বিসিবি সভাপতির কথাও রাখেননি মাহমুদউল্লাহ
Tweet
পরশু রাত পর্যন্তও টিম ম্যানেজমেন্টের ধারনা ছিল, মাহমুদউল্লাহর অবসর নিয়ে অন্তত এই সফরে আর কিছু হচ্ছে না। কিন্তু আজ সকাল থেকেই দলের বাতাসটা একটু ভারী। ফিসফাস ছড়িয়ে পড়ে আজই টেস্ট ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহর শেষ দিন হতে চলেছে। মাহমুদউল্লাহ নাকি তাঁর সিদ্ধান্তের কথা শেষ পর্যন্ত বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকেও জানিয়েছেন। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা। এরপর তো সতীর্থদের বিদায়ী ‘গার্ড অব অনার’ নিয়েই মাঠে নামলেন তিনি!
কিন্তু আজ হারারে থেকে যোগাযোগ করা হলে এই প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘কাল রাত বাংলাদেশ সময় সাড়ে ১১টার দিকে ও (মাহমুদউল্লাহ) আমাকে একটা টেক্সট (খুদে বার্তা) পাঠিয়েছে। তাতে সে লিখেছে সে অবসর নিতে চায়। এ ব্যাপারে আমার অনুমতি চাচ্ছে। কিন্তু আমি তাকে কোনো রিপ্লাই দিইনি। এরপর তো আজ সকালে টিভিতে দেখলাম সে গার্ড অব অনার নিচ্ছে!’
অবসর নিয়ে নাজমুল হাসানের সঙ্গে এর আগেও কথা বলেছেন মাহমুদউল্লাহ। টেস্টের তৃতীয় দিন রাতে, যেদিন তিনি ড্রেসিংরুমে সবাইকে বলেন, হারার টেস্টের পর আর তিনি টেস্ট খেলবেন না। সেটি প্রথমে দলের অন্যদের কাছে শোনেন বোর্ড সভাপতি। পরে অনেক রাতে মাহমুদউল্লাহই ফোন দেন তাঁকে।
তা সে রাতে মাহমুদউল্লাহর কী কথা হয়েছিল বিসিবি সভাপতির সঙ্গে? নাজমুল হাসান জানান, ‘ও আমাকে বলেছে সে আর টেস্ট খেলতে চায় না। এই টেস্টের পর টেস্ট থেকে অবসর নিতে চায়। আমি তাকে বলি, “সেটা এভাবে কেন? তুমি আগে ওয়ানডে, টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলে দেশে আস। আমরা কথা বলি। প্রয়োজনে তুমি দেশে এসে ঘোষণা দাও। লাগলে আমরা তোমার জন্য একটা বিদায়ী টেস্টের আয়োজন করব।” কিন্তু সে তো আমার কথা শুনল না!’
বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, টেস্টের মধ্যে ড্রেসিংরুমে অবসরের সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য মাহমুদউল্লাহ তাঁর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কেন তিনি হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নিলেন, সে ব্যাপারে বোর্ড সভাপতিকেও নাকি কিছু বলেননি। ‘ওকে আমি জিজ্ঞেস করেছি, “রাগটা কার ওপর? কেন হঠাৎ এটা করতে গেলে? তুমি তো লিখিত দিয়ে গেছ টেস্ট খেলবে!” সে আমার কোনো কথারই জবাব দেয়নি’, বলেছেন নাজমুল হাসান।
কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে, হয়তো কোচের ওপর রাগ থেকেই এমন সিদ্ধান্ত তাঁর। কিন্তু বিসিবি সভাপতি একমত নন এ কথার সঙ্গেও, ‘এটা ঠিক নয়। কোচ কিন্তু কখনোই বলেনি মাহমুদউল্লাহকে টেস্টে খেলাবে না। মাঝে মাহমুদউল্লাহ ইনজুরিতে ছিল। এরপর শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগেও তাকে টেস্ট দলে নেওয়ার আলোচনা ছিল। মাহমুদউল্লাহই তখন বলেছিল ও টেস্ট খেলবে না।’
সিরিজের মধ্যে মাহমুদউল্লাহর হঠাৎ অবসরের সিদ্ধান্তের পর বিসিবি সভাপতি এখন দলের অন্য সিনিয়র খেলোয়াড়দের নিয়েও চিন্তায় আছেন, ‘এ রকম আরও হতে পারে সামনে। অন্য সিনিয়র খেলোয়াড়েরাও এ রকম করতে পারে। হঠাৎ একটা খেলার আগে বা খেলার মধ্যে বলে দিতে পারে, আমি খেলব না। এ জন্যই আমরা ওদের কাছ থেকে লিখিত নিয়েছি কে কোন ফরম্যাটে খেলতে চায়। তবু তারা এ রকম করতে পারে। কিন্তু এভাবে চলতে পারে না। সিরিজটা শেষ হোক। এসব ব্যাপারে আমরা কঠিন পদক্ষেপ নেব।