স্বাগত ২০২০: উদযাপন আর উদ্দীপনার বছর বিশ্বজুড়ে
Tweet
১. নিউইয়র্ক,
যুক্তরাষ্ট্র-
যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে হ্যাপি নিউ ইয়ারে কতটা মেতে
ওঠে সবাই তারই প্রতিচ্ছবি যেন
নিউইয়র্কের ম্যানহ্যাটানে
অবস্থিত টাইমস স্কয়ার। প্রায় ১০ লাখ মানুষের সমাগম হয় এখানে। টাইমস স্কয়ারে
এবারও ঐতিহ্যবাহী বল ড্রপ করা হবে। ১৯০৭ সালে শুরুর পর শুধু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের
সময় দুই বছর বাদে প্রতিবছর এই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। টাইমস স্কোয়ারের
হৈ-হুল্লোড় এড়িয়ে আতশবাজি উপভোগের জন্য ব্রুকলিনের প্রসপেক্ট পার্কে অবস্থিত
গ্র্যান্ড আর্মি প্লাজায় যাওয়া যায়।
২. লন্ডন, যুক্তরাজ্য-
ইংরেজি নববর্ষের আতশবাজি প্রদর্শনী চোখধাঁধানো
লাগে ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনের টেমস নদীর তীরে। পাহাড়ি এলাকা প্রিমরোজ হিল, হ্যাম্পস্ট্রিড হিথের পার্লামেন্ট হিল, গ্রিনউইচ
পার্ক ও আলেক্সান্ড্রা প্যালেস থেকে জমকালো রাতের আকাশ উপভোগ করা যায়। টেমস নদীতে
পাল তোলা নৌকায় চড়ে বর্ষবরণের অনুভূতি অন্যরকম। শহরের মিলব্যাঙ্ক টাওয়ারের ২৮ ও ২৯
তলায় লন্ডন স্কাইবারে ১২ ঘণ্টার পার্টিতে থাকে শ্যাম্পেন, ডিজে মিউজিক, অফুরান খাবার। লন্ডনে নতুন বছরের
ঐতিহ্য হলো পুরনো পানশালায় যাওয়া। এছাড়া ব্রিটিশ রাজপরিবার নিয়ে আগ্রহীরা কেনসিংটন
প্যালেসের মতো ঐতিহাসিক জায়গায় বেড়ান, যেখানে রানি ভিক্টোরিয়ার
জন্ম হয়েছিল।
৩. বার্লিন, জার্মানি-
জার্মানির বার্লিনে আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে নিউ ইয়ার উদযাপনের সময়ে আতশবাজির আলোকে। শ্যাম্পেন, ডিজে মিউজিক, অফুরান খাবার, নদীতে ক্রুজ ডাইনিং, নাইট লাইফ, সবই রেঙে ওঠে উৎসবের আমেজে। হাজারা হাজার পর্যটকের মেলা বসে সবখানে।
৪. প্যারিস, ফ্রান্স-
নতুন বছর আরম্ভের সময়ে হাজার হাজার দর্শক জমায়েত হয় প্যারিসের আর্ক দি ট্রায়াম্ফের সামনে। আতশবাজি পুড়াবার মাধ্যমে শুরু করা হয় নতুন বছরের প্রথম ক্ষণ। শহরে ঘুরাঘুরি করা ছাড়াও আপনজনদের সাথে নিয়ে শ্যেন নদীতে ক্রুজ ডাইনিং ও পানশালায় পান করার মাধ্যমেও নববর্ষ উদযাপন করা যায় সেখানে।
৫. জেনেভা, সুইজারল্যান্ড-
সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে শুধুমাত্র
আতশবাজি পুড়ানো কিংবা পানশালার সুবিধাই শুধু নয়, দেশী বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ
করবার জন্য রাখা হয় আরও হরেক রকমের আয়োজনও। মোটর শো, বেলুন ফেস্টিভ্যাল, টাচ দ্য
মাউন্টেইন, নিউ ইয়ার ডিনার পার্টি ইত্যাদি।
৬. ইস্তানবুল, তুরস্ক-
ইস্তানবুলের বসফরাস প্রণালীতে আতশবাজি পুড়াবার মাধ্যমে শুরু হয় নিউ ইয়ার উদযাপন। নতুন বছর উদযাপনের জন্য তুরস্কেও রাখা হয় হরেক রকমের আয়োজন। যার ফলে আকর্ষিত হয় পর্যটকেরা। ছবিতে ইস্তাম্বুলের অর্টাকয় স্কয়ারে লোকেরা নতুন বছরের জন্য অপেক্ষা করছে।
৭. কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া-
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আতশবাজি ছাড়াও বর্ণিল চিত্র উপস্থাপন ও বিভিন্ন কনসার্ট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় নিউ ইয়ার। ছবিতে, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের কাছে আতশবাজি ফাটিয়ে নববর্ষ উদযাপন করে সাধারণ মানুষ।
৮. সিংগাপুর-
রাত ১১টা থেকেই শুরু হয় সিঙ্গাপুরের মেরিনা বেতে আতশবাজি পুড়ানোর অনুষ্ঠান। এবছরের সবচাইতে বড়
কাউন্টডাউনের আয়োজন করেছে তারা সেখানে। হাজার হাজার পর্যটক অংশগ্রহন করে এই
আয়োজনে। ছবিতে নববর্ষের উদযাপনের সময় মেরিনা বেতে আতশবাজি
ফোটানোর দৃশ্য।
৯. সিডনি, অস্ট্রেলিয়া-
প্রতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ইংরেজি নববর্ষ বরণ করা হয়। সিডনি হারবারে উপভোগ করা যায়
বর্ণিল আতশবাজি ও আকাশে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ লেখা শুভেচ্ছা বার্তা। এর পাশে অপেরা হাউস ও হারবার ব্রিজ থাকায় বাহারি
আলোর ঝলক দর্শনীয় লাগে। বন্দরের দু’পাশের দ্বীপগুলো কিংবা
পরিবারবান্ধব পার্কগুলো থেকেও এসব উপভোগ করা যায়। সিডনিতে সবেমাত্র গ্রীষ্ম শুরু
হয়েছে, ফলে বোনাস হিসেবে শহরটির সৈকতগুলোতে বেড়ানোর
সুযোগ পাওয়া হবে বোনাস। এগুলো হলো ম্যানলি, বন্ডি ও
ব্রন্ট।
বাংলাদেশে নববর্ষ উদযাপন-
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মূল পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মতো বাংলাদেশের মূল পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় আতশবাজি ও কনসার্টময় জৌলুশপূর্ণ নববর্ষ উদযাপন করা হয়না। তাই এ সময়টাতে আমাদের পর্যটন কেন্দ্রগুলো টুরিস্টদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম নয়। আইনি বাধা শিথিলকরণ ও নিরাপত্তার সুব্যবস্থা করার গেলে বাংলাদেশও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম প্রিয় স্থান হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এবারের বর্ষবরণকে ঘিরে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে নেই তেমন কোনও আয়োজন। এ কারণে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় পর্যটক সমাগম অনেক কম।
নিরাপত্তাজনিত কারণে সৈকতে উন্মুক্ত কনসার্ট বা চিত্তবিনোদনের কোনও ধরনের অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়নি নিরাপত্তা প্রশাসন। তাই পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পড়েছেন সংকটে। শুধুমাত্র পাঁচতারকা হোটেলেই শুধু থেকেছে ছোট পরিসরে আকর্ষণীয় কিছু আয়োজন রয়েছে।