আরব আমিরাতের কিছু তথ্য
Tweet
১.
সোনার ভেন্ডিং মেশিন-
পৃথিবীতে
নানা সময়ে বহু অদ্ভুত আবিষ্কার হয়েছে। কিন্তু সবাইকে পেছনে ফেলে বিশ্বকে তাক
লাগিয়ে দিয়েছে দুবাই। অন্য শহরে টাকা তোলার বুথ থাকলেও দুবাইয়ে আছে সোনা তোলার
বুথ। আর এটিকে তারা নাম দিয়েছে গোল্ড ভেন্ডিং মেশিন। নগদ টাকার বিনিময়ে আপনি ওই
মেশিন থেকে ২৪ ক্যারেট খাঁটি সোনা সহজেই কিনে নিতে পারবেন। বিশ্ব বাজারে সোনার দাম
উঠানামার কারনে সোনার মূল্য প্রতি ১০ মিনিট পর পর পরিবর্তন করবার সফটওয়্যার বসানো
থাকে এখানে।
২.
ফ্যাশনের কেন্দ্রবিন্দু-
দুবাই শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় দিক এখানকার মানুষের ফ্যাশন বৈচিত্র্য। দুবাইয়ে ভিন্ন
ভিন্ন দেশ থেকে আসা নাগরিকদের বৈচিত্র্যময় ফ্যাশন শহরটিকে অন্যসব শহর থেকে আলাদা
করেছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ধীরে ধীরে দুবাই বিশ্বের ফ্যাশন
রাজধানীতে পরিণত হচ্ছে।
৩.
রোবট নিয়ন্ত্রিত উটের দৌড়-
উটের দৌড় প্রতিযোগিতা আরব বিশ্বের একটি প্রাচীন খেলা। তবে ২০০৪ সাল থেকে খেলাটিকে
আধুনিক রূপ দিয়েছে দুবাই। মানুষের পরিবর্তে উটের পিঠে রিমোট নিয়ন্ত্রিত রোবট দিয়ে
দৌড়ানো হয়।
৪. ৮৩
শতাংশ বাসিন্দাই বিদেশী-
দেশি দুবাই শহরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে
আসা মানুষ সংখ্যা এতটাই বেশি যে, তা শতকরা ৮৩ শতাংশ। আর অবাক হলেও
সত্য দুবাইয়ে মাত্র ১৭ ভাগ আমিরাতি নাগরিক বাস করে। ৮৩ ভাগ বিদেশি নাগরিকের বেশির
ভাগ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের।
৫.
তাপমাত্রা প্রায় ১২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট
দুবাই মরুভূমির শহর। এখানে মাঝেমধ্যে তাপমাত্রা ১২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠে
যায়। তার সঙ্গে বালুর ঝড় দুবাইয়ের একটা স্বাভাবিক ঘটনা।
৬. ঋণের
ব্যাপারে অনমনীয়তা-
দুবাই পৃথিবীর অল্প কয়েকটি শহরের একটি যেখানে ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া
হয় না। আপনি কারো কাছ থেকে ঋণ নিলে কিংবা দোকান থেকে বাকি নিয়ে পরিশোধ করতে না
পারলে আপনার জেল জরিমানা পর্যন্ত হতে পারে।
৭. অপরাধের
মাত্রা প্রায় শূন্য-
আপনি অবাক হলেও এটা সত্য, দুবাই শহরে অপরাধের হার প্রায় শূন্যের
কাছাকাছি। তার মানে দুবাই নিরপরাধ শহর। এখানে বিভিন্ন দেশের মানুষ বাস করলেও একটা
বিষয় সবাই জানে এখানে অপরাধ করলে এর পরিণাম হবে ভয়াবহ।
৮.
সবচেয়ে উঁচু টেনিস কোর্ট-
টেনিসে
দুবাই বিশ্বসেরা না হলেও দেশটিতে রয়েছে পৃথিবীর সবচেরে উঁচু টেনিস কোর্ট। দুবাইয়ের
বুরজ আল আরব হোটেলের ছাঁদে এটি বানানো হয়েছে।
৯. শীতাতপ
নিয়ন্ত্রিত পথঘাট-
অন্য
দেশে যা অকল্পনীয়, সেটাই দুবাই শহরে স্বাভাবিক। এখানে
অতিরিক্ত গরম থাকে সবসময়। তাই আপনি বাসের জন্য কোনো বাসস্টপেজে দাঁড়ালে সেখানে
দেখবেন এসি করা ছোট ঘর।
১০.
বিলাসবহুল পরিত্যক্ত গাড়ি-
অন্যকোনো
শহরে আপনি বিলাসবহুল গাড়ি হয়তো কদাচিৎ দেখতে পাবেন। কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র
দুবাইয়ে। এখানে অনেক বিলাসবহুল গাড়ি যেমন- ফেরারি, বিএমডব্লিউ পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে
থাকতে দেখা যায়।
১১.
বনের পশুদের দেখা যায় শহরে-
দুবাইয়ের
ধনী শেখরা বনের পশুদের পোষ মানাতে ভালোবাসেন। সিংহ এবং চিতাবাঘকে তাঁরা নিজেদের
সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় ঘোরাফেরা করেন। জঙ্গল থেকে ধরে এনে অনলাইনে এসব পশুদের বিক্রি
করা হয় ধনীদের কাছে।
১২.
সংস্কৃতি-
দুবাইতে
ভ্রমণে গেলে আপনি সেখানে সাংস্কৃতিক সংঘর্ষ দেখতে পাবেন। সেখানে আমিরাতি মুসলিম
নারীরা আবায়া (বোরখা) পরে। কিন্তু তারই পাশে অন্য নারীকে দেখবেন বিকিনি পরে আছে।
১৩. সবচাইতে
উঁচু বিল্ডিং-
পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং বুরজ খলিফা এই মুহূর্তে
পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং হলো বুরজ খলিফা। দুবাই শহরকে বিশ্বের সামনে আলাদা করে
পরিচয় করিয়ে দিয়েছে এই বুরজ খলিফা।
১৪. সোনার পেয়ালায় কেক-
সোনার পেয়ালায় কেক ইতালির কোকো গাছের বীজ ও উগান্ডার ভ্যানিলা দিয়ে তৈরি বিশেষ
এক ধরনের কেক পাওয়া যায় দুবাইয়ে। আর এই কেক পরিবেশন করা ২৩ ক্যারেটের খাটি সোনার
পাত্রে। খেতে সাধারণ হলেও এটি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কেক।
১৫. পাম আইল্যান্ড-
রাজারা যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন। তাঁদের আছে অঢেল সম্পদ ও আজ্ঞাবহ কর্মচারী।
রাজারা বড়ই খেয়ালি। ইচ্ছে হলো সাগর বুকে দ্বীপ বানাবেন। ব্যস, শুরু হয়ে গেল কাজ। রূপকথার গল্পের মতো শোনালেও ঘটনাটি বাস্তব। দুবাইয়ের
শান্ত সাগরের বুকে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম দ্বীপ। তাও আবার তিনটি। কৃত্রিম হিসেবে
দ্বীপগুলো বিশ্বে যত বিস্ময় জন্ম দিয়েছে তার চেয়েও বেশি আকর্ষণ করছে এগুলোর আকৃতি।
দ্বীপ তিনটি হুবহু পাম গাছ আকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে। মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বড়
কৃত্রিম দ্বীপগুলোর নাম পাম জুমায়রা, পাম জাবেলে আলি,
পাম দেইরা। পাম জুমায়রা ও পাম জাবেলে আলি যথাক্রমে জুন ২০০১ ও
অক্টোবর ২০০২ সালে শুরু হয়ে নভেম্বর ২০১৪ সালে পাম জুমায়রার কাজ শেষ হয়।
১৬. সবচাইতে বড়
থিমপার্ক-
দুবাইল্যান্ড থিমপার্ক
দুবাই সবসময় চায় নির্মাণের দিক দিয়ে শহরটিকে যেন পৃথিবীর সবাই সমীহ করে। সে কারণে
দুবাইয়ে নির্মাণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয় দুবাইল্যান্ড নামের পৃথিবীর সর্ববৃহৎ থিম
পার্কের। প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার পর্যটক পার্কটিতে বেড়াতে যেতে পারবে।
১৭. সবচাইতে বড়
অ্যাকুরিয়াম-
পৃথিবীর
সর্ববৃহৎ অ্যাকোরিয়াম পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অ্যাকোরিয়ামটি অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম
সর্ববৃহৎ দুবাই শপিং মলে। অ্যাকোরিয়ামটিতে ৩৩ হাজার প্রজাতির প্রাণী রাখা আছে।
১৮. আকাশ ছোঁয়া দালান-
চলমান অবকাঠামো
নির্মাণ দুবাই শহরের অন্যতম বড় বৈশিষ্ট্য এর অবকাঠামোগত নির্মাণ শৈলী। উঁচু দালান, আকর্ষণীয় সব স্থাপনা
দুবাইকে দিয়েছে ধনী ও বিলাসবহুল শহরের খ্যাতি।
১৯. দরিদ্রদের
জন্য বিনামূল্যে খাবার-
দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে খাবার দুবাই ধনী শেখদের শহর। তাঁরা বিলাসবহুল জীবন যাপন
করে অভ্যস্ত। কিন্তু তাঁরা বিলাসবহুল জীবন যাপন করলেও খেয়াল রাখেন ছিন্নমূল
মানুষের দিকে। তাঁরা দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ করাকে খুব আনন্দের কাজ মনে করেন।
২০. বিলাসবহুল
পাবলিক টয়লেট-
বিলাসবহুল
পাবলিক টয়লেট সাধারণত পাবলিক টয়লেটগুলো খুব বেশি মানসম্মত থাকে না। তবে দুবাই গেলে
আপনার এই ধারণা পাল্টে যাবে। পৃথিবীর সবচেয়ে বিলাসবহুল পাবলিক টয়লেট দেখা যায়
দুবাইয়ের রাস্তায়। কোটি টাকা খরচ করে বানানো হয়েছে বিলাসবহুল এসব টয়লেট। এসব
টয়লেটে স্থাপন করা থাকে অত্যাধুনিক শাওয়ার ও জাকুজি।