কেরোনায় শনাক্ত রোগী অর্ধ লক্ষ ছাড়াল, মৃত্যু আরও ৩৭সহ বেড়ে ৭০৯
Tweet
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ১২ সপ্তাহের মাথায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫২ হাজার ছাড়িয়ে গেল, এই এক দিনে আরও ৩৭ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭০৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ২ হাজার ৯১১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাতে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৪৪৫ জনে।
সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন আরও ৫২৩ জন। সব মিলে এ পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ১২০ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা মঙ্গলবার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী। তাদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২৮ জন, আর ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বাড়িতে।
মৃতদের মধ্যে ১০ জন ঢাকা বিভাগের, ১৫ জন চট্টগ্রামের, ৩ জন বরিশালের, ৪ জন সিলেট, ২ জন রাজশাহী, ২ জন রংপুর এবং ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
তাদের মধ্যে ২ জনের বয়স ছিল ৮০ বছরের বেশি। এছাড়া ১০ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছর, ১০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ৪ জন ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ৩৮৮ জনকে। বর্তমানে সারা দেশে আইসোলেশনে রয়েছেন ৬ হাজার ২৪০ জন রোগী।
বুলেটিনে জানানো হয়, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৫২টি পরীক্ষাগারে ১২ হাজার ৭০৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগীর খোঁজ মেলে গত ৮ মার্চ; তার দশ দিনের মাথায় ঘটে প্রথম মৃত্যু।
শুরুতে কেবল আইইডিসিআরে পরীক্ষা করার সুযোগ ছিল বলে ভাইরাসের বিস্তারের প্রকৃত চিত্র আসছিল না। এপিলের শুরুতে পরীক্ষার আওতা বাড়ার পর দেশে আক্রান্তের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে।
১৪ এপ্রিল ২০৯ জন নতুন রোগী শনাক্তের তথ্য দেওয়া হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বুলেটিনে, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ১ হাজার ১২ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারে পৌঁছায় ৪ মে। সেদিন ৬৮৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজার ১৪৩ জন হয়।
অর্থাৎ, দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ৫৭ দিনের মাথায় শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা দশ হাজারের ঘরে পৌঁছায়।
এরপর ১১ দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার, তার পরের সাত দিনে ৩০ হাজার এবং তার ছয় দিনের মাথায় ২৮ মে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়ায়।
পরের দশ হাজার রোগী শনাক্ত হতে সময় লাগল আরও কম, চার দিন। মঙ্গলবার দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার পেরিয়ে গেল।
এ পর্যন্ত দেশে মোট তিন লাখ ৩৩ হাজার ৭৩টি নমুনা পরীক্ষা করার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১৭ কোটি মানুষের দেশে আরও অনেকে পরীক্ষার বাইরে থেকে যাওয়ায় আক্রান্ত বা মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা।