অবসর উপভোগে ঢালিস আম্বার নিবাস রিসোর্ট
Tweet
পরিবার নিয়ে ছুটির দিন কাটাতে চান? সবুজ ও সুন্দরের সঙ্গে শালীনভাবে এক বিকেল কাটিয়ে দিতে চান? চান পরিবারে নিয়ে লেক পাড়ে জ্যোস্না উপভোগ করতে? একটু গ্রামীণ পরিবেশে থেকে সুর্যোদয়-সুর্যাস্ত উপভোগ করতে চান?
তাহলে চলে আসুন, ঢালিস আম্বাস নিবাস রিসোর্টে। গ্রামের পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে আধুনিক ও বিলাসবহুল রিসোর্ট করা হয়েছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে। সিরাজদিখানের বাহেরকুচি, ইছাপুরা এলাকায় ঘন অরণ্যঘেরা এই রিসোর্ট যেকারো গ্রামের তৃষ্ণা মেটাবে। বিভিন্ন পাখির কলতান, কোকিলের কুহুকুহু গান, আর বউ কথা কওসহ নানা শব্দ ঘুম ভাঙ্গাবে।
শুধু ব্যক্তি বা পরিবার নয়, এখানে অন্তত ১০/২০ হাজার মানুষ নিয়ে অনায়াসে করতে পারেন ফ্যামিলি ডে বা পিকনিক। ১০০ বিঘা জমির ওপরে গড়ে ওঠা এই রিসোর্টের রয়েছে- দুটো বড় মাঠ ও স্টেজ, স্বচ্ছ পানির বিশাল সুইমিংপুল ও অ্যাক্টিভিটিজ, ভেতরে পরিপাটি সড়ক ও নানা কারুকার্য, নীল কাঠের তৈরি পুল আর ঝুলন্ত সেতু এবং বিশাল লেক। আছে পুকুর ও ঘাট। সেখানে নৌকায় চড়ার সুব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
২৫০ টাকায় টিকিট কেটে আপনি উপভোগ করতে পারেন এই রিসোর্টের সৌন্দর্য। অথবা এর রিসোর্টে থাকা ৯৯টি কক্ষের মধ্যে রাত কাটাতে পারেন। এখানে প্রতিটি কক্ষের জন্য আপনাকে গুনতে হবে ৮ হাজার থেকে ৪৫ হাজার ৯৯০ টাকা।
বিশাল আয়াতনের এই রিসোর্টটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। রিসোর্টের ভেতরে এখনো অনেক স্থাপনার নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। তকে প্রকৃতিপ্রেমীদের কমতি নেই এই রিসোর্টে।
ঢালিস আম্বার নিবাস রিসোর্টের প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করি মানুষ যাতে এখানে এসে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। পরিবার নিয়ে ঘোরার একটাই রিসোর্ট বাংলাদেশের মধ্যে, সেটা ঢালিস আম্বার নিবাস।
তিনি বলেন, এখানে পুরুষদের জন্য আলাদা, নারীদের জন্য আলদা সুইমিংপুলের ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে কোনো ড্রিংকসের অনুমতি নেই। নাচগান-উন্মাদনার কোনো অনুমতি নেই। আমরা একটা কনভেনশন হল বানাচ্ছি, যেখানে ফুটবল-ক্রিক্রেট খেলা যায়। এখানকার কনভেনশন সেন্টারে একসময় ৬ হাজার লোক বসে খেতে পারবে। ১০ হাজার লোকের প্রোগ্রাম অনায়াসে করতে পারবেন। ৩ হাজার গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থা করছি। ১০০ বাস এখানে একসঙ্গে রাখতে পারবে।
প্রতিষ্ঠাতা বলেন, রিসোর্টের ফুড আইটেম আমি নিজে তত্ত্বাবধান করি। শতভাগ নিরাপদ খাবার পরিবেশন করি। সব সময় বাইরের তেল ব্যবহার করি। যে খাবারগুলো এখানে রান্না হয়, আমি সবার সঙ্গে বসে একই খাবার খাই। এ জন্য খাই, টেস্টটা যাতে নষ্ট না হয়।
জানা গেছে, এখানে দিনব্যাপী অবস্থানের সময় রয়েছে ডে লং প্যাকেজ। যেখানে থাকছে এন্ট্রি, সুইমিংপুল ও বাফেট লাঞ্চ। এ জন্য গুনতে হবে জনপ্রতি ১ হাজার ৮৫০ টাকা। এ ছাড়া উইন্টার স্পেশাল প্যাকেজে থাকছে বাফেট ব্রেকফাস্ট, বাফেট লাঞ্চ ও ইভনিং স্ন্যাকস। এ জন্য গুনতে হবে জনপ্রতি ২ হাজার ৩৫০ টাকা। এতে ইনক্লুড থাকবে না। তবে সুইমিংপুল ইনক্লুড করলে আপনি পাবেন ১০০ টাকা ছাড়। সুইমিং সুপার ডিল অফারে মাত্র ৮০০ টাকায় ব্যবহার করতে পারবেন সুইমিংপুল।
‘নাইট স্টে’ প্যাকেজে থাকছে এন্ট্রি, পার্কিং, সুইমিংপুল, মর্নিং ব্রেকফাস্ট, ওয়াই-ফাই এবং রুম সার্ভিস। এই রিসোর্টে রয়েছে মোট ৯৯টি কক্ষ। এর যেকোনো কক্ষে আপনি রাত যাপন করতে পারেন।
বিভিন্ন কক্ষের প্রতি রাতে ভাড়া
• কটেজ: প্রতি রাত ৮ হাজার টাকা। কক্ষ ৪টি।
• ডিল্যাক্স: প্রতি রাত ১০ হাজার টাকা। কক্ষ ২০টি।
• সুপার ডিল্যাক্স: প্রতি রাত ১২ হাজার টাকা। কক্ষ ২০টি।
• ঢালিস এক্সক্লুসিভ: প্রতি রাত ১৪ হাজার। কক্ষ ২০টি।
• ফ্যামিলি কটেজ: প্রতি রাত ২৪ হাজার টাকা। তবে যদি ওই কটেজের একটি রুম নিতে চান, সে ক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে ৮ হাজার টাকা।
• ওয়াটার লিলি সুপ্রিম: প্রতি রাত ১২ হাজার টাকা। কক্ষ ৫টি।
• ওয়াটার লিলি প্রিমিয়াম: প্রতি রাত ১৬ হাজার টাকা। কক্ষ ২টি।
• ওয়াটার লিলি সুইট: প্রতি রাত ২২ হাজার টাকা। কক্ষ ২টি।
• লুটাস: প্রতি রাত ১৬ হাজার টাকা। কক্ষ ৮টি।
• ডান অ্যাপার্টমেন্ট: প্রতি রাত ৪৫ হাজার ৯৯০ টাকা। কক্ষ ১টি।
• লেইক ভিউ: প্রতি রাত ১৬ হাজার টাকা। কক্ষ ৮টি।
• ফিল্ড ভিউ: প্রতি রাত ১২ হাজার টাকা। কক্ষ ৬টি।
মোট ৯৯টি রুম রয়েছে ঢালিস আম্বার নিবাসে। এ ছাড়া রয়েছে কার পার্কিং, কায়াকিং, বিশাল সুইমিংপুল, ট্রি হাউস, রেস্তোরাঁ, কিডস জোন, ললে, পিকনিক, করপোরেট প্রোগ্রাম বা ফ্যামিলি প্রোগ্রাম করার সুযোগ। আছে হ্যালিপ্যাড, খেলার মাঠ, ক্যানটিন ইত্যাদি।
যেভাবে যাওয়া যাবে
রাজধানী থেকে মাত্র ৫০ মিনিট দূরে মুন্সিগঞ্জের বাহারকুচি, ইছাপুরা রোডে অবস্থিত। গুলিস্তান থেকে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলী নেমে কিংবা শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে নেমে সিএনজি অটোরিবশা করে বাহেরকচি নামলেই পেয়ে যাবেন ঢালিস আম্বার নিবাস।