লা টমাটিনা বা টমেটো উৎসব!

Share on Facebook

বিশ্বে কত ধরনের খেলাই না রয়েছে। এর মধ্যে টমেটো প্রেমী স্প্যানিশদের অন্যতম প্রাণের উৎসব ‘লা টমাটিনা’। প্রতি বছরের মতো এবারেও আগস্টের ২৯ তারিখে হয়ে গেল টমেটো মাখামাখির উৎসব। এতে হাজারো স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগ দেয় বিদেশী পর্যটকরাও।১৯৪৫ সালের দিকে ঘটনাক্রমে ‘লা টমাটিনা’ লড়াইয়ের প্রচলন শুরু হয়। তবে জেনারেল ফ্রাঙ্কোর সময়ে ১৯৫০ সালে খেলাটি বন্ধ হলেও পর তা আবারও শুরু হয়। সময়ের সাথে সাথে এ উৎসবের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে।

এই টমাটিনা ফেস্টিভালের ইতিহাস অনেক পুরোনো। ১৯৪৪ সালে ভ্যালেন্সিয়ার এই গ্রামটিতে শুরুহয়েছিল ‘লা টমাটিনা’ উৎসব। বলা হয়ে থাকে, টমেটো বোঝাই একটি লরি রাস্তায় কাত হয়ে পড়ে গেলে সেখানে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে ওই টমেটো ছুড়ে মারা শুরু হয়েছিল , আর তা থেকেই জন্ম নেয় এই মজাদার উৎসব্টি। আবার অনেকে বলেন, মাপেটের মিছিলে কোনো এক বাজে গায়ককে উদ্দেশ করে টমেটো ছুড়ে মারা থেকে এই উৎসবের শুরু। এছাড়া কেউ কেউ বলেন, আগে স্পেনে টমেটো পাকার মৌসুমে বাচ্চারা পাকা টমেটো ছোড়াছুড়ি করে খেলাধুলা করতো। কালের বিবর্তনে সেটা রূপ নেয় উৎসবে।

কেবল স্পেনের বাসিন্দারাই নয়, ব্যতিক্রমী এ উৎসবে যোগ দিতে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত পর্যটক এখানে ছুটে আসেন।এই টমেটোর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীরা পরস্পরকে পাকা টমেটো নিয়ে তাড়া করে, নাকে-মুখে পাকা টমেটো লেপটে দেয়। পাকা টমেটোর লাল রসে সবাই একাকার হয়ে যায়। এই উৎসবের দিন পুরো বুনল শহরের রাস্তাগুলো পরিণত হত টমেটোর নদীতে।প্রতি বছর প্রায় ১৫০টনেরও বেশি টমেটো বড় বড় লরিতে করে নিয়ে আসা হয় এই উৎসবের জন্য। পুরো শহরটা টমেটোর রসে ভেসে যায়। এই উৎসব সকালে শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত চলে। উৎসবের শুরুতে বিশাল এক টুকরা মাংস রাখা হয় একটা পিচ্ছিল খাম্বার উপরে। শর্ত থাকে খাম্বা বেয়ে সেটিকে নামিয়ে আনতে হবে। এটা আনার সময় নাচ-গান আর হোস পাইপ দিয়ে চলে থাকে পানিতে ভেজা। মাংসটি নামানো হলে শুরু হয় টমেটোর ছোঁড়াছুড়ি।

ছোট্ট এই বুনল শহরে এই উৎসব উপলক্ষে এতো বেশি মানুষের ভিড় সামাল দেয়া ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রবেশ টিকিটের ব্যবস্থা করেছে নগর কর্তৃপক্ষ। টিকিটের দাম ১০ ইউরো। তবে এটা কেবল অনুমতিপত্র মাত্র। থাকা-খাওয়া আর যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে নিজেকেই। তবে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে আছে ডজন ডজন বেসরকারি টুরিস্ট অর্গেনাইজেশন।

Leave a Reply