ভ্রমনসহ যে কোন হাঁটার মাঝে ‘টেক্সটিং’ বেশি বিপজ্জনক
Tweet
রাস্তায়, পাহাড়ে ভ্রমনসহ যে কোন হাঁটার সময়ই মোবাইলে গান শোনা বা কথা বলার চাইতে ‘টেক্সট’ পড়া বা লেখা মানুষকে বেশি অসতর্ক করে।
‘ইনজুরি প্রিভেনশন’ শীর্ষক জার্নালে প্রকাশিত এক জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ‘হাঁটার সময় গান শোনা কিংবা মোবাইলে কথা বলার তুলনায় ‘টেক্সটিং’ করলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা এই জরিপ চালান।
তারা বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ, ভিডিও, গান, স্মার্টফোন এখন সবার হাতে হাতে। এই অনুষঙ্গগুলো স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ওপর প্রভাব ফেলছে অনেকটাই। রাস্তায় হাঁটা, এমনকি রাস্তা পারাপারের সময়ও মানুষের মনযোগ পড়ে থাকে স্মার্টফোনে। ভবিষ্যতে এই অন্যমনষ্কতা আরও বেশি নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করবে।”
বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার পথচারী মৃত্যুবরণ করেন; যা বিশ্বব্যাপী সড়ক দুর্ঘটনার এক পঞ্চমাংশ। পথচারীদের মাঝে অন্যমনষ্ক হয়ে চলাফেরা ক্রমেই গুরুতর আকার ধারণ করছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হল ক্রমেই অমনযোগী স্মার্টফোন ব্যবহারকারী পথচারীর সংখ্যা বাড়ছে। রাস্তায় চলাফেরার সময় স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরতে গবেষকরা প্রমাণ হিসেবে বেছে নেন প্রকাশিত প্রতিবেদন।
মোট ৩৩টি গবেষণার মধ্য থেকে বাছাই করে ১৪টি গবেষণা থেকে তথ্য নেওয়া হয়, যাতে মোট অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ৮৭২ জন। এছাড়াও অবশিষ্ট আটটি গবেষণার তথ্যদিও কৌশলে পর্যালোচনা করা হয়।
হাঁটা কিংবা রাস্তা পার হওয়া শুরু করতে কতটা সময় লেগেছে, নিরাপদে রাস্তা পার হওয়ার কতটা সুযোগ তারা হারিয়েছেন, রাস্তা পার হতে কতটুকু সময় লেগেছে, পার হওয়া আগে ডানে-বামে তাকিয়েছেন কিনা, দুর্ঘটনা এবং অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়ার মাত্রা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করেন গবেষকরা।
সংগ্রহীত তথ্যের বিশ্লেষণে দেখা যায়, গান শোনার সঙ্গে গুরুতর কোনো দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রাস্তা পার হওয়ার সময় কিংবা গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বলার কারণে দুর্ঘটনার হার সামান্য বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সংঘর্ষ ও অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়ার হারও। তবে ‘টেক্সট মেসেজ’ করাই দেখা দিয়েছে সবচাইতে বেশি দুর্ঘটনার কারণ, বলা হয় জরিপের ফলাফলে। ‘টেক্সটিং’ করার সময় রাস্তা পার হওয়ার ক্ষেত্রে মানুষ ডানে-বামে তাকায় খুবই কম, ফলে দুর্ঘটনার হারও বেশি।
এছাড়াও ‘টেক্সটিং’ করা অবস্থায় রাস্তা পার হতে মানুষ সময় নেয় সবচাইতে বেশি। নিরাপদে পার হওয়া সুযোগও হারিয়েছে সবচাইতে বেশি এই ‘টেক্সটিং’ করার সময়ই।গবেষণার পর্যালোচনা অনুযায়ী, অমনযোগী পথচারীর মাত্রা ১২ থেকে ৪৫ শতাংশ। আর চলাফেরার সময় তাদের আচরণ প্রভাবিত হয় বিভিন্ন কারণে। যেমন- লিঙ্গ, দিনের সময়, একা কিংবা দল বেঁধে থাকা, হাঁটার গতি ইত্যাদি।
“অন্যমনষ্ক পথচারীর আচরণ আর দুর্ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার বিষয়বস্তু।” বলেন গবেষকরা।