চীন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চিন্তা করছে না সরকার
Tweet
গত রবিবার (২৬ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ থেকে চীনে এবং চীন থেকে বাংলাদেশে ভ্রমণ সাময়িকভাবে স্থগিত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতেই বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক জরুরি সভায় জানিয়েছিলেন তিনি।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, চীনে ভ্রমণে
নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে না বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘আমরা
উহানসহ চীনের সব জায়গায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। এছাড়া চীন
সরকারের সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।’ সেখানকার পরিস্থিতি
সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনও বাংলাদেশি করোনা
ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়নি।’ মাসুদ বিন
মোমেন বলেন, ‘উহানে অনেক দেশের নাগরিক রয়েছে। তাদের ফেরত নিতে
অন্য দেশগুলোও চীনের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমরাও যোগাযোগ করছি।’ চীনের পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আন্তমন্ত্রণালয় সভা
আহ্বান করেছে। সেখানে বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনা বিশদভাবে আলোচনা হবে বলে জানান
তিনি।
এদিকে
চীনে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে ওই দেশ থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত আনার নির্দেশ
দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে পররাষ্ট্র
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লিখেছেন,
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশের নাগরিক
যারা চীন থেকে ফিরতে চাইবেন তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার জন্য।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমরা চীনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা
শুরু করেছি। কী প্রক্রিয়ায় এটি করা হবে তা বাস্তবতার নিরিখে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে
সম্মতির ভিত্তিতে করা হবে।’
অন্যদিকে, প্রায়
দুই মাস আগে চীন ভ্রমণ করায় এক বাংলাদেশি যাত্রীকে ফেরত পাঠিয়েছে ভারত। শওকত আহমেদ
নামে ফেনীর এই ব্যবসায়ীকে আজ সোমবার সকালে ফেরত পাঠিয়েছেন ভারতের আগরতলা ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা।
সংবাদ মাধ্যমকে শওকত
আহমেদ জানান, ‘এক সপ্তাহ ভ্রমণ করে গত নভেম্বর মাসের শেষ দিকে আমি চীন থেকে দেশে ফিরি।
আজ সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে
ভারতে ঢুকি। এরপর পাসপোর্টে চীনের ভিসা দেখতে পেয়ে
আগরতলা ইমিগ্রেশন আমাকে আটকে দেয়।’ দুই মাস আগে চীন ভ্রমণ
করায় তাকে ভারতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
আখাউড়া ইমিগ্রেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-পরিদর্শক আব্দুল হামিদ জানান, ‘বৈধ ভিসা ছিল শওকত আহমেদের। দুই মাস আগে চীন ভ্রমণ করায় তাকে ভারতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে আগরতলা ইমিগ্রেশন থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনা ভাইরাসের কোনও লক্ষণ পাওয়া যায়নি।’
ভারত থেকে বাংলাদেশি
ব্যবসায়ীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহ আলম জানান, ‘তিনি ফিরে আসার পর আমরা তার স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছি। করোনা
ভাইরাসের কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।’ তিনি বলেন, ‘ভারতীয় কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই তাকে ফেরত পাঠিয়েছেন, যেটা ঠিক হয়নি। এর ফলে অযথা আতঙ্ক তৈরি হতে পারে।’