ইদ্রাকপুর দুর্গ; মুন্সীগঞ্জ
Tweet
মুন্সীগঞ্জ শহরের ইদ্রাকপুরে অবস্থিত ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ইদ্রাকপুর দুর্গ। ইতিহাস থেকে জানা যায় মুঘল সুবাদার মীর জুমলা ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে পুরনো ইছামতি নদীর পশ্চিম তীরের ইদ্রাকপুরে এই দুর্গটি নির্মাণ করেন।মোগল আমলে তৈরি জল দূর্গের মধ্যে যে কয়টা টিকে আছে তার মধ্যে ইন্দ্রাকপুর কেল্লা অন্যতম। নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ ও সোনাকান্দা দুর্গের চেয়ে এটি আয়তনে কিছুটা ছোট। সে সময় মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকা রক্ষা করার জন্য নির্মিত হয়েছিল এই দুর্গটি। ইট নির্মিত চার কোনা দুর্গটি উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত এবং এর দৈর্ঘ্য ৮৬.৮৭ মিটার ও প্রস্থ ৫৯.৬০ মিটার। সুরঙ্গ পথে ঢাকার লালবাগ দুর্গের সাথে এই দুর্গের সংযোগ ছিল বলে একটি জনশ্রুতি আছে। উঁচু প্রাচীর ঘেরা এই দুর্গের চারকোণে রয়েছে একটি করে গোলাকার বেস্টনী। দুর্গের ভেতর থেকে শত্রুর প্রতি গোলা নিক্ষেপ করার জন্য চারদিকের দেয়ালের গায়ে রয়েছে অসংখ্য ছিদ্র। বাংলাদেশে মুঘল স্থাপত্যের অনন্য নির্দশন হিসেবে ইদ্রাকপুর দুর্গটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষিত হয় ১৯০৯ সালে।
এই দুর্গটির তিন কিলোমিটারের মধ্যেই ইছামতি, ধলেশ্বরী মেঘলা এবং শীতলক্ষা নদীর অবস্থান । এইসব নদীর কারনে দুর্গটি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ।
যাওয়ার উপায়
ঢাকার গুলিস্তান থেকে মুন্সিগঞ্জগামী বাসে সদরের কাচারি নামতে হবে। এখান থেকে রিক্সায় ইন্দ্রাকপুর কেল্লায় যেতে হবে। অথবা যেকোন যায়গা থেকে কমলাপুর, সেখান থেকে ট্রেনে নারায়নগঞ্জ ভাড়া ১৫ টাকা। সময় লাগবে ১ ঘন্টার মত, তারপর বন্দরে যেয়ে মুন্সিগঞ্জগামী ছোট লঞ্চ এ চড়ে মুন্সিগঞ্জ, ভাড়া ২০ টাকা। সময় ৩৫-৪০ মিনিট। ৩০ মিনিট পর পরই লঞ্চ ছাড়ে। মুন্সিগঞ্জ ঘাটে নেমে রিকশায় ২০ টাকা ইদ্রাকপুর দুর্গের সামনে।
থাকার জায়গা
ঢাকা থেকে দিনে দিনে মুন্সিগঞ্জ ভ্রমণ শেষ করে ফিরে আসা সম্ভব। তাছাড়া জেলাশহরে থাকার সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে। শহরের দু-একটি হোটেল হলো হোটেল থ্রি স্টার এবং হোটেল কমফোর্ট। এসব হোটেল ১৫০-৬০০ টাকায় থাকার ব্যবস্থা আছে। ভ্রমণে গেলে মুন্সিগঞ্জের জায়গাগুলো দেখে সবশেষে পদ্মা রিজর্টে এসে থাকলে ভালো লাগবে।