খোলা শুরু হলো চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্র, দর্শনার্থী বাড়ার আশা
Tweet
করোনা মহামারি সংক্রমণের কারণে পাঁচ মাস বন্ধ থাকা চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হলেও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি তেমন একটা চোখে পড়েনি। তবে আস্তে আস্তে দর্শনার্থী বাড়বে বলে আশা বিনোদন কর্তৃপক্ষের সংগঠনগুলোর আশা। গত ১৯ অগাস্ট চট্টগ্রাম জেলা করোনাভাইরাস বিষয়ক সমন্বয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়। দর্শনার্থীদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধানসহ ১৫টি নির্দেশনা দিয়ে বিনোদন কেন্দ্র খোলার অনুমতি দেওয়া হয়।
দেশে মহামারী করোনভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে গত ১৯ মার্চ থেকে চট্টগ্রামের সব বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা করা হয়। টানা ‘সাধারণ ছুটির’ পর স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সীমিত আকারে অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য এই মাসের শুরুতে ঈদের ছুটির পর স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু হলেও বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র চালু হয়েছে শনিবার।
ফয়’স লেক এমিউজমেন্ট পার্ক পরিচালনাকারী সংস্থা কনকর্ডের উপ-ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) বিশ্বজিৎ ষোষ বলেন, ফয়’স লেক, সী ওয়ার্ল্ড গত ১৯ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল। প্রশাসনের অনুমতির পর শনিবার পার্কের কার্যক্রম চালু হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে জনসমাগম অনেকটা কম।
বেসরকার্ ওয়ান্ডার ল্যান্ড গ্রুপের পরিচালনায় থাকা কাজীর দেউড়ি শিশু পার্কের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনও জানান, শনিবার পার্ক খুললেও সারাদিন বৃষ্টির কারণে দর্শনার্থীর সংখ্যা নগন্য।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে পাঁচ বন্ধ থাকার পর শনিবার চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুললেও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম। ফাইল ছবিকরোনাভাইরাস মহামারীর কারণে পাঁচ বন্ধ থাকার পর শনিবার চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুললেও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম।
পার্ক খুললেও দর্শনার্থী সংখ্যা কম থাকাকে স্বাভাবিক উল্লেখ করে বহদ্দারহাট স্বাধীনতা কমপ্লেক্স পরিচালনাকারী ওয়েল এন্টারপ্রাইজের মহাব্যবস্থাপক মো. আলী জনি বলেন, “পার্ক খুলে দেয়া হলেও জনসমাগম কম হবে এটাই স্বাভাবিক। আগে পরিবার পরিজন নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির লোক জন পার্কে আসতেন। তবে এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য অনেকেই জনসমাগম এড়িয়ে চলবেন। যার কারণে পার্কে আসবে না।”
তবে পার্কে প্রবেশের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা কঠোরভাবে মানার দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ও পার্ক শনিবার থেকে খুললেও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন পরিচালিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা খুলবে রোববার।
চিড়িয়াখানা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, শুক্র ও শনিবার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখান পরিষ্কার করা হয়েছে।শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোববার সকাল থেকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে চিড়িয়াখানা।
দর্শনার্থী প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধানসহ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া ১৫টি নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- পার্কের প্রবেশ পথে জীবাণুমুক্তকরণ ট্যানেল স্থাপন, থার্মাল স্ক্যানারের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা, পার্কে প্রবেশের ক্ষেত্রে দর্শনার্থীদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, প্রবেশপথে নিরাপদ শারীরিক দূরত্বের জন্য এক মিটার পরপর মার্কিং লাইন করা, পার্কে ময়লা ফেলার পাত্র, স্যানিটাইজার অথবা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
এছাড়াও পার্ক খোলার আগে ও পরে এবং মধ্যবর্ত্তী সময়ে বিভিন্ন রাইড, শৌচাগার জীবাণুমুক্ত করতে হবে, দর্শনার্থীরা শৌচাগার ব্যবহারের পর দরজার হাতল, বেসিন জীবাণুমুক্ত করতে হবে, রাইডে দর্শনার্থীদের এক আসন পরপর বসতে দিতে হবে এবং যেসব রাইডে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে না সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে।
প্রবেশপথ এবং রাইডের কাছে তিনজনের বেশি জড়ো করতে দেওয়া যাবে না, স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সব কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা কাপড় পরিধান করে কর্মচারীদের কাজ করতে হবে, বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত বোর্ড, লিফলেট বিতরণ এবং ফুড কর্নারে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করলেও সেখানে বসে খাওয়া-দাওয়া করা যাবে না।
বিনোদন কেন্দ্রগুলো নির্দেশনা মানছে কিনা তা তদারকি করতে একটি দলও গঠন করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ।
ঈদ ও বিভিন্ন সরকারি ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলো দশনার্থীদের ভিড় থাকলেও এবছর দুই ঈদের ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলো ছিল ফাঁকা। তবে বেসরকারি সংস্থার পরিচালনায় বিনোদন কেন্দ্রগুলো শনিবার চালু হলেও পতেঙ্গা, পার্কি, কাট্টলী সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে জনসমাগম ছিল আগে থেকেই।