প্রিয়জনের উপর লুকিয়ে নজর রাখেন অনেকেই
Tweet
উদ্দেশ্য সবসময় খারাপ নয়। কেউ আবার করেন নজরদারি।
ইন্টারনেট আর প্রযুক্তির এই যুগকে যারা আপন করে নিয়েছেন তাদের কাছে নিজেদের অনলাইন পরিচয়টা এতই গুরুত্বপূর্ণ যে তা বাড়িয়ে বলা যেন প্রায় অসম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দুই হাজার মানুষের ওপর জরিপ করার পর ‘স্কয়্যারস্পেস’ নামক ওয়েবসাইট নির্মানকারী প্রতিষ্ঠানের দাবি, “বর্তমান প্রজন্মের কাছে ব্যক্তিগত জীবনের চাইতে ইন্টারনেট জগতের ঘটনা বেশি গুরুত্ব বহন করে।”
বেস্টলাইফ ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানের উদ্ধৃতি দিয়ে আরও জানানো হয়, “৪০ বছরের কম বয়সি প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন ব্যক্তিগত জীবনে তারা নিজেকে যেভাবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করেন তার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ‘অনলাইন প্ল্যাটফর্ম’গুলো তারা নিজেকে কীভাবে উপস্থাপন করছেন।”
অনেকের কাছেই যখন ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ তখন মানুষের মাঝে অস্বাভাবিক কিছু আচরণ দেখা যায়। আর বাস্তব জীবনে যে এর প্রভাব পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই, বিশেষত, প্রেম ও বৈবাহিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
সঙ্গীর উপর অনলাইন নজরদারি
যে মানুষটা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ, সেই মানুষটার কাছে যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ হয়, তবে তার খোঁজখবর রাখতে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘অ্যাকাউন্ট’গুলোতে চোখ রাখাটা অস্বাভাবিক মনে হয় না।
তবে এই আচরণের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে সঙ্গীর প্রতি একটা সন্দেহভাজন দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টাও আবার উড়িয়ে দেওয়া যায়না।
‘স্কয়্যারস্পেস’য়ের জরিপ বলছে, “প্রায় ৩২ শতাংশ মধ্যবয়সি মানুষ স্বীকার করেন যে তারা সপ্তাহে অন্তত একবার তাদের প্রেমিক/প্রেমিকা কিংবা স্বামী/স্ত্রীর ‘প্রোফাইল’ ঘুরে দেখেন।”
তরুণ প্রজন্মের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটা প্রায় ৫১ শতাংশ, আর ‘মিলেনিয়াল’য়ের ৫৫ শতাংশ। আর এই দুই দল কাজটি প্রায় প্রতিদিনই করেন।
সম্ভাব্য সম্পর্কের আগেই কারও অনলাইন উপস্থিতি বিচার করা
বর্তমান, প্রাক্তন কিংবা ভবিষ্যত প্রেমিক কিংবা প্রেমিকাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো খুঁজে বের করা এবং বিচার করা অভ্যাসটা গড়ে ওঠার পেছনে একটা বড় কারণ হল, আজকাল এই মাধ্যমগুলো থেকেই অসংখ্য সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মুখোমুখি সাক্ষাতের আগেই একটা সম্পর্কে সূচনা হয়।
জরিপ বলছে, “বর্তমান প্রজন্মের ৮৬ শতাংশ আর ‘মিলেনিয়াল’দের ৭৯ শতাংশ নতুন কারও সঙ্গে দেখা করা আগে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘প্রোফাইল’ ঘুরে দেখেন। তবে পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে এই প্রবণতা আশ্চর্যজনকভাবে কম।”
উদ্দেশ্য সবসময় খারাপ নয়
নতুন কারও সঙ্গে সাক্ষাতের সময় আলাপের খোরাক যোগায় একে অপরের ‘প্রোফাইল’ থেকে নেওয়া তথ্যগুলো। একে অপরের পছন্দ, জীবনযাত্রা, আগ্রহের বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা পাওয়া।
ফলে ‘প্রোফাইল’ ঘেটে দেখার ব্যাপারটাকে সবাই খারাপ দৃষ্টিতে দেখেন না। তবে একটা সম্পর্ক যখন স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছে গেছে তখন এই অভ্যাসটা থাকা উচিত নয়।
‘ম্যাশেবল’য়ের জরিপ বলছে, “প্রায় সবাই স্বীকার করেন যে প্রেম কিংবা বিবাহ, যে সম্পর্কই হোক না কেনো, একটা নির্দিষ্ট সময় পর সম্পর্ক যখন পূর্ণতা পায়, তখন একে অপরের ‘প্রোফাইল’য়ের ওপর নজরদারিটা সুস্থ বিষয় নয়।
কারণ সম্পর্ক যখন পরিপূর্ণ তখন ওই মানুষটাকে জানতে কিংবা চিনতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর ভরসা করার প্রয়োজনীয়তা থাকা অনুচিত।
আবার আপনার সঙ্গী যখন আপনার ‘প্রোফাইল’ দেখছে তখন সেটা উচ্চবাচ্য করাও ঠিক হবে না।
একজন ব্যক্তির ‘পাবলিক প্রোফাইল’ ওই প্লাটফর্মের সবার জন্য উন্মুক্ত, অর্থাৎ সকলের দেখার জন্যই তা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।