ভ্রমণখাত বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মার্চ থেকেই সম্ভাব্য ক্রেতা ও ভাড়া নিতে সক্ষম ধনী ব্যক্তিদের বেসরকারি মালিকানার দ্বীপে ঠাঁই নেওয়ার ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
অন্টারিও রিয়েল এস্টেট কোম্পানি প্রাইভেট আইল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী ক্রিস ক্রোলোউ জানান, মহামারীর আগে দিনে দ্বীপ ভাড়া বা বিক্রি সংক্রান্ত ১০০টা অনুসন্ধানের জবাব দেওয়া লাগত, আর এখন জবাব দিতে হয় গড়ে দেড়শ অনুসন্ধানের।
ক্রোলোউর কোম্পানির হাতে বিক্রি কিংবা ভাড়া দেয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে ৮০০’রও বেশি দ্বীপ আছে। যদিও সবগুলোর প্রতিই সম্ভাব্য ক্রেতা বা ভাড়াটের আগ্রহ সমান নয়। বেশিরভাগেরই চাহিদা ক্যারিবীয় অঞ্চল কিংবা মধ্য আমেরিকার কোনো একটি দ্বীপ।
সম্ভাব্য ক্রেতা ও ভাড়া নিতে ইচ্ছুকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নাগরিকই বেশি বলেও ক্রোলোউ জানিয়েছেন।
“তারা চান সহজে যাওয়া যায় এমন কোনো জায়গা, এ কারণেই এশিয়া ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরেরগুলো বাদ পড়ে যাচ্ছে,” বলেছেন তিনি।
ক্রোলোউর মালিকানাধীন বেলিজের গ্লাডেন দ্বীপের কথাই ধরা যাক। কোভিড-১৯ এর প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের প্রবাল প্রাচীরের মধ্যে অবস্থিত এ দ্বীপটির চাহিদা আকাশচুম্বী হতে থাকে।
গ্লাডেন এমনিতেই বেশ জনপ্রিয়, কিন্তু এখন চলতি বছরের বাকি সময়ের জন্যও দ্বীপটি ‘বুকড’ বলে জানান ক্রোলোউ।
এক একরের দ্বীপটির চারপাশে সবসময় চিকচিক করে ফিরোজা নীল সমুদ্র। মাত্র চারজনের থাকার ব্যবস্থা সম্বলিত এ দ্বীপে আসতে হয় নৌকায় চেপে। দ্বীপের যাবতীয় দেখভালের জন্য আছে চার কর্মচারী, যারা থাকেন পাশের অন্য একটি দ্বীপে। সবসহ গ্লাডেনে এক রাতের জন্য দুজনের ভাড়া শুরু হয় তিন হাজার ৬৯৫ডলার থেকে।
ভাড়া দেওয়ার ঘটনা যতটা সহজ ও নৈমিত্তিক, দ্বীপ বিক্রি করাটা ততটা নয়, বলছেন ক্রোলোউ।
নতুন করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ভ্রমণের উপর কামড় বসানোর পর থেকে এখন পর্যন্ত তার কোম্পানি একটি দ্বীপও বিক্রি করতে পারেনি, পারেনি আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের তাদের পছন্দের দ্বীপগুলো ঘুরিয়ে দেখাতে।
আছে দামের তারতম্যও। কানাডার একটি ছোট দ্বীপ যেখানে কেনা যায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলারে; সেখানে কয়েক হাজার একরের ক্যারিবীয় কোনো দ্বীপ, যাতে একটি বিশাল সুরম্য ভিলা থাকবে, তার জন্য পকেট থেকে খসতে পারে পারে ১৫ কোটি ডলারেরও বেশি। সঙ্গে যুক্ত হতে পারে নতুন কিছু যন্ত্রণাও।
“আপনি যদি দ্বীপে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে, চুক্তি করতে হবে আমলাদের সঙ্গে। এছাড়া বাড়ি কেনা আর দ্বীপ কেনার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আপনি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন, তো সেটা আপনার,” বলেন ক্রোলোউ।
ব্রোকার এবং ভ্রমণখাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহুর্তে ক্যারিবীয় অঞ্চলের মধ্যে বাহামার দ্বীপগুলোই ক্রেতাদের কাছে সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত।