বহুল প্রতীক্ষিত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
Tweet
ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমাহারে সাজানো হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল আজ বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচ তারকা মানের এই হেটেলটির উদ্বোধন হলেও এর বাণিজ্যিক সেবা কার্যক্রম শুরু হবে নভেম্বর মাসে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ শেষেই হোটেলটি বাণিজ্যিকভাবে খুলে দেওয়া হবে বলে সুত্র জানিয়েছে।
গতকাল বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মোহম্মদ শাহজাহান কামাল। এসময় বিমান ও পর্যটন সচিব মো. মহিবুল হক এবং বাংলাদেশ সার্ভিস লিমিটেড (বিএসএল) এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোকাব্বের হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
স্থপতি উইলিয়াম বি ট্যাবলারের চমৎকার নকশায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এ দেশের প্রথম পাঁচ তারকা হোটেল হিসেবে যাত্রা শুরু করে ১৯৬৬ সালে। তারপর এটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল নামেই চলে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত। এরপর হোটেল কোম্পানি স্টারউড’র সঙ্গে চুক্তি হওয়ায় ১৯৮৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ঢাকা হোটেল শেরাটন নামে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলে। স্টারউডের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষে চুক্তি আর নবায়ন না হওয়ায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ‘রূপসী বাংলা হোটেল’ নামে এটি পরিচালিত হয়। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হোটেলটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সার্ভিস লিমিটেড (বিএসএল) ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলস গ্রুপ (এশিয়া প্যাসিফিক) প্রাইভেট লিমিটেডের (আইএইজি) মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে হোটেলটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে এর সংস্কার কাজ শুরু করা হয় ২০১৫ সালের মার্চে। সংস্কারের পর রূপসী বাংলা হোটেলটি আবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল নামেই চলবে।
৭১’র ২৫ মার্চের কালরাতে জীবন বাজি রেখে ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যার ছবি ধারণ করেছিলেন এই হোটেলে অবস্থানরত বিবিসির সাংবাদিক মার্ক টালি ও সাইমন ড্রিং, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) পাকিস্তান ব্যুরোর প্রধান আর্নল্ড জেইটলিন, ক্লেয়ার হলিংওর্থ, ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক ডেভিড গ্রিনওয়ে। এসব ছবির মাধ্যমেই বিশ্ব জানতে পেরেছিলো বাংলাদেশ কী নৃশংসতার স্বীকার হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, এর আগে রূপসী বাংলা হোটেলে কক্ষ ছিল ছোট-বড় মিলিয়ে ২৭২টি। সংস্কারের পর এ সংখ্যা কমে ২৩১টিতে দাঁড়িয়েছে। আয়তনের দিক থেকে কক্ষের আকার দাঁড়িয়েছে ২৬ থেকে ৪০ স্কয়ার মিটার। বিশ্বমানের অতিথি সেবা নিশ্চিত করতে পরিবর্তন করা হয়েছে সুইমিং পুল ও ডাইনিং হলের স্থান। এর আগে হোটেলটির হলরুম ছিল একদিকে, উইন্টার গার্ডেন নামে সবচেয়ে বড় হলরুমের অবস্থান ছিল আরেক দিকে। এখন দুটি এক করে দেওয়া হয়েছে। হোটেলটির মূল ফটকও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভেতরের সুইমিং পুলটিও স্থানান্তর করে সাজানো হয়েছে নতুন করে। গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সংস্কার কাজে প্রায় ৬২০ কোটি টাকা ব্যয় করে বাড়ানো হয়েছে সুযোগ-সুবিধা।