করোনায় এ পর্যন্ত ৪১৭৪ মৃত্যুর অর্ধেকই ঢাকা বিভাগের
Tweet
গত একদিনে দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ২১১ জন। গতকাল শুক্রবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়।সেখানে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত ২ হাজার ২১১ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৬ হাজার ৭৯৪ জন হল।আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৪৭ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ১৭৪ জনে দাঁড়াল, যার মধ্যে ২ হাজার ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে কেবল ঢাকা বিভাগেই।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ, বুধবার তা তিন লাখ পেরিয়ে যায়। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।শুরুতে রাজধানী ঢাকা ও পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জেই এ ভাইরাসের প্রকোপ ছিল বেশি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত হালনাগাদ যে তথ্য আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়ে তাতে দেখা যায়, ঢাকা মহানগরে এ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৭ হাজার ৯১৫ জন। মহানগরের বাইরে ঢাকা জেলার অন্যান্য অংশ এই সংখ্যা ৪ হাজার ৫১৫ জন।আইইডিসিআরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৩ হাজার ৩৭৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩৬ জন হয়েছে।
আর ঢাকা জেলাসহ বিভাগের ১৩ জেলা মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৯ হাজার ২১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছে আইইডিসিআর, যা দেশে মোট শনাক্ত রোগীর প্রায় ৩৯ শতাংশ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৫ অগাস্ট সেই সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৫তম স্থানে। তার মৃতের সংখ্যায় বাংলাদেশ রয়েছে ২৯তম অবস্থানে।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৯২টি ল্যাবে ১৩ হাজার ৭৪১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১৫ লাখ ১৪ হাজার ১২৬টি নমুনা।২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ০৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২৬ শতাংশ । শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৪ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩২ জন, নারী ১৫ জন। তাদের মধ্যে ৪৪ জন হাসপাতালে এবং ৩ জন বাড়িতে মারা গেছেন।তাদের মধ্যে ২৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ৪ জনের বয়স ২১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।২৯ জন ঢাকা বিভাগের, ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৭ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন বরিশাল বিভাগের, ১ জন সিলেট বিভাগের এবং ৪ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৪ হাজার ১৭৪ জনের মধ্যে ৩ হাজার ২৭৪ জনই পুরুষ এবং ৯০০ জন নারী।তাদের মধ্যে ২ হাজার ৫৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১ হাজার ১৫১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৫৫৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২৫৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১০০ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩৬ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৯ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।এর মধ্যে ২ হাজার ১৯ জন ঢাকা বিভাগের, ৯১১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২৭৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩৪৭ জন খুলনা বিভাগের, ১৬০ জন বরিশাল বিভাগের, ১৮৮ জন সিলেট বিভাগের, ১৮১ জন রংপুর বিভাগের এবং ৮৯ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।