কোন বয়স থেকে মাখতে শুরু করবেন অ্যান্টি-এজিং ক্রিম?
Tweet
টিনেজের শেষ ধাপে অর্থাৎ আঠেরো-উনিশ বছর থেকেই কি অ্যান্টি-এজিং ক্রিম ব্যবহার করতে শুরু করে দেওয়া উচিত? নাকি অপেক্ষা করা উচিত চল্লিশের কোঠায় পৌঁছোনো পর্যন্ত? এমন সব প্রশ্নের উত্তর অনেকেই চাইছেন জানি। আমরাও এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি। পড়তে থাকুন।
অ্যান্টি-এজিং ক্রিম ব্যবহারের আদর্শ বয়স
কৈশোরে অর্থাৎ মোটামুটি তেরো-চোদ্দ বছর বয়স থেকে শুরু করে বছর দশেক আপনার ত্বক তার শ্রেষ্ঠ অবস্থায় থাকে। ওই সময়ে কারও কারও ব্রণর সমস্যা হয়, এ বাদে ত্বকের আর কোনও বড়ো সমস্যা সাধারণত হয় না। তাই এই সময়টায় আলাদা করে অ্যান্টি-এজিং প্রডাক্ট ব্যবহার করার দরকার সাধারণত হয় না। যদিও অনেকে কুড়ির কোঠায় পা দেওয়ার পর পরই অ্যান্টি-এজিং ক্রিম মাখতে শুরু করে দেন, তবে সব দিক বিবেচনা করলে পঁচিশ বছর বয়সটাই অ্যান্টি-এজিং ক্রিম ব্যবহার করতে শুরু করার সবচেয়ে আদর্শ সময়। কুড়ির কোঠার শুরুতে বা তিরিশে পৌঁছে অ্যান্টি-এজিং ক্রিম মাখা শুরু করলে যে ফল পাওয়া যায়, তার চেয়ে বেশি ভালো ফল পাওয়া যায় পঁচিশ থেকে শুরু করলে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার শরীরে নানা পরিবর্তন আসে, অ্যান্টি-এজিং ক্রিম সে সব পরিবর্তনের সঙ্গে ত্বককে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে।
কেন ব্যবহার করবেন অ্যান্টি-এজিং ক্রিম?
অ্যান্টি-এজিং ক্রিম শুধু যে বলিরেখা, বয়সজনিত দাগছোপ, সূক্ষ্মরেখা দূরে রাখে তাই নয়। রোদের তাপ, আবহাওয়ার দূষণের কারণে আপনার ত্বক প্রতিদিন যে ক্ষতির শিকার হয়, তা সারিয়ে তুলে ত্বক সুস্থ, উজ্জ্বল রাখতেও অ্যান্টি-এজিং ক্রিম অপরিহার্য। ফলে পঁচিশে পা দেওয়ার পর নিয়ম করে অ্যান্টি-এজিং ক্রিম লাগাতেই হবে। নিজের ত্বকের ধরনের উপর ভিত্তি করে সঠিক প্রডাক্টটি বেছে নিন, প্রয়োজনে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। বয়সের কটাক্ষকে তুড়ি মেরে আপনার ত্বক থাকবে ঝলমলে সুন্দর!
ব্যবহার করুন পুদিনা পাতা, পেয়ে যান তরতাজা জেল্লাদার ত্বক:
পুদিনার গন্ধ ভালো লাগে? রান্নাবান্নায় কি প্রায়ই পুদিনা ব্যবহার করেন? রান্নাবান্নায় স্বাদ বাড়াতে বা গার্নিশিংয়ের কাজে পুদিনা বা মিন্ট বহুল ব্যবহৃত। কিন্তু রূপচর্চার জগতে পুদিনার ব্যবহার নিয়ে বিশেষ আলোচনা শোনা যায় না। অথচ বেশিরভাগ ভেষজ ফেসওয়াশ, শ্যাম্পু আর কন্ডিশনারে পুদিনা যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া পুদিনার বেশ কিছু ওষধি ব্যবহারও রয়েছে। মশার কামড় থেকে শুরু করে ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, ত্বকের শুষ্কতার মতো সমস্যা সমাধানেও পুদিনা বা মিন্ট খুবই কাজের। ফলে ত্বকচর্চার উপাদান হিসেবেই বা মিন্ট ব্যবহার করবেন না কেন? রইল মিন্ট দিয়ে তৈরি কিছু অসাধারণ ফেসপ্যাকের হদিশ, যার নিয়মিত ব্যবহারে ঝলমলিয়ে উঠবে আপনার ত্বক।
উজ্জ্বল ত্বকের জন্য কলা আর পুদিনার প্যাক:
কলায় পর্যাপ্ত এ, বি, সি ও ই ভিটামিন রয়েছে। তা ছাজডা পটাশিয়াম, ল্যাকটিক অ্যাসিড, অ্যামাইনো অ্যাসিড আর জ়িঙ্কও রয়েছে পুরো মাত্রায়। এই পুষ্টিকর উপাদানগুলি ব্রণ প্রতিরোধ করে, ব্রণর দাগ কমায়, ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন জোরদার করে, রোদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় এবং ত্বকের ইলাস্টিসিটি অর্থাৎ স্থিতিস্থাপক ভাবের উন্নতি ঘটায়। পুদিনা আর কলার পুষ্টি একসঙ্গে মিলে ত্বক উজ্জ্বল করে তোলে।
আপনার দরকার: দু’ টেবিলচামচ চটকানো পাকা কলা আর 10-12 টা পুদিনা পাতা
পদ্ধতি:
কলা আর পুদিনা পাতা একসঙ্গে বেটে একটা মিহি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই মিশ্রণটা মুখে ফেস প্যাকের মতো করে লাগিয়ে রাখুন। 15-30 মিনিট পর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক কি দু’বার করতে হবে।
ব্রণ কমাতে লেবু ও পুদিনার প্যাক:
পুদিনা পাতায় স্যালিসাইলিক অ্যাসিড রয়েছে যা ব্রণ প্রতিরোধে সক্ষম। লেবুর রসে হালকা ব্লিচ করার ক্ষমতা রয়েছে যা ব্রণর দাগ কমিয়ে দিতে পারে। লেবুর রসের ভিটামিন সি ক্ষত সারিয়ে ত্বক সুস্থও করে তোলে চটপট।
আপনার দরকার: 10-12 টা পুদিনা পাতা আর এক টেবিলচামচ লেবুর রস
পদ্ধতি:
পুদিনা পাতা থেঁতো করে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। ব্রণর উপর লাগিয়ে 15 মিনিট রাখুন, তারপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। মুখে ব্রণর উপদ্রব বেশি থাকলে রোজ করতে হবে।
এক্সফোলিয়েশনে শসা ও পুদিনার স্ক্রাব:
শুষ্ক ও সংবেদনশীল ত্বকের জন্য শসা আর পুদিনা দিয়ে তৈরি স্ক্রাব খুবই উপযোগী। কোমলভাবে ত্বক পরিষ্কার করতে ও মৃত কোষ দূর করতে জুড়ি নেই এই স্ক্রাবটির।
আপনার দরকার: এক টেবিলচামচ ওটস, 10-12টা পুদিনা পাতা, এক চাচামচ মধু, দু’ চাচামচ দুধ আর আধ ইঞ্চি পুরু করে কাটা শসার কিছু টুকরো
পদ্ধতি:
শসাটা কুরিয়ে নিন, পুদিনা পাতাগুলো বেটে নিন। এবার ওটসের সঙ্গে কুরোনো শসা, পুদিনা বাটা, মধু আর দুধ মেশালে একটা খসখসে মিশ্রণ তৈরি হবে। এই মিশ্রণটা ফেস প্যাকের মতো করে মুখে লাগিয়ে শুকোতে দিন। শুকিয়ে গেলে মুখ চক্রাকারে মাসাজ করে ডেড সেল তুলে ফেলুন। দু’ থেকে তিন মিনিট রেখে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। টানটান, মসৃণ ত্বক পেতে সপ্তাহে দু’ থেকে তিনবার করতে হবে।