বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট এশিয়ার, এক নম্বরে জাপান
Tweet
বিদেশ ভ্রমণে ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট হিসেবে পাসপোর্ট অদ্বিতীয়। বিশ্বের যেকোনো দেশে ভ্রমণ করতে সবার আগে দরকার পাসপোর্ট। তারপর দরকার ভিসা। কোনো কোনো দেশ ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করার সুবিধা দিয়ে থাকে কোনো কোনো দেশকে। যে দেশের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই যতো বেশি দেশ ভ্রমণ করতে পারে সেই দেশের পাসপোর্টকে শক্তিশালী পাসপোর্ট হিসেবে ধরা হয়।
সারাবিশ্বের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া কয়টি দেশে যাতায়াতের সুযোগ পান তারই র্যাংকিং হলো হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স। ২০১৯ সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী পাসপোর্ট নির্বাচিত হয়েছে জাপান। এশিয়ার এই দেশের নাগরিকরা ১৯০টি রাষ্ট্রে ভিসা ছাড়াই যেতে পারেন। বিশ্বের আর কোনও দেশের পাসপোর্টধারীদের জন্য এমন সুবিধা নেই। ফলে জাপান একাই শীর্ষে আছে তালিকায়। গত বছর ১৮৯টি দেশে ভিসা ছাড়া যাতায়াতের সুবিধা থাকায় সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যৌথভাবে এক নম্বরে ছিল দেশটি। এবার মিয়ানমারের কাছ থেকে ভিসামুক্ত যাতায়াতের সুবিধা যোগ হওয়ায় সিঙ্গাপুরকে হটিয়ে সবার ওপরে উঠে গেলো জাপান।
২০১৯ সালের হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সে যৌথভাবে দুই নম্বরে রয়েছে সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া। এশিয়ার এই দুটি দেশের নাগরিকরা ১৮৯টি দেশে ভিসা ছাড়াই চলাফেরা করতে পারেন। আগেরবার ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে যৌথভাবে তিন নম্বরে ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। তবে ভারতের সঙ্গে ভিসা-অন-অ্যারাইভাল চুক্তি হওয়ায় র্যাংকিংয়ে এগিয়ে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
১৮৮টি দেশে ভিসামুক্ত ঢোকার সুবিধা থাকায় এবারও তিন নম্বরে আছে ইউরোপের ফ্রান্স আর জার্মানি। তালিকার চার নম্বরে যৌথভাবে আছে ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ইতালি ও সুইডেন। এসব দেশের পাসপোর্টধারীরা ১৮৭টি দেশে ভিসা ছাড়া যাওয়া-আসার সুবিধা পান। পাঁচ নম্বরে স্থান পাওয়া লুক্সেমবুর্গ ও স্পেনের নাগরিকরা দেশের বাইরে ১৮৬টি গন্তব্যে শুধু পাসপোর্ট নিয়েই যেতে পারেন।
র্যাংকিংয়ে ছয় নম্বরে আছে সাতটি দেশ। এর মধ্যে আছে দুই পরাশক্তি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। বাকিগুলো হলো অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ড। এসব দেশের পাসপোর্টধারীদের কাছে ১৮৫টি দেশে ভিসামুক্ত যাতায়াতের সুবিধা আছে। তবে এ বছরের ২৯ মার্চ ব্রেক্সিটের পর বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ইউরোপে বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্রিটিশদের জন্য পাসপোর্ট অনেক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন ভ্রমণ বিশেষজ্ঞ সায়মন ক্যালডার।
গতবার হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সে একলাফে ২৭ থেকে এসেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। বিদেশে ১৬৪টি জায়গায় ভিসা ছাড়া চলাফেরার সুযোগ থাকায় ২০১৯ সালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি আছে ২২ নম্বরে। গত বছর বিশ্বের আর কোনও দেশ ভিসার ক্ষেত্রে এত ছাড় পায়নি।
নতুন বছরে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল পাসপোর্ট ইরাক ও আফগানিস্তানের। এ দুটি দেশের নাগরিকরা মাত্র ৩০টি দেশে ভিসা ছাড়া যেতে পারেন। তাদের অবস্থান ১০৪ নম্বরে। কম সুযোগ-সুবিধা পাওয়া পাসপোর্টধারীদের মধ্যে সোমালিয়ার ৩২টি (১০৩তম), পাকিস্তানের ৩৩টি (১০২তম), ইয়েমেনের ৩৭টি (১০১তম), ইরিত্রিয়ার ৩৮টি (১০০তম), ফিলিস্তিন ও সুদানের ৩৯টি দেশে (৯৯তম) ভিসা ছাড়া যাতায়াতের সুযোগ আছে।
বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ৪১টি দেশে ভিসামুক্ত যাতায়াতের সুবিধা পান। ২০১৯ সালের হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সে লাল-সবুজ পতাকার অবস্থান ৯৭ নম্বরে।
ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) বিশেষ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয় হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স। বিশ্বের বৃহৎ ও সবচেয়ে সঠিক ডাটাবেস থাকে আইএটিএর কাছে।