ঢাকার অদূরেই ঘুরে আসুন কাশবন থেকে-
Tweet
“অপলক আমি চেয়ে রই
ভুবনো পানে,
জানি না কোন সুর
বারংবার কাছে টানে।”
চোখজুড়ানো ধবধবে সাদা কাশফুল
এমনিতেই টানে সবাইকে। আর
যদি সে শুভ্রতা ছড়িয়ে
থাকে চারদিকে যতদূর চোখ যায়,
এরকম নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সময় এখন শরৎকাল।
ব্যস্ত ও যান্ত্রিক শহর
ঢাকার ভীড় ও জ্যাম
থেকে অদূরেই রয়েছে কাশফুলে
ছাওয়া মনমুগ্ধকর সব জায়গা। তেমনই
১৫টি জায়গা সম্পর্কে আজকের
লেখা।
আফতাব নগর: রাজধানীর আফতাব নগরের ফাঁকা
জমিতে শরতের সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে বসে আছে
কাশফুল। তাই পরিবার নিয়ে
যেকোন সময় ঘুরে আসতে
পারেন। তবে বিকেলে যাওয়াই
ভালো। ঢাকার যে কোন
এলাকা থেকে প্রথমে রামপুরা
ব্রিজে আসতে হবে। ব্রিজের
পাশে আফতাব নগরের গেট।
গেটের কাছে রিকশা পাবেন।
রিকশায় ওঠার আগে ভাড়া
ঠিক করে নেওয়া ভালো।
দিয়াবাড়ি: উত্তরার দিয়াবাড়ি কাশবনের বাস হিসেবে সবার
চেনা। কাছাকাছি হওয়ায় মানুষ সেখানে
ভীড় জমায়। কাশফুলের মাঝে
ছবি তোলার হিড়িক পড়ে।
দূরে কোথাও যাওয়ার চেয়ে দিয়াবাড়ি যেতে পারেন কাশবন
দেখতে। দেখার জায়গা হিসেবে
দিয়াবাড়ি খারাপ নয়। তবে
ফিরতে হবে সন্ধ্যা নামার
আগে।
৩০০ ফিট: রাজধানীর বসুন্ধরার ৩০০ ফিট রাস্তার
চারপাশে রয়েছে কাশফুল। ৩০০
ফিটে যেতে চাইলে কুড়িল
বিশ্বরোড থেকে সিএনজি নিতে
হবে।
মধু সিটি: ঢাকার খুব কাছে
কেরাণীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদীর ধারে মধু
সিটি এলাকায় ছড়িয়ে আছে
শরতের শুভ্র কাশফুল। বালু
মাটি ফেলে রাখা বিশাল
মাঠের মতো খোলা জায়গা
এখন ঢাকার ভ্রমণপিপাসুদের কাছে
বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কাশফুলের
পাশাপাশি এখানে নদীতে রয়েছে
নৌকা। যে কেউ মন
চাইলে কম খরচে নৌকায়
চড়ে ঘুরতে পারেন। অনেকেই
আবার নদীতে নেমে জলকেলিতে
মেতে ওঠেন। তবে শুক্র
ও শনিবার ভীড় থাকে
সবচেয়ে বেশি। রাজধানীর মোহাম্মদপুর
বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি সিএনজি
রিজার্ভ করে যাওয়া যেতে
পারে। এছাড়া মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ
চার রাস্তার মোড় থেকে আটিবাজারগামী
সিএনজি, লেগুনা কিংবা পরিস্থান
নামক বাসেও যাওয়া যায়।
দক্ষিণখান: বড় পরিসরে কাশবন
দেখতে চাইলে খিলক্ষেত বাজার
হয়ে উত্তরমুখী রাস্তায় যেতে পারেন। রাস্তার
দুপাশ জুড়েই কাশের রাজ্য।
এতে আপনার চোখ ও
মন জুড়াবেই।
আশুলিয়া: মিরপুর বেড়িবাঁধ হয়ে
আশুলিয়ার দিকে কাশবনের দেখা
পাবেন। সড়কপথে ভ্রমণও মন্দ
লাগবে না। এলোমেলো বাতাসে
হেঁটে বেড়াতে পারবেন।
কেরাণীগঞ্জ: ঢাকার কাছে বলেই
সময় করে ঘুরে আসতে
পারেন। কাশবনের মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর
স্বাদ পেয়ে যাবেন। একদিনের
জন্য পিকনিক হয়ে যাবে।
হযরতপুর: কেরাণীগঞ্জের হযরতপুর। এখানে কালিগঙ্গা নদীর
বাঁকে বাঁকে কাশবন। বছিলা
সেতু পার হয়ে আটিবাজার
ছেড়ে কিছু দূর গেলে
হযরতপুর। সেখান থেকে খেয়া
নৌকা পার হলে কাশবন।
ঢাকা উদ্যান: মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ লাগোয়া পশ্চিম পাশে
ঢাকা উদ্যান হাউজিংয়ের বিভিন্ন
প্লটে দেখতে পাবেন কাশফুল।
তবে যেতে হবে একটু
ভেতরে বুড়িগঙ্গার তীরে।
ওয়াশপুর: মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ থেকে বছিলা সড়ক
ধরে ওয়াশপুর। সেখানে বছিলা সেতুর
পাশ দিয়ে হাতের বাঁয়ে
চলে যাওয়া সড়কে গেলে
দেখবেন কাশফুলের রাজ্য।
মায়ার দ্বীপ: মেঘনার বুকে জেগে
ওঠা মায়ার দ্বীপ। এ
দ্বীপে দেখতে পাবেন কাশফুল।
ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে বৌদ্দের
বাজার। সেখান থেকে মেঘনার
ঘাট থেকে ইঞ্জিন নৌকায়
যেতে হবে মায়ার দ্বীপ।
যমুনার চর: মানিকগঞ্জের আরিচার যমুনার বুকে
জেগে ওঠা চরগুলো কাশফুলে
ভরপুর। গাবতলী থেকে পরিবহনে
যাওয়া যায় আরিচা। পদ্মা
কিংবা যমুনার চরে ভ্রমণের
জন্য ইঞ্জিন নৌকা পাবেন
সারাদিনের জন্য। ভাড়ার ব্যাপারে
আগেই কথা বলে নেবেন।
ঝিলমিল: বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু পেড়িয়ে মাওয়া
সড়কে যাওয়ার পথে দুই
পাশে পড়বে কাশবন। এটি
রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক এলাকা।
এখানকার বালু ভরাট করা
খালি প্লটগুলো ছেয়ে আছে কাশফুলে।
শরতের সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে পারবেন এখানে।
পদ্মার চর: মাওয়ার শিমুলিয়া ঘাট
থেকে যেতে পারেন কোন
এক চরে। চরে গিয়ে
কাশফুলের দেখা পাবেন।
তবে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখবেন।
ধলেশ্বরীর তীরে: ঢাকা থেকে মাওয়া সড়কে যেতে কুচিয়ামোরা এলাকায় ধলেশ্বরী নদী। সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে যেতে হবে একটু ভেতরে। সেখানে নদীর দুই পাশে পাবেন কাশবন।
ষড়ঋতুর মেলায় শরৎকালের পরিব্যাপ্তি ২মাসের জন্য হলেও শরতের সৌন্দর্য কাশফুল দেখা যায় খুবই কম সময়ের জন্য। প্রকৃতিতে শুভ্রতা আর মুগ্ধতায় ভরে দিতে আসে সে স্বল্প সময়ের জন্য। ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকা প্রাকৃতিক দূষণের ফলে প্রকৃতির ছোঁয়া হারাচ্ছি আমরা প্রতিনিয়ত। সামান্য কাশবনের মাধ্যমে হয়েও প্রকৃতির ছোঁয়া থাকুক সবার কাছে।