ঢাকার ধামরাইয়ে কালের সাক্ষী অপূর্ব ‘দম্পতি গাছ’
Tweet
পৃথিবীতে বহু নামের গাছের কথা জানা থাকলেও প্রায় পাঁচশ বছরের পুরাতন দম্পতি গাছের কথা হয়তো নতুনদের অনেকেই আমরা জানি না। কালের সাক্ষী হয়ে এক ‘প্রেমিক’ বৃক্ষ যুগল দাঁড়িয়ে আছে ঢাকার অদূরে ধামরাই উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের ষাইট্রা গ্রামে ।
শত বছরের পুরনো এ গাছ দুটিকে স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দেবতা মনে করেন। গাছ দুটি নিয়ে অনেক কল্পকাহিনি এলাকায় প্রচলিত । জনশ্রুতি আছে, প্রায় ৫০০ বছর আগে তৎকালীন স্থানীয় দেবীদাস বংশের পূর্বপুরুষরা ভালোবেসে ওই স্থানে পাশাপাশি একটি পাকুড় গাছ ও একটি বটগাছ রোপণ করেন। তৎকালীন সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, বটগাছকে পুরুষ আর পাকুড় গাছকে নারী মনে করা হতো। দাস বংশের লোকেরা গাছ দুটিকে ওই সময় হিন্দু ধর্মের রীতি মেনে বিয়ে দিয়েছিলেন- এমন কথাও এলাকায় প্রচলিত। এ কারণে গাছ দুটিকে ‘স্বামী-স্ত্রী’ গাছও বলা হয়।
গাছ দুটিকে ঘিরে রহস্যময় কিছু গল্প স্থানীয়ভাবে প্রচলিত । অনেকেই জানান, গাছ দুটির ডাল পালা কাটা হয় না, কারণ যিনি ডাল কাটতে যান তিনিই অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েকবারই এমন ঘটনা ঘটেছে। পরে আক্রান্ত ব্যক্তিরা গাছগুলোয় পূজা দেওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
দীর্ঘদিন ডালপালা না কাটার কারণে ৬০ টিরও বেশি শিকড় নিয়ে বর্তমানে গাছ দুটি ৫ বিঘা এলাকা জুড়ে বিস্তৃত । শিকড়গুলো একটার সঙ্গে আরেকটা এমনভাবে জড়িয়ে আছে যা দেখলে ভালোবাসার মেলবন্ধন বলেই মনে হবে। প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন এ প্রেমিক বৃক্ষ যুগলের কাছে। এর মধ্যে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও আছেন। স্থানীয় তো বটেই, ঘুরতে আসা শিশুরাও গাছগুলোর ডালে বসে আনন্দ উপভোগ করে। নিজেদের প্রেম স্মৃতিময় রাখতে অনেক প্রেমিক যুগলও আসেন গাছ দুটির কাছে। আজকাল অনেকে বনভোজনের জন্য এ স্থানটি বেছে নিচ্ছেন। কেউ বা আসছেন শখের ফটোগ্রাফি করতে। এছাড়া স্থানীয় অনেক স্কুল -কলেজের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজনও হয় এ বৃক্ষ প্রাঙ্গণে।
কীভাবে যাবেন: ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে মানিকগঞ্জের বাসে টুলিভিটায় নামতে হবে । তারপর সরাসরি সিএনজি যোগে যাওয়া যাবে ষাইট্রার বটগাছে।