ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইট বিলম্ব যাত্রীরা বিপাকে ৪৮ ঘণ্টা
Tweet
গত ১ নভেম্বর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ২০৩৬ নম্বর ফ্লাইটটি যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডো থেকে রওনা দিয়ে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরে যাওয়ার কথা ছিল। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নির্ধারিত ফ্লাইটটি পরিচালনা করা সম্ভব না হওয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ফলে নারী ও শিশু সহ প্রায় ২০০ যাত্রীর অনেকেই নিরুপায় হয়ে বিমানবন্দরের মেঝেতে শুয়েবসে সময় কেটেছে ৪৮ ঘণ্টা।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে উড্ডয়ন সম্ভব নয় জেনে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ওই ফ্লাইট বিমানবন্দরেই রাখা হয়। এবং যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয় কাছের একটি হোটেলে। পরদিন তারা বিমানে উঠে আবারও বিপাকে পড়েন। কারণ ফ্লাইটটি লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের বদলে নিয়ে যাওয়া হয় নিউ ইয়র্কে জন এফ. কেনেডি বিমানবন্দরে।
এনবিসি নিউ ইয়র্ক টিভি চ্যানেলের খবর অনুযায়ী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ২০০ যাত্রীর মধ্যে কয়েকজনকে হোটেল রুমে থাকার সুবিধা দিয়েছে। এছাড়া বেশিরভাগই ঘুমিয়েছেন বিমানবন্দরের মেঝেতে।
টুইটার ব্যবহারকারী জন চ্যাপম্যান নামের একজন যাত্রী তার মেয়ের একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘সাত বছর বয়সী মেয়েটি ক্যান্সারে আক্রান্ত। জেএফকে বিমানবন্দরের টার্মিনাল সেভেনের মেঝেতে ঘুমাচ্ছে। কিছুই না করার জন্য ধন্যবাদ।’
আরেকজন যাত্রী টুইটারে লিখেছেন, ‘মানুষ মেঝেতে শুয়ে আছে। যা কিছুই হোক না, কোনও ধরনের তথ্য জানাতে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের কাউকে এখানে দেখা যাচ্ছে না।’
সব মিলিয়ে বিমান সংস্থাটির অগ্রহণযোগ্য আচরণ ও আন্তরিকতার অভাব দেখে যাত্রীরা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। অনেক ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তারা নিজেদের স্যুটকেসে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত দুই দিন পর শনিবার (৩ নভেম্বর) ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ নতুন বিমান পাঠিয়ে ২০০ যাত্রীকে আমেরিকা থেকে লন্ডনে নিয়ে যায়।
ফ্লাইট বিলম্ব হওয়ায় যুক্তরাজ্যের ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল অনলাইনের মাধ্যমে যাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, যাত্রীদের জন্য হোটেল রুম বুকিং থেকে শুরু করে ফার্স্ট ক্লাস লাউঞ্জ বরাদ্ধ রাখা ও খাবারের ব্যবস্থা ছিল। তারা বলেছেন, ‘যাত্রী ও কেবিন ক্রুদের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবার ওপরে।’
সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাসের আসনে মূত্র থাকার কারণে একজন যাত্রীর ট্রাউজার নষ্ট হয়। বিমানবালা তখন তাকে ভিন্ন আসনে বসান। আর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেয় ৪০ হাজার এয়ার মাইলস। তবুও সন্তুষ্ট হতে পারেননি ওই যাত্রী।
এছাড়া ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ বিশাল হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় তিন লাখ ৮০ হাজার যাত্রীর ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি হয়ে যায়। তাদের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ সাইবার আক্রমণের আশঙ্কা থেকে নিজেদের কার্ড বাতিল করেছেন।