বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিজড়িত কলকাতার বেকার হোস্টেল একটি দর্শনীয় স্থান
Tweet
কলকাতার বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, বাঙ্গালীর জাতীয়মুক্তি ইতিহাস যেমন জড়িয়ে আছে, ঠিক তেমনি নতুন প্রজন্মের কাছে এখন এটি একটি বিশেষ দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। শুধু বাংলাদেশের অনেকের কাছেই নয়, বরং ভারত কিম্বা অন্যদেশেরও এখন ওই স্থানটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা কলকাতার সাবেক ইসলামিয়া কলেজের (বর্তমান মাওলানা আজাদ কলেজ) ঐতিহ্যবাহী সরকারি বেকার হোস্টেলের বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকক্ষে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওই আবক্ষ ভাস্কর্য টি দেখতে যান, ঘুরতে যান, জানতে যান কিভাবে কেটে ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই সময়গুলো।
বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম গতবছর নতুন করে এ ভাস্কর্য আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন। এ সময় স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, পশ্চিমবঙ্গের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সিভিল ডিফেন্স দফতরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান এবং কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসানসহ কলকাতার বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।
২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বেকার হোস্টেলে প্রথম বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে বঙ্গবন্ধুর মুখমণ্ডল যথাযথভাবে ফুটে না ওঠায় নতুন একটি ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেন বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে এখানে পুরনো ভাস্কর্যকে সরিয়ে নতুন ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেন। সেই লক্ষ্যে ঢাকার শিল্পী লিটন পাল রনির নির্মিত বঙ্গবন্ধুর নতুন একটি ভাস্কর্য ঢাকা থেকে এনে ২০১৯ সালে তা স্থাপন করা করা হয়।
এসময় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন একাটি গর্বের বিষয়। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের এক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর নতুন ভাস্কর্য স্থাপনে সহায়তার জন্য ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
ঐতিহ্যবাহী বেকার হোস্টেলটির অবস্থান কলকাতার শিয়ালদহের কাছে ৮ স্মিথ লেনে। ১৯১০ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় এই বেকার হোস্টেল। এটি সরকারি ছাত্রাবাস। বঙ্গবন্ধু কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ডিগ্রি পড়ার সময় ১৯৪২ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এই বেকার হোস্টেলে ছিলেন।
তিনি ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ১৯৪২ সালে এই ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষে থাকতেন।সেদিনকার এই ইসলামিয়া কলেজের নাম পরিবর্তন করে এখন নামকরণ করা হয়েছে মাওলানা আজাদ কলেজ।
১৯৪৬ সালে বঙ্গবন্ধু ইসলামিয়া কলেজছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এই ইসলামিয়া কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেছিলেন। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী বেকার হোস্টেলটির বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও তার জানতে এখানে ছুটে আসে তরুন প্রজন্মের অনেকেই। তাই বলা যায় অন্য সব বিবেচনা ছাড়াই শুধু বঙ্গবন্ধুর অতীত ইতিহাসকে কেন্দ্র বাংলাদেশিদের কাছে কলকাতার বেকার হোস্টেলের এই স্থানটি একটি দর্শনীয় স্থান।