মেক্সিকোর বাইরেও জনপ্রিয় হচ্ছে ‘ডে অব দ্য ডেড’ উত্সব
Tweet
ডে অব দ্য ডেড কিংবা মৃতের দিন কিংবা স্প্যানিশে ‘ডিয়া ডেলোস মুয়্যার্তোস’ (Día de los Muertos) যাই বলে ডাকা হোক না কেন মেক্সিকান এই উত্সবটিকে, দিন দিন বাড়ছে এর ব্যাপ্তি ও জাঁকজমক। প্রতিবছর নভেম্বর মাসের ১ ও ২ তারিখে মেক্সিকোতে উদ্যাপন করা হয় এই উৎসব। মূলত ৩১ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে শুরু হয় উৎসবটি। এই দু’দিন দেশটিতে থাকে সরকারি ছুটি। বর্তমানে মেক্সিকো ছাড়াও উত্তর ও দক্ষিণ উভয় আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পালন করা হয় ডে অব দ্য ডেড।
কয়েক বছর আগেও ‘হ্যালোউইন’ উৎসব বিশ্বব্যাপি সর্বাধিক পরিচিতি ছিলো। কিন্তু গতবছরের একটি জরিপে উঠে এসেছে হ্যালোউইনের তুলনায় মেক্সিকান উত্সব ডে অব দ্য ডেডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ৯.৫ শতাংশ। এখন বিশ্বের অনেক জায়গায় হ্যালোউইনের আদলেই পালিত হচ্ছে ডে অব দ্য ডেড। আধুনিক পপ কালচারের অংশ হয়ে উঠেছে এই উত্সবটি। মৃতের দিন উপলক্ষ্যে কঙ্কাল সদৃশ সাজ-পোশাক পড়ে এখন বিভিন্ন দেশের মানুষ পালন করছেন এই উত্সবকে।
মেক্সিকানদের ডিয়া ডেলোস মুয়্যার্তোস উৎসবটির জনপ্রিয়তা হয়তো ইদানিং বাড়ছে কিন্তু এর ইতিহাস অনেক পুরনো। প্রায় তিন হাজার বছর ধরে মৃতদের সম্মানার্থে চলে আসছে তাদের এই প্রথা। মেক্সিকোর একটি গোত্র অ্যাজটেকদের সময়ে মাসব্যাপী এ উৎসব চলত। অ্যাজটেকরা তাঁদের দেবীকে উৎসর্গ করতে উৎসবটি পালন করতেন।
মেক্সিকান ঐতিহ্যে মনে করা হয় যে, মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই বরং মৃত ব্যক্তির স্মৃতিকে হাসি-আনন্দের মধ্য দিয়ে উপভোগ করতে হবে। তাই ‘ডিয়া ডেলোস মুয়্যার্তোস’ উৎসবে তারা পরিবার-পরিজন ও বন্ধুরা সবাই একত্রিত হয়ে প্রার্থনা করেন তাদের মৃত প্রিয়জনের জন্য। পাশাপাশি মৃতদের কবরে বিভিন্ন ধরনের খাবার ও পানীয় রেখে আসেন উপহারস্বরূপ। শিশুদের কবরের পাশে রাখেন খেলনা। মৃতদের সম্মান দেখানোর জন্য তারা বেদি তৈরি করেন, যেখানে থাকে চিনি দিয়ে তৈরি করা কঙ্কাল ও ম্যারিগোল্ড ফুল।
দু’দিনের এই উৎসবের প্রথম দিন সম্মান দেখানো হয় মৃত শিশুদের এবং দ্বিতীয় দিন প্রাপ্তবয়স্কদের। প্রথম দিনটি তাই নিষ্পাপদের দিন নামেও পরিচিত। এই উৎসবটি যারা পালন করেন তাদের বিশ্বাস, এভাবে করে তারা যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে পারে তাদের মৃত প্রিয়জনদের আত্মার সাথে। মৃতদেরকে স্মরণ করবার এই ঐতিহ্যকে মহিমান্বিত করেন তারা ভালোবাসার সাথে, ‘মৃতরা কভু হারায় না যদি আমরা তাদের না ভুলি’ বলে।