একাকী ভ্রমণে কিছু পরামর্শ
Tweet
একাকী ভ্রমণের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। আমেরিকান দার্শনিক ও কবি হেনরি ডেভিড থোরাও বলেছিলেন, যে মানুষ একাকী যাবেন, তিনি আজই যাত্রা শুরু করতে পারেন। আর যিনি অন্য কারো সঙ্গে ভ্রমণ করেন, তাকে অপরের প্রস্তুতির অপেক্ষায় থাকতে হবে।
তাই একাকী ভ্রমণ এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি এনে দেবে। আপনি ঠিক যা করতে চাইছেন, তাই করতে পারবেন। এর চেয়ে মজার ঘোরাঘুরি আসলে আর হয় না। কোনো ধরনের বাধা আর আপনার ওপর কাজ করবে না। নিজের পছন্দমতো স্থানে, পছন্দসই উপায়ে থেকে-খেয়ে আপনি দিব্যি ভ্রমণ করে আসতে পারবেন। একাকী ভ্রমণই সবচেয় বেশি রোমাঞ্চকর, উত্তেজনাপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং। তাই একাকী ভ্রমণপিপাসুদের জন্য বিশেষ কিছু পরামর্শ দরকার। এখানে তাই তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা।
১. ঠিক করুন কোথায় যাবেন?
নিজের ভেতরটাকে শান্তিতে পূর্ণ করে তোলার প্রধান উপায় সম্ভবত একাকী ভ্রমণ। ব্যক্তিত্বের সর্বোচ্চ পর্যায় দেখার এটাই সুযোগ। নতুন স্থান আবিষ্কারের মতোই নিজেকে আবিষ্কারের সুযোগ মিলবে এখানেই। তাই এমন একটি স্থান নির্বাচন করুন যেখানে খুব কম মানুষ যায়। প্রকৃতির মাঝে নিজেকে একা করে ফেলুন। জনপ্রিয় পর্যটকপূর্ণ অঞ্চলে না যাওয়াই ভালো।
২. গাইড বুক সঙ্গে নিন
যেখানে যাচ্ছেন সেখানে আপনার কোনো সঙ্গী নেই। কাজেই সবকিছু একাই করতে হবে। ওই স্থান সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করুন। একটি মানচিত্র নিন। ইন্টারনেট ঘাঁটুন আর ওই স্থান সম্পর্কে বিভিন্ন ব্লগ পড়ুন। পরিষ্কার ধারণা নিয়ে নিন।
৩. পরিবারকে বোঝান
আমাদের অঞ্চলে একাকী ভ্রমণ খুব বেশি জনপ্রিয় নয়। সবাই পরিবার বা বন্ধুদের নিয়েই ঘুরতে যান। তাই আপনার পরিবার হয়তো একাকী যেতে দিতে চাইবে না আপনাকে। এ ক্ষেত্রে তাদের রাজি করান। গোটা পরিকল্পনা আর নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করুন তাদের কাছে। নয়তো তাদের দুশ্চিন্তা যাবে না। এ অবস্থায় আপনিও ভ্রমণ করে মজা পাবেন না।
৪. যোগাযোগ রাখুন
যেখানেই যান না কেন, পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। তাহলে তারা আপনাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকবেন না।
৫. অগ্রিম থাকার ব্যবস্থা করুন
যেখানে যাবেন সেখানে থাকার ব্যবস্থা আগে থেকেই করুন। কোন হোটেলে থাকবেন এবং কী ধরনের কক্ষে থাকবেন তার হিসাব আগে থেকেই করুন। বিভিন্ন ভ্রমণ বিষয়ক সাইটের মাধ্যমে অগ্রিম কক্ষ ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এ সেবা নিন। আগে থেকেই থাকার স্থানটা ঠিকঠাক করে ফেলুন। তাহলে আর কোনো ধরনের বিড়ম্বনায় পড়বেন না।
৬. সহনীয় ব্যাকপ্যাক
আপনি যে কয়দিনের জন্য যাচ্ছেন তার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস অবশ্যই সঙ্গে নিতে হবে। তবে তা যেন নূন্যতম ওজনদার হয়ে ওঠে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সহজে বহনযোগ্য হতে হবে আপনার ব্যাকপ্যাকটি। অপ্রয়োজনীয় জিনিসে পূর্ণ করে নেবেন না। একঘেয়ে সময় কাটানোর জন্য কোনো বই নিতে পারেন। ভ্রমণের রেকর্ড রাখার জন্য কোনো জার্নাল সঙ্গে নিন।
৭. চলাচলে গণপরিবহন
চলাফেরার জন্য ওই স্থানের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করুন। কিংবা অন্যদের সঙ্গে কোনো বাহন শেয়ার করুন। এতে যেমন নিরাপত্তা মিলবে, তেমনই কম খরচে ভ্রমণ করতে পারবেন। তা ছাড়া এই উপায়ে ভ্রমণের আলাদা অভিজ্ঞতাও লাভ হবে।
৮. নতুন মুখের সঙ্গে কথা বলুন
স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলুন। অনেক কিছু জানতে পারবেন। আপনার জ্ঞান বাড়বে। নতুন স্থান সম্পর্কেও অনেক তথ্য জানতে পারবেন। সবার সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করুন। তাদের সঙ্গে মিশে যান।
৯. সকাল সকাল শুরু করুন
সেখানে যাওয়ার পর বিশ্রাম নিন। পরদিন সকাল সকাল আপনার অভিযান শুরু করুন। এতে করে গোটা দিন পাবেন ভ্রমণের জন্য। সকাল নাস্তার পেছনে অলস সময় দিন। সকাল সকাল শুরু করলে সব কাজই আরাম-আয়েশের সঙ্গে সারতে পারবেন।
১০. সবার আগে নিরাপত্তা
কী ধরনের বিপদ আসতে পারে তা বুঝতে মনের অনুভূতির ওপর বিশ্বাস রাখুন। আবহাওয়া বা অন্যান্য বিপদ সম্পর্কে এমনিতেই তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। সবার আগে ভ্রমণে নিজের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। দুঃখ প্রকাশ করার আগে তাই সাবধান হওয়া উত্তম।