জেনে নিন ফেইস ,সিরাম ও এসেন্স এর মধ্যে পার্থক্য

Share on Facebook

কিছুদিন আগেও একটা সময় ছিল যখন মানুষ  স্কিন কেয়ার মানেই সিম্পল ক্লেঞ্জিং, টোনিং আর ময়েশ্চারাইজিং; এই স্টেপসগুলো বুঝতেন। এই উপাদানগুলো সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অনেকের বেশ ভালো ধারণা আছে ফলে তাদের জন্য তা মেইনটেইন করা বেশ সহজ ছিল। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় কোরিয়ান বিউটি ট্রেন্ড তথা গ্লাস স্কিন কেয়ার ট্রেন্ড এর কল্যাণে এখন স্কিন কেয়ার রুটিনে যুক্ত হয়েছে  ১২ স্টেপ । এই স্টেপগুলো সম্পর্কে আমাদের অনেকের মধ্যেই স্পষ্ট কোন ধারণা এখনো গড়ে উঠতে পারে নি; কিন্তু  ফেইস অয়েল, সিরাম ও এসেন্সের মধ্যে পার্থক্য জানেন কি? কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনে এই তিনটি ধাপ বেশ গুরুত্বপূর্ণ।  আজকে আমি আলোচনা করবো কোরিয়ান বিউটি ট্রেন্ডের এই ৩ টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিয়ে। 

 

ফেইস অয়েল, সিরাম ও এসেন্সের মধ্যে বিদ্যমান পার্থক্য 

ফেইস সিরাম, এসেন্স ও অয়েলের মধ্যে পার্থক্য জানতে হলে  প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে আপনার ত্বকে এই সকল উপাদানের কাজ সম্পর্কে। তাহলে জেনে নিন, ত্বকের যত্নে কিভাবে কাজ করে এই ৩ ধরনের বিউটি প্রোডাক্ট।

 

ফেইস অয়েল

এই ধরণের  অয়েল মূলত আপনার স্কিনকে সাধারণত ময়েশ্চারাইজড করে এবং আপনার স্কিনের হাইড্রেশন লক করতে বেশ সাহায্য করে। সাধারনত এই অয়েল্টি ভিন্ন ধরনের প্ল্যান্ট অয়েল, অ্যাসেনশিয়াল অয়েল এর মিশ্রণে তৈরি হয়ে থাকে  যার ব্যবহারে আপনার স্কিন বেশ  সফট করার পাশাপাশি স্কিনকে একটা হেলদি গ্লো দিতে সাহায্য করবে।

 

এই অয়েল কেন ব্যবহার করবেন?

এই অয়েল মূলত  ড্রাই স্কিন এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উপকারি। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার পরে ত্বকে মূলত  ফেইস অয়েল ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে এক দিকে অয়েল তার নিজস্ব উপাদানের মাধ্যমে আমাদের স্কিনকে নারিশ করবে।পাশাপাশি সেই সাথে স্কিনের ময়েশ্চার এবং হাইড্রেশন কে লক করে রাখতে ভূমিকা পালন করে। তবে আমাদের মধ্যে যাদের স্কিন বেশ তৈলাক্ত; তারা অবশ্যই এই অয়েল ব্যবহারের পূর্বে এর উপাদানগুলো সম্পর্কে জেনে নিবেন এবং সম্ভব হলে একজন বিশেষজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্টের সাথে আলোচনা করে নিবেন।

 

আমাদের ত্বকে এজিং, নিদ্রাহীনতা বা ঠিকঠাকভাবে এক্সফোলিয়েশন না করার কারণে ত্বক বেশ মলিন হয়ে উঠে। তাই এটির নিয়মিত ব্যবহারে আমাদের ত্বকের মলিনতা একেবারেই দূর করে স্কিনে ভিতর থেকে একটা হেলদি গ্লো এনে দিতে সাহায্য করবে।

 

মূলত ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পূর্বে, বিশেষত যাদের ড্রাই স্কিনের সমস্যা রয়েছে।তারা ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পূর্বেএক ফোঁটা অয়েল আপনার ফাউন্ডেশন বেইস কে একদম ফ্ললেস একটা লুক এনে দিতে সাহায্য করবে। আবার আপনি চাইলে কন্সিলার বা ফাউন্ডেশন এর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করে নিতে পারেন।

 

ফেইস সিরাম

ফেইস সিরামে মূলত অনেক বেশি অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট বিদ্যমান থাকে।যেমনঃ হায়ালুরনিক এসিড, ভিটামিন সি, গ্লাইকলিক এসিড এবং এরকম আরও অনেক উপাদান যেগুলোর ব্যবহারে  সরাসরি স্কিনের নির্দিষ্ট কিছু সমস্যার সমাধান করে দিবে। আপনার ত্বকে মূলত  যে ধরণের সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন তা অনুযায়ী ফেইস সিরাম নির্বাচন করে নিতে হবে। যেমন; অ্যান্টি এজিং বা স্কিন ব্রাইটেনিং অথবা ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি করার জন্য সঠিক উপাদান বুঝে আপনার ফেইস সিরাম নির্বাচন করতে হবে। তবে অবশ্যই এসেন্স ব্যবহারের পরে এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে আপনাকে এটি ব্যবহার করতে হবে।সেই সাথে  ফেইস সিরাম ব্যবহারের পর অন্য কোন প্রোডাক্ট ব্যবহারের আগে কমপক্ষে ১০ মিনিট সময় দিতে হবে। যাতে আপনার ত্বকে সিরাম ভালোভাবে  শোষণ করতে পারে।

 

কেন এটি ব্যবহার করবেন?

অন্যান্য যেকোনো স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট এর তুলনায় সিরামের ফরমুলেশন অনেক বেশি পাতলা হয়ে থাকে যার ফলে ফেইস সিরাম খুব দ্রুত স্কিন শোষণ করতে পারে। যার ফলাফল অনেক দ্রুত চোখে পড়ে।

 

তৈলাক্ত স্কিন, একনে-সমস্যা  বা সেনসিটিভ স্কিন এর জন্য ফেইস সিরাম অনেক বেশি কার্যকরী হয়ে থাকে।

 

নিয়াসিনামাইডের মতন উপাদান থাকে যা আপনাকে দাগমুক্ত গ্লোয়িং স্কিন পেতে সাহায্য করে।

ফেইস সিরামে যেহেতু ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ফেরুলিক এসিড এবং গ্রিন টির মত উপাদান থাকে  এটি ত্বকে ইউভি রশ্মি এবং অন্যান্য পলিউশন থেকে স্কিন কে রক্ষা করতে বেশ সাহায্য করে।

 

ফেইস এসেন্স

 

কোরিয়ান স্কিন কেয়ারের অন্যতম জনপ্রিয় পন্য হচ্ছে এসেন্স। ফেইস এসেন্স হচ্ছে মূলত একটি ওয়াটার বেসড স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট যার মধ্যে  অনেক বেশি পরিমাণে অ্যাক্টিভ ইনগ্রিডিয়েন্টস বিদ্যমান থাকে।

 

এই উপাদান ত্বকের ওভারঅল হেলথকে উন্নত করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।

 

ক্লিঞ্জার এবং টোনার ব্যবহারের পরে এসেন্স এর ব্যবহার স্কিনের হাইড্রেশন রিস্টোর করে। যা আপনার ত্বককে বেশ সজীব করে তুলে। যা পরবর্তীতে সিরাম ও ময়েশ্চারাইজার শোষণে অনেক বেশি সাহায্য  করে।

 

আপনি কেন ব্যবহার করবেন?

ফেইস এসেন্সের একদম প্রাথমিক নিয়ম হচ্ছে স্কিনে সিরাম, ময়েশ্চারাইজার যেটাই আপনি ব্যবহার করুন না কেন; সেটা যাতে খুব ভালোভাবে স্কিন শুষে নিতে পারে। স্কিনকে মূল ত পরিপূর্ণভাবে তৈরি করতে সাহায্য করে। ময়েশ্চারাইজড করার পাশাপাশি যেহেতু এই  এসেন্সে অনেক বেশি পরিমাণে এক্টিভ ইনগ্রিডিয়েন্টস থাকে; তাই এটির ব্যবহারে –

 

স্কিন সেলকে রিহাইড্রেট করতে সাহায্য করে।

 

স্কিন ব্যারিয়ারকে প্রটেক্ট করতে সাহায্য করে।

 

ত্বকের পি এইচের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

 

এপিডারমিস লেয়ারকে সফট এবং স্মুথ করে।

 

তাহলে এতক্ষণে নিশ্চিয়ই ফেইস অয়েল, সিরাম ও এসেন্সের মধ্যে পার্থক্য জানতে পারলেন। সেই সাথে কোন উপাদান কীভাবে আপনার ত্বকে কাজ করে সেটা সম্পর্কেও জেনে নিলেন। আশা করছি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি আপনার ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী পছন্দের প্রোডাক্টটি খুঁজে নিতে পারবেন কোন ঝামেলা ছাড়াই। 

 
 

ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।

Leave a Reply