ঘুরে আসুন ‘স্বর্গের সিঁড়ি’ থেকে
Tweet
চাকমা ভাষায় সিঁড়িটির নাম ‘এদো সিরে মোন’। বনের মাঝে এঁকে বেঁকে
উঠে যাওয়া সিঁড়িটি দেখতে ভয়ংকর লাগলেও আসলে তেমন নয়। একটু সাবধানে উঠলেই হবে। সিঁড়িটির
স্থানীয় নাম মায়ুং কপাল বা হাতিমাথা পাহাড়ের সিঁড়ি। স্বর্গে যাওয়া না হলেও এই সিঁড়ি
আপনাকে নিয়ে যাবে পাহাড়ের চূড়ায় থাকা অসম্ভব সুন্দর গ্রামে। পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে পাখির চোখে
দেখা যায় খাগড়াছড়ি শহর। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজের
নৈসর্গিক
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ধাঁধিয়ে যায় চোখ। এখানে
শীতল হাওয়া ও পাখির কলতান উপভোগ করেন পর্যটকরা।
খাড়া উঁচু পাহাড়টি দেখতে ঠিক হাতির মাথার মতো। তাই শত শত বছর ধরে স্থানীয় উপজাতিরা পাহাড়ি উঁচু পথকে ‘হাতিমাথা’ বা ‘হাতিমুড়া’ নামে ডাকে। খাড়া পাহাড় ডিঙিয়ে যাওয়া দুর্গম এই পথটি মূলত ১৫টি গ্রামের যাতায়াত পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত এসব এলাকার বাসিন্দারা বাঁশ অথবা গাছের তৈরি খাড়া সিঁড়ি দিয়ে বিপজ্জনক পাহাড়টি পাড়ি দিতো। তাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করার জন্য সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ৩০৮ ফুট লম্বা লোহার তৈরি সিঁড়ি। আনুমানিক ১২০-১১০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল এটি।
খাগড়াছড়ি জেলার উপজেলা সদরের পেরাছরা ইউনিয়নে অবস্থিত হাতিমাথা। এই এলাকায় ঘুরতে এসে উপভোগ করা যায় নদী, পাহাড়ি পথে সবুজের সমারোহ, বিভিন্ন বন্যফুল, আকাশ ও মেঘ আর ত্রিপুরা উপজাতিদের জীবন ও সংস্কৃতি। একটু ভিন্ন আমেজের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা পেতে চাইলে ঘুরে আসুন এই স্বর্গের সিঁড়ি।
কিভাবে যাবেন-
মায়ুং কপাল কিংবা স্বর্গের সিঁড়িতে বেড়াতে যেতে চাইলে প্রথমেই যেতে হবে খাগড়াছড়িতে।
ঢাকার যেকোনো বাস কাউন্টার (সায়দাবাদ, জনসন রোড, কমলাপুর, আরামবাগ, মতিঝিল, পান্থপথ ইত্যাদি) স্থান থেকে খাগড়াছড়িগামী বাস রয়েছে। এসি বাসের ভাড়া জনপ্রতি ৮৫০-১২০০ টাকা। নন এসি বাসের ভাড়া জনপ্রতি ৫২০ টাকা। খাগড়াছড়ি পৌঁছে গাড়ি নিয়ে চলে যাবেন হাতিমুড়া, সেখান থেকে পানছড়ি যাওযার পথে জামতলীস্থ যাত্রী ছাউনির সামনে নামতে হবে। খাগড়াছড়ি সদর থেকে জামতলী পর্যন্ত গাড়ী ভাড়া জন প্রতি ১৫ টাকা। বাঁ-দিকের রাস্তা ধরে সোজা গিয়ে চেঙ্গী নদী পেরোলে ডান দিকে স্কুল। সেখান থেকে একঘণ্টার হাঁটাহাঁটির পরই চলে আসবে স্বর্গের সিঁড়ি।
কোথায় থাকবেন ও খাবেন-
খাগড়াছড়ি শহরে বেশ কিছু মোটামুটি ভালমানের আবাসিক হোটেল ও খাওয়ার হোটেল রয়েছে। এছাড়াও যদি আপনি সাজেকের প্লান করেন তাহলে সাজেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে ২টি খুবই ভালমানের আবাসিক হোটেল রয়েছে তবে একটু ব্যয় সাপেক্ষ ও অন্যান্য মালিকানা মোটামুটি ভালমানের কটেজ রয়েছে। আর খাবারের ও ব্যবস্থা রয়েছে সাজেকে।