কিছু অদ্ভুত, রহস্যময় আর বিরল মানসিক রোগ
Tweet
চারজনে একজন মানুষ মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত। বিভিন্ন ধরণের মানসিক বা আচরণগত সমস্যা তাদের মধ্যে দেখা যায়। কিছু অদ্ভুত, রহস্যময় আর বিরল মানসিক রোগ আছে পৃথিবীতে, যেগুলোর কথা আমাদের বেশিরভাগ মানুষেরই অজানা। এমন কিছু মানসিক ব্যাধির কথা, চলুন জেনে আসি-
ফ্রেঞ্চ লেখক ভিক্টোর হুগোর কন্যা অ্যাডেল হুগোর নামানুসারে এই রোগের নাম অ্যাডেল সিনড্রোম। অ্যাডেল সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। সিজোফ্রেনিয়ার কারণেই কিনা, তার নতুন ধরণের এক আসক্তি দেখা দেয়। সে একজন ব্রিটিশ মিলিটারি অফিসারের প্রেমে এতটাই আসক্ত হয়ে পরে যে মিলিটারি অফিসারটি তাকে প্রত্যাখ্যান করলে সে পাগলপ্রায় হয়ে যায়। এই রোগের পরিণতি হিসেবে সেই মিলিটারি অফিসারটি অন্য একজনকে বিয়ে করলে শেষ পর্যন্ত অ্যাডেলের ঠাঁই হয় পাগলাগারদে।
প্রেম নিয়ে এই ভয়াবহ আসক্তি যে একধরণের অসুস্থতা তা অনেকেই মানতে চায় না। কিন্তু সাইক্রিয়াটিস্টরা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখেছেন যে, এ আসক্তি তামাক, অ্যালকোহল বা ক্রেপটোম্যানিয়া আসক্তির মতই ভয়াবহ যা রোগীর শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে। এ ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বিষন্নতায় ভুগতে থাকে। তারা নিজেই নিজেকে নানাভাবে কষ্ট দিতে থাকে, অবাস্তব আশায় বুক বাঁধে, নিজেই নিজেকে বিভিন্নভাবে ধোঁকা দিতে থাকে, কারো কোন উপদেশ মানতে চায়না, বেপরোয়া আচরণ করতে থাকে, কারো সাথে মিশতে চায়না এবং ভালবাসার মানুষটি ছাড়া পৃথিবীর যাবতীয় ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
’দ্য স্টোরি অব অ্যাডেল এইচ’ নামক সিনেমায় এ রোগটি উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, ভারতীয় একটা সিনেমা আছে “পেয়ার তুনে কিয়্যা কিয়া”। উর্মিলা মার্তন্ডোকার সে সিনেমায় অ্যাডেল সিনড্রোমে আক্রান্ত একজন রোগীর চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন।
কুয়াসিমোডো সিনড্রোম (Quasimodo syndrome)
ব্যক্তির আচরণ বিভিন্নভাগে ভাগ হয়ে যায়। মানে একই ব্যক্তির আচরণে বিভিন্ন ধরণের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। “একই শরীরে বিভিন্ন মানুষের বাস”- এভাবেও ব্যাপারটাকে ব্যাখ্যা করা যায়। একব্যক্তির শরীরেই সেই আলাদা মানুষগুলো বয়স, লিঙ্গ, জাতীয়তা, মানসিক অবস্থা, মেজাজ-মর্জি, দুনিয়াকে দেখার দৃষ্টি প্রভৃতি ক্ষেত্রে সর্ম্পূর্ণ আলাদা হয়ে থাকে। শিশুকালে ভয়ানক শারীরিক ও মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যাওয়ার কারণে নিজেকে রক্ষার তাগিদে শিশুদের মধ্যে এ রোগ বেড়ে উঠতে পারে। এ রোগের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি জানা যায় ১৯৭০সালে। সেসময় যুক্তরাষ্ট্রে বিলি মিলিগান নামক একজন ব্যক্তিকে ধর্ষণের দায়ে আটক করা হলে দেখা যায় তার মধ্যে আলাদা আলাদা ২৪জন ব্যক্তিত্বের বাস।
“স্পিল্ট” নামক একটা হলিউডি সিনেমার প্রধান চরিত্র এ মানসিক রোগে আক্রান্ত। এছাড়াও এ রোগের স্বরুপ ভালোভাবে বুঝতে হলে কোরিয়ান একটি ধারাবাহিক আছে, ‘কিল মি হিল মি’, দেখতে পারেন ধারাবাহিকটি।