সৌন্দর্যের শহর সিডনি
Tweet
ওশেনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ার অঙ্গরাজ্য আছে ছয়টি। এগুলো হচ্ছে- তাসমানিয়া, ভিক্টোরিয়া ,নিউ সাউথ ওয়েলস, কুইন্সল্যান্ড, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া এবং পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া। এরমধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানী সিডনি সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহত্তম এবং ব্যস্ত শহর। পাহাড় কেটে তৈরি এই শহরকে ঘিরে রয়েছে মনোরেল। পৃথিবীর অনন্যসুন্দর শহরগুলোর মধ্যে সিডনি অন্যতম। এই শহরটি প্রশান্ত মহাসাগরের তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠায় শহরের প্রায় সবজায়গা থেকেই সাগরের অস্তিত্ব অনুভব করা যায়। প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্যকে সাজিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসীরা যে অপূর্ব সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছে সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতেই পুরো পৃথিবীর মানুষ ছুটে আসে সিডনিতে। এখানে রয়েছে নীলজলের ঢেউ, অপেরাহাউজ, হারবারব্রিজ, সিডনি টাওয়ার ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে নানারকমের আধুনিকতার ছোঁয়া যা সহজেই পর্যটকদের আকর্ষিত করে। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অগণিত পর্যটক ছুটে আসে শহরটিকে উপভোগ করার জন্য। পাহাড়ি এলাকা হওয়ার কারনে এই শহরের পথঘাট ও অবস্থান বেশ উঁচু-নিচু। শহরে মানুষদের মধ্যে ব্যস্ততা থাকলেও তাদের রয়েছে এক অদ্ভূত শৃঙ্খলাবোধ। আরও রয়েছে মার্জিত আচরণ এবং অপরকে সহযোগিতা করার প্রবণতা।
প্রশান্ত মহাসাগর
পৃথিবীর সব থেকে গভীরতম এই মহাসাগর। এই মহাসাগরের আয়তন পৃথিবীর মোট স্থলভাগের প্রায় সমান। অর্থাৎ পুরো পৃথিবীকে নিজ গহ্বরে বিলীন করার ক্ষমতা আছে এর। সুবিশাল এই মহাসাগরের ছোটছোট ডালপালা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পুরো সিডনিজুড়ে যা আপনার ভ্রমণকে আরও মধুর করে তুলবে।
হারবার ব্রিজ
সিডনির অন্যতম আকর্ষন হচ্ছে পৃথিবী বিখ্যাত ‘সিডনি হারবারব্রিজ’। এটি একক স্প্যানবিশিষ্ট বিশ্বের সবচেয়ে প্রশস্ত সেতু। এই ব্রিজটির কাজ শুরু হয় ১৯২৩ সালের ২৮ জুলাই এবং কাজ শেষ হয় ১৯৩২ সালের ১৯ জানুয়ারিতে। স্টিলের তৈরি এই ব্রিজের আয়তন প্রায় ১ হাজার ১৪৯ মিটার। প্রতিবছর ইংরেজি বর্ষবরণের সময় এই অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হয় আতশবাজির খেলা, যা উপভোগ করতে সারাবিশ্ব থেকে অগণিত মানুষ ভিড় জমায়। এছাড়াও বিভিন্ন বিশেষ দিনগুলোতে ছোটখাটো আতশবাজির খেলা আয়োজন করা হয়। এসব আতশবাজির আলো হারবার ব্রিজের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তোলে বহুগুনে। পুরো পৃথিবীর মানুষের কাছে এই হারবারব্রিজ বিশেষ সৌন্দর্যের প্রতীক হিসাবে পরিচিত।
অপেরা হাউজ
পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর স্থান সিডনি অপেরা হাউজ। এই স্থাপনার নকশা করেছিলেন ড্যানিশ স্থপতি অ্যাডজেন। ১৯৫৯ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং শেষ হয় ১৯৭৩ সালে। আধুনিক স্থাপত্যকলার এই অপূর্ব নিদর্শন লম্বায় ১৮৩মি এবং প্রস্থে ১২০মি। এর উচ্চতা ৬৫মি, যা প্রায় ২৩ তলার সমান। অপেরা হাউজের ভিতরের অংশে রয়েছে কনসার্ট হল, ড্রামাথিয়েটার ও প্লে-হাউজ। বাইরের দিকটাও বিস্তৃত ও সৌন্দর্যে ভরপুর।
ওয়াইল্ড–লাইফ চিড়িয়াখানা
এই চিড়িয়াখানাটি পশুপাখি আর জীবজন্তুতে ভরপুর যা পর্যটকদের মন কাড়ার ক্ষমতা রাখে। ওয়াইল্ডলাইফ যেন এক অপূর্ব সৌন্দর্যের ভুবন। অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত প্রাণী ক্যাঙ্গারু থেকে শুরু করে রয়েছে গুইসাপ, গিরগিটি, মাঠময় বিচরণ করছে ইমুপাখি ইত্যাদি।
ডার্লিং হারবার
এই জায়গাটিও অনেক সুন্দর মহাসাগরের স্বচ্ছনীল জলরাশি আর তার চারপাশে রঙ-বেরঙের ছোট-বড় পাথরের পাহাড় ঘেরা অপূর্ব সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ডার্লিং হারবার। ডার্লিং হারবারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনেক রেস্তোরাঁ ও বার। সাগরের এখানে বসে খেতে পারেন অসাধারণ কিছু খাবার।