জ্যোৎস্না ছড়ানো চাঁদের গল্পে তাজুল ইসলাম
Tweet
পর্যটন বিষয়ক অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘পর্যটনিয়া’ পর্যটন শিল্পের নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরে আসছে নিয়মিত। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যটন বিষয়ে পড়ালেখা করছে এমন অনেক ছাত্র-ছাত্রী যথাযথ তথ্যের অভাবে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে শঙ্কিত। সুতরাং সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পর্যটনের সাবেক ছাত্র-ছাত্রীদের ‘ক্যারিয়ার স্টোরি’ প্রকাশ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্যটনিয়া। পর্যটন বিষয়ে পড়ালেখা করে তাঁদের আজকের অবস্থান একজন ছাত্রকে হয়তো তার নিজস্ব ক্যারিয়ার গড়তে স্বপ্ন দেখাবে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সাহসী করে তুলবে। পর্যটনের সাবেক ছাত্রদের ‘ক্যারিয়ার স্টোরি’ হোক শঙ্কিত ছাত্রদের দিকনির্দেশনা আর সাহসী ছাত্রদের প্রেরণা। আমাদের এই পর্বের আয়োজন জনাব তাজুল ইসলামকে নিয়ে। তিনি উপজেলা কৃষি অফিসার পদে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত আছেন। ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পড়াশোনা করে যারা পর্যটনের বাইরে ক্যারিয়ার গড়তে সক্ষম হয়েছেন তিনি তাঁদের অন্যতম।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে ২০০৮ সালে কৃষি বিষয়ে সম্মান ডিগ্রী অর্জন করেন। প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে এমবিএ পড়া শুরু করেন। দীর্ঘদিন পর নিজ শহরে ফিরে এসে পুরানো বন্ধুদের সাথে আড্ডা আর সান্ধ্যকালীন এমবিএ ক্লাস করে তিনি শিক্ষা জীবনের শুভ সমাপ্তির পথে হাঁটছেন ধীর পায়ে। এমবিএ পড়তে পড়তে তিনি মাত্রই সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন চাকরির দরখাস্ত করা শুরু করেছেন। যদিও মনের মধ্যে সুপ্ত রঙিন আকাঙ্খা, এমবিএ পড়া শেষে তিনি ক্যারিয়ার গড়বেন ফাইভ স্টার হোটেলে।
এরই মধ্যে জনতা ব্যাংকে পরীক্ষার এডমিট কার্ড হাতে এলো। তেমন কোনো প্রস্তুতি ছাড়া পরীক্ষা দিয়েই তিনি এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে টিকে গেলেন। ব্যাংকে চাকরি আর এমবিএ পড়া একসাথে চলছে। ঠিক এই সময়েই জীবনে প্রথমবারের মতো বিসিএস পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়ে যান তাজুল ইসলাম। ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে (২৮ তম বিসিএস) কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পদে বিসিএস কৃষি ক্যাডারে যোগদান করেন। এভাবেই ছাত্রজীবনের সমাপ্তি শেষে বেকারত্বের জোয়াল টানার আগেই তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন।
সঙ্গত কারণেই ক্যাডার সার্ভিসে যোগদান করার পর হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা থেকে সরে আসেন তাজুল ইসলাম। তবে ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যারিয়ার গড়তে না পারলেও ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি বিষয় নিয়ে এমবিএ পড়ে যে জ্ঞান তিনি অর্জন করেছেন তা চাকরির পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণ হতে অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে এমবিএ ভর্তি হওয়ার সময় যে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন যেমন, ক্রিটিক্যাল রিজনিং, অ্যানালাইটিক্যাল অ্যাবিলিটি সেগুলো ব্যাংকের পরীক্ষার সময় অনেক কাজে লেগেছে।
তাজুল ইসলাম বিশ্বাস করেন, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে এমবিএ করার কারণেই তিনি হসপিটালিটি সম্পর্কে বিস্তর ধারণা লাভ করার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি শিখেছেন কিভাবে সুন্দর করে কথা বলতে হয়, মানুষের সামনে সুন্দরভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হয় এমনকি মানুষের সাথে কিভাবে যোগাযোগ স্থাপন ও রক্ষা করতে হয়। উপরোক্ত বিষয়গুলো জানা থাকার জন্যই তিনি চাকরির পরীক্ষাগুলোতে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে এগিয়েছিলেন। এমবিএ পড়াকালীন সময়ে সহপাঠী হিসেবে তিনি যেমন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন উপ-সচিবকে পেয়েছেন তেমনি তাঁর মত একদম ফ্রেশ গ্রাজুয়েটকেও পেয়েছেন যা তাঁর জীবনে একটি মধুর স্মৃতি ও শিক্ষা হয়ে থাকবে। তিনি আরও বিশ্বাস করেন, বর্তমানে একজন বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে তিনি নিজের মধ্যে যতখানি স্মার্টনেস লালন করেন তার একটি বড় অংশই তিনি ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে এমবিএ করার মাধ্যমে পেয়েছেন।
সরকারি চাকরিজীবী বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান তাজুল ইসলাম দক্ষতা ও আতিথিয়েতা দিয়ে কর্মজীবনে চুড়ান্ত সফলতা অর্জন করুক। বাংলাদেশে একদিন কর্পোরেট ট্যুরিজমের মতো এগ্রিকালচারাল ট্যুরিজমও অনেকদূর এগিয়ে যাবে বলে পর্যটনিয়া বিশ্বাস করে। কৃষি পর্যটনের কাঙ্ক্ষিত সেই উত্থান ও পথচলায় তিনি আর তাঁর মতো পর্যটন ও আতিথিয়েতা জ্ঞানসম্পন্ন কৃষি কর্মকর্তাগণ এগিয়ে আসবেন পর্যটনিয়া পরিবার সেই কামনা করে।
২ thoughts on “জ্যোৎস্না ছড়ানো চাঁদের গল্পে তাজুল ইসলাম”
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.
Nice interview . Best of luck
” জ্যোৎস্না ছড়ানো চাঁদের গল্পে তাজুল ইসলাম ” লেখাটি পড়লাম। ভালো লাগলো। সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে একজনের জীবন যাপন কর্মকান্ড তুলে ধরার এ প্রয়াস সত্যি ধন্যবাদ যোগ্য।
এভাবেই প্রতিভার মূল্যায়ন করে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাক এ প্রত্যাশা থাকবে চিরন্তন।