১০ নভেম্বর। বর্তমানে তাদের বহরে রয়েছে মোট ৮টি বিমান। এর মধ্যে ২টি ড্যাশ-৮ কিউ ৩০০ বিমান, ২টি বোয়িং ৭৩৭-৭০০ বিমান ও ৪টি বোয়িং ৭৩৭- ৮০০ বিমান রয়েছে।
সূত্র জানায়, বিভিন্ন চার্জ বাবদ ২০১৮ সালের জুলাই পর্যন্ত রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কাছে ১১৫ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার ৯৮৪ দশমিক ৫৪ টাকা পাবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। চট্টগ্রামের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে রিজেন্টের বকেয়া রয়েছে ৯ কোটি ৫৫ লাখ ৩৪ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। অন্যদিকে টিকিট বিক্রি করে যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া ভ্যাটও পরিশোধ করেনি ১৩ কোটি ৯৮ লাখ ৩৭ হাজার ৪০০ টাকা। রাজস্বের অর্থ পরিশোধ না করায় গত জুনে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছিল ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটের টঙ্গী ভ্যাট বিভাগ। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামের কমিশনার সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘যাত্রীদের কাছ থেকে টিকিট বিক্রির সময় আদায়কৃত ভ্যাট পরিশোধ করেনি রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। আমরা এই বকেয়া আদায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
বিভিন্ন কারণে আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে কর্মীদের বেতনও দেয়া হচ্ছে কয়েকটি ধাপে। প্রায় ৮০০’রও বেশি জনবল রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানে। পাইলটের সংখ্যা ৬৪ জন। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন পাইলট চাকরি ছেড়ে গেলেও নতুন করে পাইলট নিয়োগ দিচ্ছে না এয়ারলাইন্সটি। সুত্র জানায় একটি বোয়িং ৭৩৭-৭০০ বিমান সি-চেকে থাকায় আরও বেশি সংকটের মুখে পড়েছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ।
সূত্র জানায়— দেশের অভ্যন্তরে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, যশোর, সৈয়দপুর এবং আন্তর্জাতিক রুট ব্যাংকক, দাম্মাম, দোহা, কাঠমান্ডু, কলকাতা, কুয়ালালামপুর, মাস্কট ও সিঙ্গাপুরে যাত্রী পরিবহন করতো রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। সম্প্রতি সংকটের কারণে যশোর, সৈয়দপুর, কাঠমান্ডু ও দাম্মাম রুটে তাদের ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে।
বারবার তাগাদা দিলেও বকেয়া পরিশোধ করছে না রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। বেবিচকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বেবিচকের মাসিক সমন্বয় সভায় এয়ারলাইন্সগুলোর কাছ থেকে পাওয়া অর্থ আদায় নিয়ে আলোচনা হয়। বকেয়া আদায়ে প্রতি তিন মাস পর চিঠি দিতে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এ প্রসঙ্গে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চিফ অপারেশন অফিসার (সিওও) আশীষ রায় চৌধুরী বলেন, ‘এনবিআরেরর পাওয়া টাকা পরিশোধ করা শুরু করেছি। বেবিচকের পাওনা পরিশোধ করা হবে। বেবিচকে মূল দেনার চেয়ে সুদের পরিমাণ বেশি, এটি মওকুফ করতে বেবিচকের কাছে আবেদন করেছি। এ বিষয়ে সমাধান হলেও দেনা পরিশোধ করা হবে।’
এ এয়ারলাইন্সের সিওও’র ভাষ্য, ‘দেশি এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে জ্বালানি তেলের দাম বেশি। বেবিচকে ল্যান্ডিং আর পাকিং চার্জ ছাড়াও অন্যান্য চার্জ অনেক বেশি। এ বিষয়ে সমাধান না হলে দেশি এয়ারলাইন্সগুলো টিকতে পারবে না।’