ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলে
Tweet
পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক স্থান আহসান মঞ্জিল। প্রতিদিনই এখানে রয়েছে ভ্রমণপিয়াসীদের আনাগোনা। এ ছাড়া ছুটির দিনে হাজারো মানুষের ঢল নামে নবাব আমলের এই স্থাপত্য দেখতে।
ঢাকা শহরের মতো ব্যস্ত শহরে নিশ্বাস ফেলার জায়গার অভাব। কিন্তু আপনি চাইলেই আহসান মঞ্জিলের মতো একটি ঐতিহাসিক স্থানে ঘুরে আসতে পারেন।
পরিচিতি
১৮৭২ সালে নবাব আবদুল গনি তাঁর ছেলে খাজা আহসানউল্লাহর নামে ভবনের নামকরণ করেন আহসান মঞ্জিল।
এটি একটি দোতলা ভবন। বারান্দা ও মেঝে মার্বেল পাথরে তৈরি। প্রতিটি কক্ষের আকৃতি অষ্টকোণ। প্রাসাদের ভেতরটা দুই ভাগে বিভক্ত। আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে সংগৃহীত নিদর্শন সংখ্যা চার হাজার সাতটি।
জাদুঘরে যা দেখবেন
গ্যালারি ১ : এখানে আহসান মঞ্জিলের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি আলোকচিত্র ও চিত্রকর্মের সাহায্যে তুলে ধরা হয়েছে।
গ্যালারি ২ : বিভিন্ন সময়ে ভবনের যে বিবর্তন হয়েছে তা আলোকচিত্রের সাহায্যে প্রদর্শন করা হয়েছে এখানে।
গ্যালারি ৩ : নবাবদের আনুষ্ঠানিক ভোজন কক্ষ।
গ্যালারি ৪ : বড় কাঠের সিঁড়ি। হাতির মাথার কঙ্কাল, ঢাল-তলোয়ার। কাঠের বেড়ার মূল নিদর্শন।
গ্যালারি ৫ : আসল ঢাল-তলোয়ারের অনুরূপে সাজানো।
গ্যালারি ৬ : আহসানউল্লাহ মেমোরিয়াল হাসপাতালের বেশকিছু ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি ও খাতাপত্র এই কক্ষে প্রদর্শিত হয়েছে।
গ্যালারি ৭ : এই বড় কক্ষটি নবাবদের দরবার হল হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
গ্যালারি ৮ : এডওয়ার্ড হাউস থেকে সংগৃহীত জীবজন্তুর শিং।
গ্যালারি ৯ : বড় লোহার সিন্দুকসহ অন্যান্য সিন্দুক ও কাঠের আলমারিগুলো নবাবদের আমলের নিদর্শন।
গ্যালারি ১০ : এখানে আছে বড় বড় আলমারি, তৈজসপত্র যা নবাবের আমলের নিদর্শন।
গ্যালারি ১১, ১২ ও ১৩ : এই গ্যালারিগুলোতে যথাক্রমে বরেণ্য ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি, স্যার সলিমুল্লাহ স্মরণে এবং নবাবদের সমসাময়িক মনীষীদের প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো হয়েছে।
গ্যালারি ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ : যথাক্রমে হিন্দুস্তানি কক্ষ, প্রধান সিঁড়িঘর, লাইব্রেরি কক্ষ ও তাসখেলার ঘর।
গ্যালারি ১৮ ও ১৯ : ঢাকায় পানীয় জল সরবরাহবিষয়ক নিদর্শন যেসব আহসান মঞ্জিল ও এডওয়ার্ডস হাউসে পাওয়া গেছে। ঢাকা ওয়াটার ওয়ার্কের কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য ছবি এখানে আছে।
গ্যালারি ২০ ও ২১ : ১৯০১ সালের আগে ঢাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ছিল না। নবাবের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা করার তথ্য, তৈজসপত্র ও ফুলদানি সবই নবাবের আমলের।
গ্যালারি ২২ : দোতলায় অবস্থিত এই গ্যালারিতে আহসান মঞ্জিলে থেকে পাওয়া অস্ত্র প্রদর্শিত হয়েছে। উঁচু গম্বুজটি এই ঘরের ওপরেই অবস্থিত।
গ্যালারি ২৩ : এটি ছিল নাচঘর। ১৯০৪ সালে তোলা ছবি অনুযায়ী এটি সাজানো হয়েছে।
সব কটি গ্যালারি ঘুরে পাশেই নবাববাড়ির পুকুর দেখে আসা যাবে।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে গুলিস্তান এসে নর্থ সাউথ রোড ধরে কিছুদূর গেলেই পড়বে নয়াবাজার মোড়। এখান থেকে বাবুবাজারের দিকে যেতে থাকবেন। বাবুবাজার ব্রিজের বামপাশে নিচ দিয়ে গেলে পড়বে আরেকটি মোড়। এর বামপাশে গেলেই ইসলামপুর। এখানে এসে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই বাতলে দেবে আহসান মঞ্জিল যাওয়ার রাস্তা।
দর্শনার্থীদের প্রবেশের সময়সূচি
সাপ্তাহিক ছুটি বৃহস্পতিবার। এ ছাড়া অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনেও বন্ধ থাকে।
গ্রীষ্মকালীন সময়সূচি
(শনিবার-বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা।
শীতকালীন সময়সূচি
(শনিবার-বুধবার) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা। শুক্রবার – দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা।
টিকেটের মূল্য তালিকা
প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশি দর্শক = ৫ টাকা জনপ্রতি, অপ্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশি শিশু দর্শক (১২ বছরের নিচে)= ২ টাকা জনপ্রতি, সার্কভুক্ত দেশীয় দর্শক = ৫ টাকা জনপ্রতি, অন্যান্য বিদেশি দর্শক = ৭৫ টাকা জনপ্রতি।