‘হাওয়া’ সিনেমার বিরুদ্ধে বন বিভাগের মামলার আবেদন
Tweet
শালিক পাখি খাঁচায় বন্দি করে রাখা এবং মাংস খাওয়ার দৃশ্য সিনেমাটিতে দেখানোয় বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
‘হাওয়া’ সিনেমায় বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে আগেই অভিযোগ তুলেছিল বন বিভাগ; এবার আদালতেই গেল।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বুধবার ঢাকার আদালতে মামলার আবেদন করেছে।
এজাহারের আসামি হাওয়া’র পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন বলেছেন, তিনি এখনও মামলার খবরটি জানেন না। তবে তিনি আইনি পথেই হাঁটবেন।
গত ২৯ জুলাই দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে মুক্তি পায় ‘হাওয়া’। দীর্ঘদিন পর দেশে চলচ্চিত্র অঙ্গনে সাড়া ফেলে সিনেমাটি। তবে সিনেমায় বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও ওঠে।
শালিক পাখিকে খাঁচায় বন্দি রাখা, মেরে খাওয়া কিংবা শাপলা পাতা মাছ ধরার দৃশ্যগুলো আইন লঙ্ঘনের নজির বলে প্রাণী অধিকারকর্মীরা অভিযোগ তুললে সিনেমাটি দেখার সিদ্ধান্ত নেয় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তদন্তের স্বার্থে আমরা বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের চার কর্মকর্তা সিনেমাটি দেখেছি। সিনেমাটিতে বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে। একটি ভাত শালিককে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়, যা দেখে দর্শকদের মাঝে বন্যপ্রাণী বিষয়ে ভুল বার্তা যাবে। যা পরোক্ষভাবে আইনের লঙ্ঘন।”
“সে অনুযায়ী আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেই। তদন্তের উপর ভিত্তি করে বুধবার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ধারা ৩৮-১, ৩৮-২, ৪০ ও ৪৬ ধারায় মামলা হয়েছে।”
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসীম কুমার মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার ডকেট দাখিল করেছি। এখনও কোনো আদেশ পাইনি।”
তিনি জানান, বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নারগিস সুলতানা বাদী হয়ে এই এজাহার দায়ের করেন।
অপরাধ প্রমাণিত হলে কী ধরনের শাস্তি হতে পারে- জানতে চাইলে রথীন্দ্র কুমার বলেন, “শাস্তির বিষয়টা আদালত দেখবে। তবে আইনে বলা আছে, বন্যপ্রাণীকে খাঁচায় লালন পালন বা নিজের দখলে রাখলে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা ও দুই বছরের জেল হতে পারে।”
এর আগে সুমন দাবি করেছিলেন, সিনেমায় সত্যিকারের কোনো বন্যপ্রাণীকে মারা হয়নি। তিনি বলেছিলেন, “এটা একটা ফিকশনাল ওয়ার্ক। এখানে কোনো বন্যপ্রাণী হত্যা করা হয়নি। দৃশ্যায়নের প্রয়োজনে এখানে বিকল্প ব্যবহার করা হয়েছে।”
মামলার পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সুমন বুধবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার বিষয়টিই জানতাম না। আপনি ফোন দেওয়াতে জানতে পারলাম। মামলার কাগজ হাতে পেলে তারপর দেখব কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়।”
মামলা তো হয়েছে, এখন কী করবেন- প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি তো দুর্বল মানুষ। সবাইকে নিয়েই মামলায় লড়তে হবে।”