পনির হল দক্ষিণ এশিয়ায় প্রচলিত ছানা থেকে তৈরি একটি দুগ্ধজাত খাদ্য। সাধারণত ফুটন্ত দুধে লেবুর রস, ভিনেগার অথবা অম্লজাতীয় কোন পদার্থ যোগ করে ছানা তৈরি করা হয় এবং সেই ছানা থেকে পানি বের করে দিয়ে পনির প্রস্তুত করা হয়ে থাকে।
দিনের গুরুত্বপূর্ণ খাবারটা হল সকালের নাস্তা। কারণ, সারারাত প্রায় আট থেকে ১০ ঘণ্টা খাওয়া ও পানি পান করা হয় নি, তাই এসময় শরীরকে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া জরুরি।সকালের নাস্তায় পনিরকে আদর্শ খাবার হিসেবে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পনিরে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। হজম হতে সময় লাগে। পাশাপাশি এতে থাকে ‘জিএলপি-ওয়ান’, ‘পিওয়াইওয়াই’, ‘সিসিকে’ ইত্যাদি হরমোন যা পেট ভরা অনুভূতিকে দীর্ঘায়িত করে, তার মাত্রা বাড়ায় পনির। তাই সকালের নাস্তায় পনির খেলে লম্বা সময় ক্ষুধা লাগবে না।
পুষ্টি উপাদানগুলোর ভালো মিশ্রণ মেলে পনির থেকে। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করছেন তাদের জন্য এটি ভারি হয় না। সকালের নাস্তায় ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম পনির খেতে পারেন।
প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর দুধের পনিরে প্রায় ১.২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেইট থাকে। ক্যালরির হিসেবে করলে ২৮ গ্রাম পনির খাওয়ার পর আপনি গ্রহণ করবেন ৮২.৫ ক্যালরি। তাই ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয় নেই।
দাঁত ও হাড় শক্ত রাখতে শরীরের ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। এই ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে পনির।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে প্রথমেই যে চিন্তা মাথায় আসে তা হল প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা বাড়ানো। আর পনিরে তা যথেষ্ট মাত্রায় থাকে। পেট ভরা রাখে লম্বা সময়, ফলে খাওয়া কমে। যারা শাকাহারি তাদের জন্য পনির আদর্শ খাবার।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য পনির উপকারী। এতে ‘ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড’ মেলে, যা শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য জরুরি।
খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ভারতের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিভাকর’য়ের লেখা ‘উইমেন অ্যান্ড দ্যা ওয়েইট লস তামাশা’ বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ‘পনির ত্বকের জন্য ম্যাজিকের মতো কাজ করে এবং এটা ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।’
বইতে এই পুষ্টিবিদ পরামর্শ দিয়েছেন যে, ‘মধ্যবেলার নাস্তা হতে পারে পনির। যদিও প্রতিদিন খাওয়া উচিত না, তবে দৈনিক অল্প পরিমাণে খেলে ভালো হবে। এমনকি ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে শিশুদের প্রতিদিন পনির খাওয়ানো উচিত।’