সবকিছুই ১১ সংখ্যার ব্যাতিক্রম শহর, ঘড়িতেও নেই ১২টার কাঁটা
Tweet
সুইজারল্যান্ডের সৌন্দর্য সবাইকেই মুগ্ধ করে। এ কারণে বিশ্ববাসীরা সুন্দর এই দেশে যাওয়া স্বপ্ন বুনেন। প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক ভিড় জমান সুইজারল্যান্ডে। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে নয় সব বিচারেই দেশ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পেয়েছে ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটি।
সুইজারল্যান্ডের আয়তনের ৭০ শতাংশ ঘিরে রয়েছে আল্পস পর্বতমালা। সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে উঁচু পর্বতের নাম মন্টি রোজা। সুইজারল্যান্ডে বার্নের পুরাতন শহর, সাধু গলের মঠ এবং মন্টি স্যান জিওরজিও সহ ১১টি ইউনেস্কো ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের উত্তর পশ্চিম প্রান্তের এক শহরের নাম সোলোথার্ন। পর্যটকরা এই শহরে ঢুকেই থমকে যান টাউন স্কয়ারের সামনে থাকা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে। কারণ সোলোর্থান শহরের মূল কেন্দ্রেই দেখা মিলবে রহস্যময় এক ঘড়ির।
যা অন্যান্য ঘড়ি থেকে ভিন্ন। সাধারণত সব ঘড়িতে এক থেকে ১২টার কাঁটা থাকে। তবে সোলোর্থানের এই রহস্যময় ঘড়িতে আছে শুধু ১১টি কাঁটা। সেই হিসাবে এ শহরের ঘড়িতে কখনও বাজে না ১২টা। তবে ১২টার কাঁটা নেই কেন?
জানলে অবাক হবেন, শুধু এ শহরের ঘড়ি নয়, অনেক কিছুতেই ১১ সংখ্যার নিদর্শন পাওয়া যায়। যেমন- এ শহরে আছে ১১টি জাদুঘর, ১১টি গির্জা, ১১টি ঝর্ণাসহ আরও অনেক কিছু। তবে ১১তেই কেন সবকিছু সীমাবদ্ধ হয়ে আছে শহরটি?
ইতিহাস অনুযায়ী, একাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে এই নগরীতে ইলভ নামে এক জার্মান আসেন। যিনি এই নগর প্রতিষ্ঠা করেন। তার অবদানের জন্য ইলভ সোলোথার্নবাসীর সমর্থন পেয়েছিলেন। এ কারণে ইলভের নামের সঙ্গে মিলিয়ে ইলেভেন সংখ্যায় বিভিন্ন নিদর্শন তৈরি করা হয়।
সেই থেকে এই ধারা চলমান আছে। শুধু ইলভের ঘটনাই নয় ১১ সংখ্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেক ঘটনা আছে সোলোর্থানে। ১২১৫ সালে যখন এই শহরে কাউন্সিলর নির্বাচন হয় তখন ১১ জনকে নির্বাচন করা হয়েছিল।
১৪৮১ সালে সোলোথার্ন কে সুইস কনফেডারেশনের ১১ তম প্রদেশ হিসেবে যুক্ত করা হয়। ওই সময় ১১ জনক শহরের রক্ষাকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। এরপর ১৫ শতকের শুরুতে সেইন্ট আরসু গির্জা নির্মাণ করা হয়।
এ গির্জায় ছিল ১১টি দরজা, ১১টি জানালা, ১১টি রো, ১১টি ঘণ্টাসহ ১১ ধরনের পাথরের ব্যবহার। এসব কারণেই সোলোর্থান শহরের সঙ্গে ১১ সংখ্যার সম্পৃক্ততা ৫০০ বছর ধরে। তাইতো এ শহরবাসীর মনে ১১ সংখ্যার প্রতি বিশেষ দুর্বলতা আছে।