মধুতে ভেজাল রুখতে কেন্দ্রের পদক্ষেপ
Tweet
ভারতে মধু খাওয়ার প্রচলন বহু যুগ থেকে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এর ভূমিকা বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রমাণিত। সেই মধু ঘিরে সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট দেশের মধ্যে হইচই ফেলে দিয়েছে। আর এই ভেজাল-কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছে একাধিক নামজাদা ব্র্যান্ডের নাম। সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট-এর (সিএসই) সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, ৭৭% জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের মধুতেই রয়েছে ভেজাল!
বাজারে বিক্রি হচ্ছে এমনই ১৭ বিভিন্ন বড় ও মাঝারি ব্র্যান্ডের ২২টি নমুনা পরীক্ষা করে সিএসই দেখতে পেয়েছে, ১৭টি ব্র্যান্ডের বা ৭৭% মধুতেই চিনির সিরাপ ভেজাল দেওয়া হয়েছে! সিএসই তার রিপোর্টে জানিয়েছিল, ‘মধুর বিশুদ্ধতা নির্ধারণের জন্য প্রাথমিক সি৪ সুগার টেস্ট (চিনির ভেজালের প্রাথমিক পরীক্ষা) সবক’টি বড় ব্র্যান্ডের নমুনা উত্তীর্ণ হতে পারলেও তারা এনএমআর টেস্ট (আন্তর্জাতিক স্তরে বর্তমানে এই ল্যাবরেটরি পদ্ধতিতে মডিফায়েড সুগার সিরাপ টেস্ট করা হয়) পাশ করতে পারেনি।’ ডাবর, পতঞ্জলি, বৈদ্যনাথ, হিটকারি, এপিস হিমালয়াজ-এর মতো অভিযুক্ত সংস্থা মধুতে ভেজাল মেশানোর অভিযোগ অবশ্য খারিজ করে দিয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। মধুর শুদ্ধতা বজায় রাখতে পদক্ষেপ করা হয়েছে।
সিএসই রিপোর্টে জানা গিয়েছিল, বেশি মুনাফার জন্য মধুতে ফ্রুকটোজ সিরাপ মেশাচ্ছে এদেশের বিভিন্ন নামজাদা কোম্পানি। এই ধরনের সুগার সিরাপ এমনভাবে বানানো হয় যে তা সাধারণ পরীক্ষায় সনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। এমনকী মধুর সঙ্গে তা ৫০-৮০% মেশালেও ওই ভেজাল সি৩ এবং সি৪ টেস্টে ধরা যায় না। একমাত্র এনএমআর (নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেসোন্যান্স) পরীক্ষায় ভেজাল ধরা পড়ে।
আর এই সুগার সিরাপ ভারতে আমদানি করা হয় চিন থেকে। সীমাশুল্ক দফতরের চোখে ধুলো দিতে রঙের পিগমেন্ট হিসাবে এটি আমদানি করা হয় বলে সিএসই-এর তদন্তে উঠে এসেছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে নড়চড়ে বসেছে কেন্দ্র। এবার চিন থেকে সুগার সিরাপ আমদানি নিষিদ্ধ করার কথা চিন্তাভাবনা করছে বাণিজ্য মন্ত্রক। চিনা সুগার সিরাপ আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করা গেলে ভারতে মধুতে ভেজাল দুর্নীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত আধিকারিকদের বক্তব্য।