টাকার মান তলানিতে, ভারতে বাংলাদেশি পর্যটকদের ভোগান্তি
Tweet
টাকার মান কমে যাওয়ায় ভারতে চিকিৎসার জন্য কিংবা বেড়াতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন বাংলাদেশিরা। গত এক মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশি টাকার মান কমেছে গড়ে ১৫ থেকে ১৮ টাকা হারে।
একমাস আগে যেখানে ১০০ টাকায় ভারতে মিলত ৮৪ থেকে ৮৫ রুপি, সেখানে এখন ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৬৯ রুপি। তবে কোনো বাংলাদেশি যদি বাংলাদেশের ১০০০ টাকার নোট দিতে পারেন সেক্ষেত্রে হাজারে মিলছে ৭১০ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশি ১০০ টাকায় মিলছে ভারতের ৭১ রুপি।
কলকাতার নিউমার্কেট এলাকার বিভিন্ন মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সেগুলো প্রায় ফাঁকা। বাংলাদেশি টাকার বিনিময়ে ভারতীয় রুপি মিলছে খুব কম সংখ্যক মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র থেকেই। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, তারাও ব্যাংক থেকে বাংলাদেশি টাকার বিনিময়মূল্য কম পাচ্ছেন।
তবে কলকাতার বেশ কয়েকটি ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারিভাবে বাংলাদেশি ১০০ টাকায় ৮৩ রুপি পাওয়া যাচ্ছে। যদিও অধিকাংশ বাংলাদেশি পর্যটকই স্থানীয় বিভিন্ন মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র থেকে টাকার বিনিময় করেন।
তবে কোনো বাংলাদেশি পর্যটক বৈধভাবে ভারতে বাংলাদেশি টাকা নিয়ে যেতে পারেন না। ফলে অনেকেই অবৈধভাবে বাংলাদেশি টাকা নিয়ে আসেন, যার সুযোগ নিচ্ছেন ভারতীয় মুদ্রা বিনিময়কারীরা।
কলকাতার নিউমার্কেট এলাকায় কমবেশি শতাধিক মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র রয়েছে। বেশ কয়েকটি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র ঘুরে জানা গেল, এই টাকাগুলো তারাও অবৈধভাবেই ক্রয় করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মুদ্রা ব্যবসায়ী সময় সংবাদকে বলেন, বাংলাদেশি পর্যটকরা বৈধভাবে ডলার নিয়ে আসতে পারেন। এখানে এক ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮০ রুপি ৫০ পয়সায়। যারা বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে আসেন তাদের অনেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশি টাকা নিয়ে আসেন। ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজস করে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছেন বলেও জানান অনেকে।
বাংলাদেশি পর্যটকরা বলছেন, বাংলাদেশেও ডলারের দাম অনেক বেড়েছে। চিকিৎসার জন্য তাই বাংলাদেশি টাকা নিয়ে আসেন অনেকে। আর সেই টাকা ভাঙানোর সময় পড়তে হচ্ছে বিপদে।
এদিকে টাকার মান কমে যাওয়ায় ভারতে হঠাৎ করে কমে গেছে বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যাও। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশনির্ভর পর্যটন এলাকাগুলোতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার নিউমার্কেট এলাকায়।
শ্যামলী পরিবহনের একজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশি টাকার মান আচমকা পড়ে যাওয়ায় গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশি পর্যটকদের আসা-যাওয়া প্রায় থমকে গেছে। কলকাতা থেকে এখন ৪০ সিটের একটি শ্যামলী বাস মাত্র ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে।