বাংলাদেশীদের জন্য লাদাখ ও সিকিম ভ্রমণ

Share on Facebook

পর্যটনের দিক থেকে ভারতকে বলা হয় থাকে হাফ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড। সেই ভারতেরই বিভিন্ন আকর্ষণীয় রাজ্যে বিদেশী পর্যটক প্রবেশের অনুমতি ছিল না। এবার বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।

লাদাখ

ভারতবর্ষের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য কাশ্মীরের লাদাখসহ সিকিম, অরুণাচল, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও মণিপুর রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দিবে ভারত। নিরাপত্তা ইস্যু সহ বিভিন্ন কারণে কাশ্মীরের লাদাখ, দার্জিলিংয়ের পাশ্ববর্তী মেঘ, পাহাড় আর বরফের রাজ্য সিকিমসহ সেভেন সিস্টার্সের কয়েকটি রাজ্যে প্রবেশে কড়াকড়ি ছিল বাংলাদেশী পর্যটকদের জন্য। এগুলোর মধ্যে সিকিম প্রায় নিষিদ্ধই ছিল। অনুমতির জন্য আবেদন করে কয়েক মাস অপেক্ষা করার পরেও অনুমতি পাওয়া যেতো না এতোদিন।

সিকিম একটা সময় ছিল ব্রিটিশদের আশ্রিত রাজ্য তারপর ভারতবর্ষ স্বাধীন ও দেশ বিভাগের পর হয়ে যায় ভারতের আশ্রিত রাজ্য। ১৯৫০ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে সিকিম ভারতের আশ্রিত রাজ্য হয়ে গেলে চীন তা মেনে নিতে পারে নাই। চীনের বক্তব্য ছিল ভারত জোর করে স্বাধীন সিকিম রাজ্যকে তাদের সাথে একীভূত করেছে। এ নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে যুদ্ধ পর্যন্ত হয়। তারপর থেকে এই দুই দেশের মধ্যে সড়ক যোগাযোগের পথ নথুলা পাস বন্ধ হয়ে যায়।

নথুলা পাস

চীন তাদের মানচিত্র দীর্ঘদিন পর্যন্ত সিকিমকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবেই দেখিয়ে আসছে। এই নিয়েই ভারতের সাথে চীনের সবসময় উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করতো। ফলত সিকিম হয়ে পড়ে ভারতীয় সেনায় পরিপূর্ণ একটা মিনি ক্যান্টমেন্ট। এসময় সব ধরণের বিদেশী নাগরিক সিকিমে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ২০০৬ সালে অবশ্য চীন সিকিমকে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে মেনে নেয় সরকারীভাবে। যদিও এখনও সিকিমে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কিছু মুসলিম প্রধান দেশ সিকিমে প্রবেশের অনুমতি পায় না বললেই চলে।

চা বাগান

তবে নতুন সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশী পর্যটক যাদের ইতোমধ্যে ভারতীয় ভিসা রয়েছে তারা চাইলে সংশ্লিষ্ট ভিসা এপ্লিকেশনের ওয়েবসাইটে ঢুকে ফরম পূরণ করে অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর যারা নতুন করে ভিসার জন্য আবেদন করবেন তারাও অনুমতির জন্য আলাদা একটা ফরম পূরণ করে ভিসা আবেদনের সাথে জমা দিতে পারবেন।

এর আগে বাংলাদেশী পর্যটকদের ভারতে ঢোকার পর এসব নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ঢোকার জন্য আবেদন করতে হতো। অনুমতিপত্র পাওয়ার পরেই কেবল এসব গন্তব্যে ঘুরে আসা যেতো। নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন বাংলাদেশ থেকেই অনুমতিপত্র নিয়ে এসব নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল ভ্রমণ করতে যাওয়া যাবে। এখানে উল্লেখ্য যে, এসব নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ভ্রমণের জন্য শুধু বিদেশী না ভারতীয় পর্যটকদেরও কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই যেতে হয়।

Leave a Reply