আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালিত
Tweet
লেখক-কামিল শিবলী, ফ্রিল্যান্স রাইটার
দেশে করোনাকালের মধ্যে ১২ মে সীমিত আকারে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালিত হলো। ডিজিটালি পালন করা হয় দিবসটি। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে সৃষ্ট জটিলতায় নার্সদের সন্মানে এই বিশেষ দিনটি বিশেষভাবে পালন করা যায়নি। দিবসটির এবারে প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘নার্স : এ ভয়েস টু লিড-নার্সিং দ্য ওয়ার্ল্ড টু হেলথ’। অর্থাৎ নার্স : আধুনিক বিশ্ব সাস্থ্য সেবায় একটি কন্ঠস্বর।
আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা, নার্সিংয়ের প্রবর্তনকারী ইউরোপের অন্ধকারে আলোকবর্তিকা; ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের জীবনময় সেবাধর্মকে শ্রদ্ধা জানাতে তার জন্মদিনে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালন করা হয়।
নাইটিংগেল তার বাবা,এক ধনী ভূস্বামীসহ পুরো পরিবারকে নিয়ে ইউরোপ ভ্রমণে বের হন। তখন তার চিন্তাধারায় ব্যাপক পরিবর্তন চলে আসে। তিনি শুরু করেন আধুনিক নার্স সেবা। তবে তার শুরুটা এতো মধুর ছিল না।
প্রথম দিকে নিম্ন শ্রেণির বলে পরিচিত এই সেবাকে তিনি টেনে তুলেন সর্বোচ্চ সন্মানের জাগায়। বর্তমান বিশ্বে স্বাস্থ্য সেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও সন্মানের এই সেবা করোনা ভাইরাস মোকাবেলা সম্মুখ যোদ্ধার ভূমিকায় অবতীর্ণ একথা দেশে বিদেশে আমাদের সবাই অকপটে স্বীকার করেন।
আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি দেয়া বাণীতে বলেন, ‘আমি আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা দেশ থেকে করোনাভাইরাস নির্মূলে সক্ষম হব। বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট মহামারি মোকাবিলায় নার্সরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’
তিনি বলেন, ‘একটি দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় নার্সিং স্টাফ একটি অপরিহার্য উপাদান। আধুনিক নার্সিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২০ সালকে আন্তর্জাতিক নার্স ও মিডওয়াইফ বর্ষ ঘোষণা করেছে।’
অপরদিকে নার্স দিবসে সকল নার্স কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল হাসপাতালে (পিজি) এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘দেশে দক্ষ নার্স তৈরি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা প্রদান করেছেন।
আন্তর্জাতিক নার্স দিবসের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স পদায়ন আরো একটি মাইলফলক।
আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস উপলক্ষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল শাখার (বিএনএ) সভাপতি কামাল হোসেন পাটওয়ারী এবং স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ এর সভাপতি মোহাম্মদ মোস্তাফিজু রহমান নার্সদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
নাইটিংগেলের সবচেয়ে বড় অবদান ছিল ক্রিমিয়ার যুদ্ধে অসুস্থ সৈন্যদের পাশে দাঁড়ানো।
বিশ্বে ১৯৬৫ সাল থেকে পালিত হয়ে আসলেও বাংলাদেশেও ১৯৭৪ সাল থেকে দেশে দিবসটি পালন করে আসছে। এবার করোনা পরিস্থিতিতে অনেক দিবসের মতো এই দিবসটিও আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপনের উপায় নেই। নার্সরা নিজেরাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যার যার অবস্থান থেকে করোনায় আক্রান্তদের সেবা করে যাচ্ছেন।
ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের জন্ম ১৮২০ সালের ১২ মে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে। তিনি ছিলেন অপূর্ব রূপসী, অন্যদিকে খুবই দয়ালু ও স্নেহপূর্ণ মনের এক মহীয়সী নারী।