রাতে অপর্যাপ্ত ঘুম এবং আলঝেইমার রোগ!

Share on Facebook

আলঝেইমার রোগ (এ ডি) একটি ডিজেনারেটিভ রোগ, যেটি প্রকৃতিগতভাবে অপরিবর্তনীয় ও প্রগতিশীল। এটা একপ্রকারের ডিমেনশিয়া (স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া), একটি যৌথ পরিভাষা যা সেইসমস্ত অবস্থার সাথে জড়িত যা মস্তিস্কের ক্রিয়াকলাপের স্থায়ী হানির সাথে যুক্ত, শেষ পর্যন্ত যার ফলে প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। ভারতবর্ষে ডিমেনশিয়ার শিকার ৪ লক্ষের চেয়ে বেশী। এটি একটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সমস্যা।যারা রাত ১০টায় ঘুমাতে যায় এবং ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ঘুমায় তাদের আলজেইমার রোগের (এডি) ঝুঁকি কম। চীনে এক সমীক্ষায় এ কথা বলা হয়।

ফুদান ইউনিভার্সিটি এবং কুইংদাও ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ৪০ থেকে ৮৮ বছর বয়সের ৭৩৬ জনের ওপর এই সমীক্ষা চালান। গবেষকরা সমীক্ষায় অংশগ্রহনকারীদেও সেরিব্রোস্পাইরাল ফ্লুইডে অ্যামাইলয়েড বিটার স্তর পরিমাপ করেন এবং তাদেও ঘুমের অভ্যাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন।

আলজাইমার অ্যান্ড ডিমেনশিয়া জার্নালে প্রকাশিত গবেষকদের এই রিপোর্টে বলা হয়, তারা দেখেছেন রাতের ঘুমের অভ্যাসের সঙ্গে আলজেইমারের ইউ আকারের ( হ্রাস বৃদ্ধিও সম্পর্ক) সম্পর্ক রয়েছে এবং এতে সেরিব্রোস্পাইরাল ফ্লুইডে অ্যামাইলয়েড বিটার তারতম্য ঘটে।

এতে দেখা যায়, রাতে যারা চার ঘণ্টার কম অথবা ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমায় তাদের অ্যামাইলয়েড বিটার পরিমাণ বেশি থাকে। অন্যদিকে যারা রাত ১০টায় ঘুমাতে যায় এবং ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমায় তাদের অ্যামাইলয়েড বিটার পরিমাণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকে। সমীক্ষায় অংশ নেয়া নারীদের মধ্যে যারা দিনের বেলায় ঘুমানোর কথা বলেছেন, তাদেও ক্ষেত্রে অ্যামাইলয়েড বিটার পরিমাণ বেশী দেখা গেছে।

এই রিপোর্টে বলা হয়,তারা গবেষণায় ঘুমের সঙ্গে আলজেইমারের সম্পর্ক পেয়েছেন।
যুক্তরাজ্যে আনুমানিক সাড়ে ৮ লাখ মানুষ ধরনের সাধারণ ধরনের ডিমেনশিয়ার দ্বারা আক্রান্ত।

সম্প্রতি, একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষকরা বলছেন, নিয়মতান্ত্রিক নিরবচ্ছিন্ন আট ঘণ্টা ঘুম বৃদ্ধ বয়সে আলঝেইমার এড়াতে সহায়ক হতে পারে।বিশেষত, তরুণ এবং মধ্যবয়সীদের ক্ষেত্রে ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ঘুম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি এবং নতুন কিছু শেখার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

প্রতিবেদনে গবেষকরা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, শিশুকাল অথবা তরুণ বয়স থেকেই নিয়মতান্ত্রিক ঘুম বৃদ্ধ বয়সে স্মৃতি শক্তি লোপ পাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।

টেক্সাস বেইলর ইউনিভার্সিটির স্লিপ নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড কগনিশন ল্যাবরেটরির পরিচালক মাইকেল স্কুলিন গত ৫০ বছর ধরে ঘুম সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণা করে আসছেন।তিনি বলেন, মধ্য বয়স থেকে নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করলে এর ফল পাওয়া যাবে ২৮ বছর পরে। কেবল স্মৃতিশক্তিই নয়, সুস্বাস্থ্যের জন্যও ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত ওজন এমনকী ডায়াবেটিসের  কারণেও স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে।

 

Leave a Reply