সাময়িকভাবে ফ্লাইট অপারেশন্স স্থগিত করেছে জেট এয়ারওয়েজ
Tweet
আরও ঋণ না পাওয়ার টাকার অভাবে সাময়িকভাবে সব ফ্লাইট অপারেশন্স স্থগিত করেছে জেট এয়ারওয়েজ। দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠলো না ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম এয়ার লাইন্সটি। জরুরী তহবিল গঠনে ঋণদাতাদের কাছে আরও ৪০০ কোটি রুপি চেয়েছিলো বিমান সংস্থাটি। কিন্তু ব্যাংকগুলোর কাছে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়াতে ফ্লাইট গুঁটিয়ে নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখেননি বিমান সংস্থাটির সিইও বিনয় দুবে।
এ বছরের জানুয়ারি থেকেই কর্মীদের বেতন দিতে পারছিল না জেট এয়ারওয়েজ। ওই মাস থেকে ব্যাংকের ঋণের কিস্তি বাকি হতে শুরু করে। ইতোমধ্যে নিলামের জন্য কয়েকটি বিমান সংস্থা ও বিনিয়োগকারী সংস্থাকে বেছে নিয়েছে জেট ওয়ারওয়েজের ঋণদাতা সংস্থাগুলো। আগামী ১০ মে’র মধ্যে তাদের দরপত্র জমা দিতে হবে।
ফ্লাইট বন্ধ করার বিষয়ে জেট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বিষয়ে ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন অধিদফতরের মহাসচিব ও বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করেছে তারা।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১০টা ২০ মিনিটে ভারতের অমৃতসার থেকে মুম্বাইয়ে জেট এয়ারওয়েজের শেষ ফ্লাইট (৯ডব্লিউ-২৫০২) পরিচালনা করা হয়। এদিন ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী সুরেশ প্রভু জেট এয়ারওয়েজের বিষয় পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
অন্যান্য বিমান সংস্থা যেখানে টিকিটের মূল্যবৃদ্ধি করেছে, জেট এয়ারওয়েজ তখন অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ফ্লাইট স্থগিতের মাধ্যমে নিজেদের অপারেশন্স কমিয়ে আনে। নতুনভাবে ঋণ না পেয়ে শেষমেষ বুধবার থেকে ফ্লাইট অপারেশন্স সাময়িকভাবে স্থগিত করে দিলো এই বিমান সংস্থা।
জেট এয়ারওয়েজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নরেশ গোয়েল পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন আগেই। সোমবার (১৬ এপ্রিল) কর্মীদের এক চিঠির মাধ্যমে বিমান সংস্থাটি জানায়, কোনও ঋণ না পাওয়ায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত রাখার সময় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ানো হবে। এর একদিন পরে পুরো কার্যক্রমই স্থগিত করে দেওয়া হলো।
১৯৯৩ সাল থেকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে জেট এয়ারওয়েজ। ইন্ডিগোর পর এটাই ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান সংস্থা। কিন্তু তাদের ওপর এখন ৮ হাজার কোটি রুপি ঋণের বোঝা। এ কারণে অনেকদিন ধরে সংকটে ভুগছে এই বিমান সংস্থা।
আন্তর্জাতিক রুটে যেকোনও ভারতীয় বিমান সংস্থার কার্যক্রম চালাতে ২০টি উড়োজাহাজ থাকা চাই। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে জেট এয়ারওয়েজ একের পর এক বিমানের নিবন্ধন বাতিল চেয়ে আবেদন করেছিল। এর মধ্যে আছে চারটি বোয়িং ৭৩৭ বিমান। এ কারণে তাদের বহর ছোট হয়ে আসে। তাই সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি আরও নাজুক হয়ে পড়ে।