ঘুরে আসুন ভূটান থেকে
Tweet
হিমালয়ের কোলে ছোট্ট একটা দেশ, জনসংখ্যা সাকুল্যে সাত লক্ষ! রূপকথার ছবির মতোই ঝকঝকে সে দেশে রাজার শাসন চলে আজও। তিরতিরে নদীর ধারে রাজপ্রাসাদ, তারই পাশে হাইকোর্ট-পার্লামেন্ট। জংলি ফুলের মতো রাস্তার ধারে ধারে ফুটে থাকে সূর্যমুখীর দল, ছড়িয়ে ছিটিয়ে আপেল-পিচ-কমলালেবু গাছের সারি। প্রকৃতি যেন তার সবটা দিয়ে ঢেলে সাজিয়েছে সেই রাজত্বকে। সাধ্যের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণের সাধ থাকলে ভুটানই আপনার জন্য সেরা গন্তব্য। মূলত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বর অবধি ভুটানের পর্যটন মরসুম। বিমান, রেল কিংবা সড়কপথে পৌঁছে যেতে পারেন পড়শি এই দেশে। পাসপোর্ট লাগবে না, সচিত্র পরিচয়পত্রই যথেষ্ট।
কীভাবে যাবেন
ভূটান যাওয়ার জন্য ভিসার প্রয়োজন নেই। ভারত-ভূটানের বর্ডার ওপেন, সেজন্য ভিসা না লাগলেও এন্ট্রি পারমিট নিতে হয়। যা ভিসার কাজ করে। এখানে একটি কথা জেনে রাখা ভালো তা হল এয়ারপোর্টে অন এরাইভাল যে ভিসা দেয় তা শুধু ভুটানের তিনটি শহর ফুয়েন্টশোলিং, থিম্পু আর পারোর জন্য। অন্য জায়গাগুলোতে যাওয়ার জন্য আলাদা ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে ভিসা নিতে হয়।
ভুটানে ঢোকা তেমন কোন কঠিন ব্যাপার না। ভারতের নাগরিক এবং বাংলাদেশীদের জন্য ভূটানে ঢুকতে কোন টাকা লাগেনা। পশ্চিমা দেশগুলোর নাগরিকদেরকে প্রতিদিনের জন্য ২০০ ডলার করে ফী দিতে হয় ভূটান সরকারকে।
ভূটানে আকাশপথ ও সড়ক পথ দুইভাবে যাওয়া যায়। আকাশ পথে যেতে একটু বেশি খরচ পড়বে। আনুমানিক ২০০০০ থেকে ২৫০০০ টাকা বাই এয়ারে লাগবে। ভুটানে শুধুমাত্র একটি এয়ারলাইনের প্লেনেই যাওয়া যায়। এছাড়া বাই রোডে ভূটানে যাওয়া যায়। ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে, ভূটানের ফুটসলিং হয়ে থিম্পু।
কমলাপুর থেকে সরাসরি শিলিগুড়ির বাস ধরতে পারেন। ভাড়া নেবে ১৩০০ টাকার মত। রাতে রওনা হয়ে শিলিগুড়ি পৌছাবেন পরদিন দুপুর ১২ টার দিকে। বাসে যাওয়া অনেক বেশি সাশ্রয়ী।
কোথায় থাকবেন
ফুয়েনশলিং-এ ফাইভ স্টারের সাথে সাথে থ্রি-স্টার মানেরও কিছু হোটেল পাবেন। হোটেল ডেসটিনি, এমবিয়েন্ট ক্যাফে, নরজিন লাম ভূটানের কিছু হোটেলের নাম। চাইলে আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখতে পারেন। ভাড়া ৮০০/- রুপির মত পড়তে পারে। রাতটা ওখানে থেকে সকালে বাসে থিম্পুর উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। ভূটানে দ্রব্যমূল্য বেশি, তাই এখানে একটু বুঝে শুনে খরচ করতে হবে।
কোথায় ঘুরবেন
ভারত-ভুটান সীমান্ত শহর ফুয়েনশলিং, রাজধানী থিম্পু, সাবেক রাজধানী পুনাখা, এয়ারপোর্টের শহর পারো এগুলো হল ভূটানের প্রধান আকর্ষণীয় স্থান। এগুলোতে অব্যশই ঘুরবেন। বিশেষ করে পারো, এবং এর পাহাড়ী সৌন্দর্য্য অতি মনোমুগ্ধকর। ভূটানের কেনাকেটা করার সম্পর্কে গৃহিণী রোকসানা লিনা বলেন, ভূটান অনেক এক্সপেন্সিভ জায়গা। এখানে কেনাকাটা না করাই ভাল। ওদের নিজেদের প্রডাক্ট নেই বললেই চলে। প্রায় সবই ইন্ডিয়ান, বাংলাদেশি প্রডাক্টও প্রচুর। আর আছে চাইনিজ আর থাইল্যান্ডের পন্য। তাই কেনাকেটার ইচ্ছা বাদ দিয়ে শুধু ঘুরতে যাওয়ার জন্য ভূটান অতুলনীয়।
টিপস
*ভূটান যাওয়ার সময় ইমিগ্রেসনে পাসপোর্ট সাইজ ছবি আর পাসপোর্টের ফটোকপি লাগে। তাই মনে করে ছবি আর পাসপোর্ট নেবেন সাথে।
*ভূটান সফরের জন্য গ্রুপ করা খুবই ভাল। সর্বোচ্চ ৮ জনের গ্রুপ হলে ভাল হয়। এতে ট্রান্সপোর্ট ও হোটেল পাওয়া সহজ হয়। আর খরচও অনেকটা কমে যায়। প্রতি কাপলের যাওয়া-আসা মিলিয়ে ৪ রাতের ট্যুরে প্রায় ২৫,০০০/- টাকার মত খরচ হয়।
*ভূটান ঘুরতে ৩ দিনই যথেষ্ট। ৩ দিনে মোটামুটি সব ঘোরা হয়ে যায়।
*ভারতের ট্রানজিট ভিসার জন্য আগেই টোকেন নিতে হবে।