করোনার প্রভাবে ভ্রমণশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত
Tweet
করোনায় চীনসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বা হতে যাচ্ছে। আর এরফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। ভ্রমণশিল্প এখন পৃথিবীর অন্যতম বড় শিল্প। বার্ষিক রাজস্ব এই শিল্পে ৫ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলার। প্রায় ৩১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয় এতে। যার কারণে চীনের করোনাভাইরাসের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এ শিল্প।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ চীনে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এ খাত আরো ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা নাকি কেবল শুরু। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, ৯/১১-এর সন্ত্রাসী হামলার পর এটি ভ্রমণশিল্পের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ আঘাত হতে যাচ্ছে।
ভ্রমণশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদি করোনাভাইরাসের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হয়।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রাভেল ইকোনমিকসের প্রেসিডেন্ট অ্যাডাম স্যাকস সিএনএনকে বলেন, ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ। ভ্রমণশিল্পের প্রভাব যদি পূর্ণাঙ্গভাবে পরিমাপ করা হয়, তাহলে সেটা বিশ্বের অন্যান্য যেকোনো শিল্পের চেয়ে বড়। আর কোনো শিল্প তো বলতে পারবে না যে বিশ্বের প্রতি ১০টি কর্মসংস্থানের একটি তারা করছে। তিনি আরও বলেন, এ খাতের ওপর প্রভাব এত বড় হওয়ার কারণ হলো, এটি অনেক বিচিত্র। খাতটির সঙ্গে যেমন বিমান কোম্পানি ও হোটেল ব্যবসার সম্পর্ক আছে, তেমনি রেস্তোরাঁ ও প্রযুক্তির সম্পর্ক আছে।
পুরো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেই মানুষের ভ্রমণ কমে গেছে। শুধু যে চীনে যাওয়া–আসা কমে গেছে, তা নয়, এশীয় অন্যান্য দেশেও মানুষের ভ্রমণ কমেছে। এ সপ্তাহে ইউনাইটেড এয়ারলাইনস জানিয়েছে, চীনের যাত্রী একেবারে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। আর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশে তাদের যাত্রী কমেছে প্রায় ৭৫ শতাংশ।
অর্থনৈতিক পরাশক্তি হয়ে ওঠার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই চীনা নাগরিকেরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্রমণকারী জাতি হিসেবেও গড়ে উঠেছে। দেশটির ১৮ কোটি মানুষের পাসপোর্ট আছে। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছে ১৪ কোটি ৭০ লাখ মানুষের। কিন্তু করোনার প্রভাবে চীনাদের যাতায়াত একরকম শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।
করোনার প্রভাবে গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে বার্সেলোনায় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস, জেনেভা মোটর শো, ফেসবুকের এফ৮ সম্মেলন ইত্যাদি। সবচেয়ে পরিহাসের ব্যাপার হলো, ভ্রমণশিল্পের বড় সম্মেলন আইটিবি বার্লিনও এ সতর্কতার কারণে বাতিল হয়েছে। কোনো কোনো সম্মেলনে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়।
এসব সম্মেলনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সফরও বাতিল করা হচ্ছে। আমাজনের মতো বড় কোম্পানিও কর্মীদের অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ বাতিল করছে। গ্লোবাল বিজনেস ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, বিশ্বের ৩৭ শতাংশ ব্যবসায়িক সফর বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।