বিরিশিরি কেন এবং কীভাবে যাবেন?

Share on Facebook

 

ভ্রমন পিয়াসীদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম নেত্রকোনার বিরিশিরি। ‘বালুয়া বালশিরিরি’ একটি গারো শব্দ। এই শব্দটি থেকেই বিরিশিরি নামের উৎপত্তি। তবে অনেকেই বীরের শির থেকে বিরিশিরি নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করেন। এখানে রয়েছে প্রকৃতির ঢেলে দেওয়া অপার সৌন্দর্য। অনেকে একে সাদা মাটির দেশও বলে থাকেন। নদী, পাহাড় আর সবুজে ঘেরা বিরিশিরিতে রয়েছে অনেক কিছু। ভারতের মেঘালয় রাজ্যে গারো পাহাড়ের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা জনপদ বিরিশিরি  প্রকৃতি প্রেমীদের চোখ জুড়িয়ে দেবে নিমিষেই।

Image result for বিরিশিরি

 

সোমেশ্বরী নদীকে বিরিশিরির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যমণি বলা যায়। চারপাশে পাহাড়ে ঘেরা সোমেশ্বরীর উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে পানির রংও পাল্টায়। গ্রীষ্মের মৌসুমে হেঁটে পার হওয়া গেলেও বর্ষায় থাকে কানায় কানায় পূর্ণ। এই নদী পারাপারের জন্য রয়েছে নৌকা। নদী পার হয়েই রিক্সায় যেতে হয় বিজয়পুর সাদামাটির পাহাড়ে। এখানে রয়েছে বিজয়পুর সাদামাটির অঞ্চল, রানীঘং মিশন, বিজিবি ক্যাম্প, রামকৃষ্ঞ মিশন। সাদামাটির পাহাড় থেকে মাটি নিয়েই বাংলাদেশের সিরামিক কোম্পানীগুলো চলে। পাহাড়ি রাস্তায় চোখে পড়বে আদিবাসিদের যাতায়াত। নারী আর শিশুই বেশী। পিঠে ঝুড়ি নিয়ে তারা যাচ্ছে সীমান্তের বাজারে। রানীঘং যাওয়ার পথে পড়বে রাশমনি হাজং স্মৃতিসৌধ।

Image result for বিরিশিরি চিনামাটির পাহাড়

 

বিরিশিরির মূল আকর্ষণ চিনা মাটির পাহাড়। সবুজে ঘেরা পরিবেশের সাথে পাথরের মতো শক্ত চিনা মাটি এই এলাকাটিকে একটি স্বকীয় সৌন্দর্য দান করেছে। চিনা মাটির পাহাড়ের বুক চিড়ে চলে গেছে অবাক সুন্দর নীলচে-সবুজ পানির হ্রদ। এখানে আরও রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের কালচারাল একাডেমি।

 

বিচিত্রময় সাংস্কৃতিক আবহাওয়া, কংশ-টেপা-সোমেশ্বরীর কাশবন আর দূরে আকাশে হেলান দিয়ে গম্ভীর গারো পাহাড়ের ধ্যানমগ্ন প্রতিকৃতি সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই সৌন্দর্যপিপাসুদের মন কেড়ে নেয়। বর্ষায় সোমেশ্বরীর তীরবর্তী বিরিশিরির সৌন্দর্য বেড়ে যায় অনেক গুণ। পাহাড় থেকে নেমে আসা উত্তাল ঢলের রুদ্ধরূপ বর্ষায় বিরিশিরি ঘুরতে আসা পর্যটকদের দেখায় তার বন্য সৌন্দর্য্য। বিরিশিরিতে রয়েছে পাহাড়ী কালচারাল একাডেমী। এখানকার আধিবাসীদের শতকরা ৬০ ভাগই গারো, হাজং ইত্যাদি নৃগোষ্ঠীর। এখানে আছে টুঙ্কা বিপ্লবের কয়েকটি স্মৃতিস্তম্ভ। হাজং ভাষায় তেভাগা আন্দোলনের আরেক নাম টুঙ্কা বিপ্লব। এছাড়া নীল হ্রদ, গোপালপুর পাহাড় , রাণীখং গির্জা, কমলারাণীর দীঘি, দাশা-বুশা মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির এবং লোকনাথ মন্দির, রাজা সুসংয়ের রাজমহল ইত্যাদিতে রয়েছে ঢেলে দেওয়া অপার সৌন্দর্য।

 

কীভাবে আসবেন?

– বিরিশিরি যাবার জন্য মহাখালীর টাঙ্গাইল বাস স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি বাস পাবেন। যদি বর্ষাকালে যান তাহলে রাস্তা খারাপ থাকার কারণে আপনাকে সুসং দূর্গাপুর নেমে যেতে হবে। সেখান থেকে ২-৩ মাইল পথ টেম্পোতে করে বা পায়ে হেঁটে পৌছে যাবেন বিরিশিরি।

 

কোথায় থাকবেন?

বিরিশিরিতে থাকার দুটো ব্যবস্থা রয়েছে। প্রথমত, পাহাড়ে ক্যাম্প করে তাঁবু খাটিয়ে থাকতে পারেন। দুর্গাপুরে এসি/নন এসি সব ধরনের হোটেলই রয়েছে। তবে এগুলো সস্তা নয়। সস্তায় থাকতে হলে আপনাকে কালচারাল একাডেমির গেস্ট হাউজ কিংবা ওয়াইএমসি নামক প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে হবে।

Leave a Reply