সিনহা হত্যার পর থেমেছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’
Tweet
কক্সবাজারে তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর থমকে গেছে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনা। জানুয়ারি থেকে জুলাই এই সাত মাসে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১৮৪ জন; প্রতি মাসে যেখানে ২০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে পরের দুই মাস অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে এভাবে মারা পড়েছেন মাত্র একজন।
গত ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত গোলাগুলিতে প্রাণহানিতে এই পরিবর্তন হয়েছে।
হঠাৎ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ থমকে যাওয়া নিয়ে পুলিশের সাবেক একজন আইজিপি বলেছেন, নানা সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে সন্ত্রাসী-অপরাধীদের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যাওয়ার পক্ষে বলেন, কিন্তু পুলিশ বিপদে পড়লে ‘কেউ পাশে থাকেন না’।
এ থেকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ যে ভালো নয়, সেই উপলব্ধি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়েছে বলেই ধারণা তার।
বাংলাদেশে জঙ্গি-সন্ত্রাসী-মাদক কারবারিদের কথিত এই বন্দুকযুদ্ধে মৃত্যুর ঘটনা চলে আসছে অনেক বছর ধরে। এ নিয়ে দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে এলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময়ই বলে আসছে, বিচার বহির্ভূত হত্যার পক্ষে তারা নন, কেবল আক্রান্ত হলেই গুলি ছোড়েন তারা।
সে রকমই একটি ঘটনায় গত ৩১ জুলাই কোরবানির ঈদের আগের রাতে কক্সবাজারের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র নির্মাণের জন্য তিনি কক্সবাজারে গিয়েছিলেন দুই সঙ্গীকে নিয়ে।
কক্সবাজারের পুলিশ সে সময় বলেছিল, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। কিন্তু পুলিশের দেওয়া ঘটনার বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২ অগাস্ট উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যার’ অভিযোগগুলোও নতুন করে আলোচনায় আসতে শুরু থাকে।