জীবন না জীবিকা? ভারসাম্য রক্ষাই চ্যালেঞ্জ, বলছে ডব্লিউএইচও
Tweet
দুই মাসের লকডাউন শেষে বেঁচে থাকার কায়দা-কানুন নতুন করে শিখতে হচ্ছে মানুষকে, সবার মধ্যেই কাজ করছে এক ধরনের আতঙ্ক। বিশ্বের অন্য সব দেশের মত বাংলাদেশের মানুষও এখন মহামারী শুরুর আগের সেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে চাইছে। কিন্তু সেই পথে তাদের সামনে গভীর অনিশ্চয়তা। এই যাত্রায় দুঃখ আছে, সঙ্গে আছে আশাও।এই অনিশ্চিত যাত্রায় উৎরাতে হলে বাংলাদেশের মানুষকে কী করতে হবে? এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি বর্ধন জং রানার এ সম্পর্কে মত জানতে চাওয়া হরে তিনি এসব কথা বলেন। তার ভাষায়, জীবন বাঁচানো এবং জীবিকা বাঁচানো- এই দুইয়ের মধ্যে সতর্ক ভারসাম্য রক্ষাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
রানা বলছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে জয় পেতে হলে দায়িত্ব নিতে হবে সরকার থেকে জনগণ-সবাইকে। লকডাউনের বিধিনিষেধ যেহেতু উঠে গেছে, এখন ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয় পর্যায়ে সংক্রমণ রোধে আরও জোর দিতে হবে।বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশে প্রতি চারজনে একজন এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে। নজিরবিহীন এই জনস্বাস্থ্য সঙ্কটে এই দরিদ্র মানুষগুলোকে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বাংলাদেশে এই মহামারীর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। ফলে করোনা ভাইরাস আরও বহু মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে ঠেলে দেবে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বর্ধন জং রানা বলেন, অনেক বেশি মানুষকে এখন বাইরে বের হতে হচ্ছে। তাদের জীবিকা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে শারীরিক দূরত্ব রাখার নিয়ম আর কার্যকর করা যাবে বলে মনে হয় না।জীবন-জীবিকার এই সঙ্কটে ধনী দেশগুলো তাদের নাগরিকদের জন্য যে মাত্রায় সহায়তার ব্যবস্থা করতে পারছে, ততটা করার সুযোগ বাংলাদেশের নেই। আর এই বাস্তবতা ভাইরাসের সঙ্গে বসাবাসের এই নতুন জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলবে বলে মনে করেন রানা।
বাংলাদেশ সরকার ৩০ মের পর পুরোমাত্রায় আর লকডাউন না রাখলেও কিছুক্ষেত্রে বিধিনিষেধ এখনও বহাল রয়েছে। আর দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তারও বেড়ে চলেছে, শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ছাড়িয়ে গেছে ৫৫ হাজার।মহামারীর অভিঘাত মোকাবেলায় সরকার আর্থিক প্রণোদনা আর সামাজিক নিরাপত্তায় যে তহবিল ঘোষণা করেছে, তার আকার ইতোমধ্যে এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। টাকার এই অংক বাংলাদেশের জিডিপির ৩ দশমিক ৭ শতাংশের মত।ভাইরাসের ধাক্কা সামাল দিতে সরকারকে ১.৬৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে হচ্ছে, যার মধ্যে ৭৩২ মিলিয়ন ডলার আসবে আইএমএফের কাছ থেকে।