রাজশাহীর বাঘা মসজিদ
Tweet
ঐতিহাসিক এই বাঘা মসজিদটি রাজশাহী শহর থেকে ৩৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঘা উপজেলা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। একটি উঁচু টিলার উপর টেরাকোটা অলংকরণে সমৃদ্ধ দশ গম্বুজ বিশিষ্ট অতুলনীয়। এটি বাংলাদেশের প্রাচীনতম মসজিদগুলির মধ্যে অন্যতম। বাংলার (গৌড়) সুলতান নশরত শাহের আমলে ১৫২৩ খৃষ্টাব্দে মসজিদটি নির্মান করা হয়। মসজিদসংলগ্ন একটি বিশাল দীঘি রয়েছে যেখানে শীতের অতিথি পাখীদের দৃশ্য মনোমুখগ্ধকর এবং মসজিদ চত্ত্বরের পার্শ্বেই রয়েছে একাধিক পীর আউলিয়াগনের মাজার। প্রতিদিন হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষসহ অগণিত পর্যটক মসজিদ, তৎসংলগ্ন দীঘি ও মাজার পরিদর্শন করে থাকেন। এই মসজিদটি ২৫৬ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। সমভুমি থেকে থেকে ৮-১০ ফুট উঁচু করে মসজিদের আঙিনা তৈরি করা হয়েছে। উত্তর পাশের ফটকের ওপরের স্তম্ভ ও কারুকাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। মসজিদটিতে ১০টি গম্বুজ রয়েছে। আর ভেতরে রয়েছে ৬টি স্তম্ভ। মসজিদটিতে ৪টি মেহরাব রয়েছে যা অত্যন্ত কারুকার্য খচিত। দৈর্ঘ্য ৭৫ ফুট প্রস্থ ৪২ ফুট, উচ্চতা ২৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। দেয়াল চওড়া ৮ ফুট গম্বুজের ব্যাস ৪২ ফুট, উচ্চতা ১২ ফুট। চৌচালা গম্বুজের ব্যাস ২০ ফুট উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। মাঝখানের দরজার ওপর ফার্সি ভাষায় লেখা একটি শিলালিপি রয়েছে। মসজিদটির গাঁথুনি চুন-সুরকি দিয়ে। ভেতরে এবং বাইরের দেয়ালে মেহরাব ও স্তম্ভ রয়েছে। বাঘা মসজিদের দৈর্ঘ্য ২২.৯২ মিটার, প্রস্থ ১২.১৮ মিটার এবং উচ্চতা ২৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। এর দেয়াল ২.২২ মিটার পুরু। মসজিদটিতে সর্বমোট ১০টি গম্বুজ, ৪টি মিনার (যার শীর্ষদেশ গম্বুজাকৃতির) এবং ৫টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। এই মসজিদটি চারদিক হতে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এবং প্রাচীরের দু’দিকে দু’টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। মসজিদের ভিতরে-বাইরে সবর্ত্রই টেরাকোটার নকশা বর্তমান। মসজিদের পাশে অবস্থিত বিশাল দিঘীও একটি পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় স্থান।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশপথে রাজশাহী যাওয়া যায়। ঢাকার কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে দেশ ট্রাভেলস ও গ্রিনলাইন পরিবহনের এসি বাস যায় রাজশাহী। ভাড়া ৮০০-১০০০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, বাবলু এন্টারপ্রাইজ প্রভৃতি পরিবহন প্রতিষ্ঠানের বাস যায় রাজশাহী। ভাড়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। ঢাকার কমলাপুর থেকে রোববার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যায় আন্তনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেস এবং মঙ্গলবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ১১টা ১০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তনগর ট্রেন পদ্মা এক্সপ্রেস। ভাড়া শোভন চেয়ার সাড়ে ৩০০ টাকা, স্নিগ্ধা ৬০৪ টাকা, এসি সিট ৭২৫ টাকা, এসি বার্থ এক হাজার ৮১ টাকা। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ, ইউ এস বাংলা ও নভ এয়ারের বিমান চলাচল করে রাজশাহীতে। রাজশাহী থেকে বাঘা যাওয়ার সহজ উপায় হলো বাস। রাজশাহী সদর বাস টার্মিনাল থেকে বাঘার বাস ছাড়ে। ভাড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।