ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী ইনচার্জ আব্দুল খান বলেন, ‘দুপুরে (শনিবার) খবর পাই যে এক নারী হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে পড়ে আছেন, তাকে তার ছেলেরা ফেলে গেছেন করোনা সন্দেহে। পরে নতুন ভবনের সামনের ফুটপাত থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তার প্রচুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। পরে তাকে করোনা ইউনিটের নতুন ভবনের ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডের ১০ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনোয়ারা বেগমের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের জয়রামপুর গ্রামে। তার স্বামীর নাম শাহজাহান মিয়া। পরিবার নিয়ে মিরপুর কমার্স কলেজের পাশে একটি বস্তিতে সালামের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। মনোয়ারার বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, জ্বরের পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল মনোয়ারার। এজন্য বাড়িওয়ালা সালাম তাকে বাড়ি থেকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন। এ পরিস্থিতিতে ছেলে মোজাম্মেল সরকার ও বাড়িওয়ালা সালাম তাকে দুদিন আগে ঢাকা মেডিকেলের নতুন ভবনের সামনে ফেলে যান। এরপর তারা আর কোনো খোঁজ নেননি মনোয়ারার। তবে তিনি ৩ দিন ধরে ঢামেকের সামনের ফুটপাতে ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে পড়ে ছিলেন বলে দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন আশপাশের অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। হাসপাতালের আশপাশে অনেক ভবঘুরে ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ শুয়ে থাকে। প্রথমে মনোয়ারাকে সে রকমই কেউ ভেবেছিলেন অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। তবে এই মর্মান্তিক ঘটনার কথা জানতে পারা মাত্র তারা মনোয়ারাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানোর উদ্যোগ নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী এক অ্যাম্বুলেন্স হেলপার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘২/৩ তিন ধরেই তাকে (মনোয়ারা) নতুন ভবনের সামনে ফুটপাতের আইল্যান্ডের ওপর শুয়ে থাকতে দেখছি। তার জামাকাপড়ও বৃষ্টিতে ভেজা ছিল। হাসপাতালের রোগীর স্বজনদের দেওয়া খাবারই খেতে দেখেছি তাকে। কথাও বলতে পারতেন না তেমন। পাগল ভেবে কেউ কাছেও যেতেন না। আজ শুনতে পেলাম তাকে ছেলেই এখানে ফেলে গেছে।’
ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘ (শনিবার) বেলা ৩টার দিকে মনোয়ারা নামে ওই নারীকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এর আগে এই করোনা ইউনিটের সামনেই তিনি পড়ে ছিলেন বলে জানতে পারছি। তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। এখন এক্সরে ও ইসিজিসহ তার কিছু টেস্ট করানো হচ্ছে। দ্রুতই তার করোনাভাইরাসের টেস্টও করানো হবে।’