আজ থেকে উঠে যাচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
Tweet
আজ থেকে উঠে গেল কাশ্মীর ভ্রমণে (জম্মু ও কাশ্মীর) পর্যটকদের উপর আরোপিত বিধিনিষেধ। জম্মু ও কাশ্মীরের গভর্নর সত্যপাল মালিক জানিয়েছেন, এই উপত্যকায় ভ্রমণপ্রেমীদেরকে আবারও স্বাগত জানানো হচ্ছে।
জম্মু ও
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবলুপ্তির ঘোষণা করার আগে সরকার পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদেরকে
এই রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। পর্যটন দফতরের কর্মকর্তাদের মতে, পর্যটন মরশুমের সেরা সময়
হওয়ায় উপত্যকায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার পর্যটক উপস্থিত ছিলেন সেসময়ে। এই ঘটনার
দুইমাসেরও বেশি সময় পরে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটকদের
কাছে আবারও খুলে গেল ভূস্বর্গের দরজা। গত মঙ্গলবার, জম্মু ও
কাশ্মীর ভ্রমণের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার।
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্য সচিব আর উপদেষ্টাদের সঙ্গে চলমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠকের পর ভ্রমণে বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন গভর্নর। গত ছয় সপ্তাহে অঞ্চলটির বিভিন্ন অংশ থেকে নিরাপত্তাজনিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনার দিকেই মনোযোগী এখন স্থানীয় গভর্নর। তাই নিরাপত্তা পর্যালোচনায় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্যান্য সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও গণপরিবহন পুনরায় চালু, পর্যটন অভ্যর্থনা কেন্দ্রে আরও কাউন্টার যুক্ত করা, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রতিটি জেলায় ২৫টি ইন্টারনেট কিয়স্ক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত ২ আগস্ট নিরাপত্তাজনিত কারণে ‘অমরনাথ’ যাত্রার তীর্থযাত্রী ও অন্যান্য পর্যটকদের অনতিবিলম্বে কাশ্মীর ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন। এর তিন দিন পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার সংসদের উভয় কক্ষে ব্যাপক সমর্থন নিয়ে ভারতীয় সংবিধানের জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ধারা ৩৭০ ও ধারা ৩৫ক বাতিল করে অঞ্চল দুটিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বানান। এগুলো হলো জম্মু ও কাশ্মীর আর লাদাখ। এতদিন এটিও ছিল স্বতন্ত্র একটি রাজ্য।
জম্মু ও কাশ্মীর উপত্যকার গ্রীষ্মকালীন
রাজধানী শ্রীনগর এবং শীতকালীন রাজধানী জম্মু। কাশ্মীর
উপত্যকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য
জগৎখ্যাত। এছাড়াও জম্মু অঞ্চলে অনেক মন্দির থাকায় এটি
হিন্দুদের কাছে একটি পবিত্র তীর্থক্ষেত্র হিসেবেও জনপ্রিয়।
জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন যে, পর্যটকদের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার কারণে তাঁদের ব্যবসা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং তাঁদের আরও আশঙ্কা ছিল যে, কাশ্মীরের অস্থিরতার কারণে দীর্ঘকাল পর্যটকরা দূরে থাকবেন ভূস্বর্গ থেকে।
ভারত সরকারের তথ্য
অনুযায়ী, ২০১৯
সালের প্রথম সাত মাসে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ কাশ্মীর উপত্যকা ভ্রমণে আসেন। এছাড়াও,
সন্ত্রাসের সতর্কতার কারণে ‘অমরনাথ’ যাত্রা বাতিল করার আগে জুলাই
মাসে প্রায় ৩.৪ লক্ষ তীর্থযাত্রী উপত্যকায় গিয়েছিলেন। আর ৫ অগাস্টের পরে
কাশ্মীর সফরে আসেন মাত্র ১৫০ জন বিদেশি পর্যটক।