খাবারের খোঁজে রাস্তায় কর্মহীন মানুষ
Tweet
মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালতসহ সবকিছুই এখন বন্ধ। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন অধিকাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ। কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাদ্য সংকটে পড়েছেন তারা। সরকার ত্রাণ দিলেও অনেকেই তা পাচ্ছেন না। অনেকেই খাদ্য জোগান দিতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। দ্বারে দ্বারে হাত পাতছেন কেউ কেউ।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়ে সরকারি ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা রিনা বলেন, বন্ধ পড়বো বুইজ্যা তিন কেজি আটা আইন্ন্যা ঘরে রাখছিলাম। ওডি বানাইয়া বানাইয়া খাইতাছি আজকা তিন দিন। আজকা পোলাপাইনে ভাত চাইছে, না পাইয়া রাস্তায় আইছি। যেমনেই হোক, গাড়ি-ঘোড়া থিকা পাই আর যেহান থিকাই পাই-চাইড্ডা ডাইল-ভাত রাইন্দ্যা খাওয়ামু।
বেলা ১১টার দিকে রিনাসহ কারওয়ান বাজার সংলগ্ন নাখালপাড়া বস্তির শিশু, মধ্যবয়স্ক এক বৃদ্ধা অপেক্ষা করছিলেন সরকারি ত্রাণের। তারা জানান, করোনার পর তাদের কাজকর্ম বন্ধ হয়েছে। তাদের কাছে যা জমানো টাকা ছিল তাও শেষ। সরকার চাল-ডাল-সাবান দিচ্ছে। সেসবও তারা পাচ্ছেন না। তাই রাস্তায় বের হয়েছেন, যদি কোথাও ত্রাণ দিতে দেখেন, সেখান থেকে নেবেন। ইতোমধ্যে অনেকে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। এখন ত্রাণ না পেলে সবাইকে পুরো উপোস থাকতে হবে।
নাছমিনা নামে একজন বলেন, আমার তিন ছেলে। স্বামী রিকশা চালায়। আমি বাসাবাড়িতে কাজ করি। বাসাবাড়িও বন্ধ। কাজ দেয় না। কয়, করোনা শেষ হইলে যাইবার। বেতনও তো দেয় নাই। বেতন ছাড়া চলি কী কইরা! যেসব জায়গায় টাকা-পয়সা পাইতাম, ওইগুলা দিয়া চললাম। এহন তো আর খাওনের জো নাই।
সাগর নামে আরেকজন বলেন, আমাদের ওইদিকে রেললাইনের রাস্তা। ত্রাণের গাড়ি হয়তো যাইতে পারে না। আরেক দিকে দিলে পাই না। আগে একটা ব্যবসা করতাম। এহন সব বন্ধ। আর চলতে পারি না।
রিকশাচালক শহিদুল বলেন, হুনি, ওদিক-ওদিক পাইতেই আছে। আমরাই পাই না। যার ফলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুড়ি। দেহি, গাড়ি দিয়া চাল-ডাল নিয়া যায় কি না।
ঘরে খাবার না থাকায় ত্রাণের আশায় রাস্তায় বের হয়েছেন বসুন্ধরা শপিং মলের পেছনে থাকা বৃদ্ধা মমতা। তিনি বলেন, বাইরে বাইর অইচি পেটের দায়ে। খাবার-দাবার (সরকারের ত্রাণ) বেকেই (সবাই) বলে পায়, আমরা তো পাই না।