জানজিবার দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে কিছু কথা

Share on Facebook

জানজিবার দ্বীপ, তানজানিয়া

জানজিবার হল তানজানিয়া অধিনে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত কয়েকটি সুন্দর দ্বীপের এক সমষ্টি। জানজিবার তানজানিয়া উপকূল থেকে ৩৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।দ্বীপটি ১,৪৬৪কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। জানজিবার দুটি প্রধান দ্বীপ অঞ্চল উনগুজা এবং পেমবা নিয়ে গঠিত। নিজস্ব সরকার থাকলেও এটি তানজানিয়ার স্বায়ত্বশাসিত একটি অংশ।

দ্বীপমালার নামটি  দুটি আরবীয় শব্দের সংমিশ্রণ থেকে উদ্ভূত একটি যৌগিক শব্দ; যেমন জেঞ্জ (অর্থ হল কালো) এবং বার (যার অর্থ ভূ-খন্ড)। অর্থাৎ, জানজিবার, “কৃষ্ণাঙ্গদের ভূখন্ড” বা “দ্য ল্যান্ড অফ দ্য ব্ল্যাকস” নামেও অভিহিত রয়েছে।

জানজিবার-এ মাইক্রোলিথিক (ক্ষুদ্রপাথর সংক্রান্ত) সরঞ্জামের আবিষ্কার এই ঘটনার স্বপক্ষে প্রমাণ দেয় যে, প্রায় প্রস্তর পরবর্তী যুগের সূচনা থেকেই, কমপক্ষে ২০,০০০ বছর আগে বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষের দ্বারা জানজিবার অধ্যুষিত ছিল। জানজিবার দ্বীপটি, তানজানিয়ার প্রজাতন্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের এক সার্বভৌম অংশ। জানজিবার-এর নিজস্ব সরকার রয়েছে যা প্রতিনিধিমূলক সদন এবং বৈপ্লবিক পরিষদের সমন্বয়ে গঠিত। রঙিন ও ব্যস্ত বাজারের সঙ্গে জানজিবার-এ অবস্থিত স্টোন্ টাউন হল খুবই জনপ্রিয়, সংকীর্ণ গলিপথগুলি হল আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যা বহু পর্যটকরা পরিদর্শনে আসেন। এই দ্বীপটি তার মশলার বৈচিত্র্যতার জন্য বেশ জনপ্রিয়; যেমন দারুচিনি, ভ্যানিলা, লবঙ্গ, গোলমরিচ, এলাচ এবং আরোও অনেক কিছু। এই কারণেই, তানজানিয়ায় জানজিবার-এর আইল্যান্ডটি “মশলার দ্বীপ” বা “স্পাইস আইল্যান্ড” নামেও পরিচিত রয়েছে।

দ্বীপটির বৈশিষ্ট্য হল বালুকাময় সৈকত, উপকূলীয় প্রবাল-প্রাচীর বা রীফ এবং সমুদ্রের আদিম বিস্তৃতি, যা পর্যটকদের বিভিন্ন জলক্রীড়া উপলব্ধির প্রস্তাব দেয়।তাই প্রতি বছর  দীপটিকে উপভোগ করার জন্য অগনিত পর্যটক আসে।

এছাড়াও জানজিবার দ্বীপের নিকটে কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেমন-স্পাইস প্ল্যানটেশন (মশলার চাষ), কিজিমকাজি মসজিদ আ্যন্ড ডলফিন টাওয়ার, জোজানি অরণ্য এবং প্রিসন আইল্যান্ড।এইসব স্থানগুলোও দর্শনীয় স্থান হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ।

 

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়

যেকোনো সময় পর্যটকরা জানজিবার পরিভ্রমণে যেতে পারেন। কিন্তু এই দীপটি ভ্রমণের কিছু ভাল  সময় আছে।জানজিবার-এ একটি ক্রান্তীয় গ্রীষ্মপ্রধান প্রকৃতির জলবায়ু অনুভূত হয়, যা বছরের এক প্রধান অংশকে উষ্ণ ও আর্দ্র করে তোলে। আপনি যদি (মার্চ থেকে মে) বৃষ্টিপাত এড়াতে চান, তবে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গরম ও শুষ্ক মরশুম আপনার জন্য নিখুঁত হয়ে উঠবে। এমনকি জুন থেকে অক্টোবর মাসেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকে, তবে তাপমাত্রা কম থাকে। প্রকৃতপক্ষে এটিও জানজিবার পরিদর্শনের জন্য অন্য আরেকটি আদর্শ সময়।

কিভাবে যাবেন

পর্যটকরা জানজিবার-এ পৌঁছানোর জন্য বিমান মাধ্যমে বা সমুদ্রপথের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারেন। ব্রিটিশ এয়্যারওয়েজ, ইথিওপিয়্যান এয়্যারলাইনস, এমিরেটস এয়্যারলাইনস, কেনিয়া এয়্যারলাইনস সহ সমস্ত প্রধান প্রধান বিমান সংস্থাগুলির জানজিবার-এ পরিষেবা উপলব্ধ রয়েছে। এছাড়াও এখানে বেশ কিছু ফেরি রয়েছে, যা জনসাধারণকে জানজিবার থেকে অন্যান্য স্থানে পরিবহন করে নিয়ে যায়।

কোথায় থাকবেন

জানজিবার-এ পৌঁছে পর্যটকদের তাদের থাকা আরামদায়ক এবং স্মরণীয় করে তুলতে বেশ কিছু অসাধারণ হোটেলের দ্বারা প্রদত্ত বাসস্থানোপযোগী ব্যবস্থার সুবিধালব্ধতা সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। তাদের মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল রাস মিচাম্ভি বীচ রিসর্ট, ঢৌউ প্যালেস হোটেল, চুম্বে আইল্যান্ড কোরাল পার্ক, টেম্বো হাউস হোটেল, রাস নাঙ্গউই বীচ হোটেল এবং জামানি জানজিবার কেম্পিনস্কি।

Leave a Reply