এগিয়ে থাকা টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের ফলাফল কেমন

Share on Facebook

 

টি–টোয়েন্টি সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে পারে বাংলাদেশ—ওয়ানডে সিরিজ শেষেও এই কথা বললে কি বিশ্বাস হতো? সম্ভবত না।

একটি জয় যেন আলোচনাই বদলে দিয়েছে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এখন টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের কথা ভাবছে বাংলাদেশ। শক্তি-সামর্থ্যে ইংল্যান্ড কতটা শক্তিশালী, সিরিজে ফিরে আসার সামর্থ্য তাদের কতটা আছে, তা নতুন করে না বললেও চলছে। কিন্তু টি–টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচে জেতার পর বাংলাদেশরই বা এই সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা কতটুকু? অতীত পরিসংখ্যানই বা কী বলছে?

বাংলাদেশ প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছে ২০০৬ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তবে দুই কিংবা ততোধিক ম্যাচের সিরিজ খেলতে টাইগারদের অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও ৬ বছর। ২০১২ সালে প্রথমবার দুই কিংবা ততোধিক ম্যাচের সিরিজ খেলে বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।

ইংল্যান্ড সিরিজের আগপর্যন্ত বাংলাদেশ দুই বা তার চেয়ে বেশি ম্যাচের সিরিজ খেলেছে ২৬টি। সেখানে সিরিজে প্রথম ম্যাচে জয় এসেছে এমন সিরিজের সংখ্যা ১০টি। এই ১০টিতে সিরিজে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে তাকানো যাক।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১২ সালের সেই সিরিজে প্রথম ম্যাচে সাকিব আল হাসানের ফিফটি আর ইলিয়াস সানির ৫ উইকেটে ৭১ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। এরপর সিরিজে দুই ম্যাচে আইরিশরা লড়াই করলেও জিতেছিল বাংলাদেশই। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ১ রানে আর তৃতীয় ম্যাচে জয় ইনিংসের শেষ বলে ২ উইকেট হাতে রেখে।

 এরপর বাংলাদেশ ২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। সে সিরিজের প্রথম ম্যাচে তামিম ইকবালের ৬৯ রানের ইনিংসে ৮ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে সিরিজের দ্বিতীয় ও সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ১ উইকেটে হারায় নেদারল্যান্ডস।

নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হওয়ার পর প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েও টানা দুটি সিরিজ ড্র করে বাংলাদেশ। এই দুই সিরিজই বাংলাদেশ খেলেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০১৫ সালের নভেম্বরে হওয়া দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-১ ব্যবধানে ড্র করার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে হওয়া ৪ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও শেষ হয় ২-২ সমতায়। ৪ ম্যাচের এই সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ভারত সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে স্বাগতিকদের হারায় বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে ব্যাটিং ধসের জন্য সিরিজ খোঁয়ায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। এরপর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়েতে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ হারে ২৩ রানে। তবে ভারত সিরিজের পুনরাবৃত্তি জিম্বাবুয়ে সিরিজে আর হয়নি। সেই সিরিজের সর্বশেষ ম্যাচে বাংলাদেশ জেতে ৫ উইকেটে।

একই বছর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে আতিথ্য দেয় বাংলাদেশ। ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ও নিউজিল্যান্ডকে ৩-২ ব্যবধানে হারায় মাহমুদউল্লাহর দল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচেই সিরিজ জেতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। আর কিউইদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৪ ম্যাচ।

এরপর মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের পরীক্ষা দিয়েছে বাংলাদেশ। এই সিরিজে প্রথম ম্যাচে পাওয়া জয়কে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় টাইগাররা। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬১ রানে জেতার পর দ্বিতীয় ম্যাচে হেরেছে ৮ উইকেটে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের আগে আরব-আমিরাতের সঙ্গে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। আইসিসির সহযোগী এ দেশটিকে ২–০ ব্যবধানে হারাতে বেশি বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি সিরিজের মধ্যে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৫টিতে। হেরেছে ১টি। বাকি ৪ সিরিজের ফলাফল ড্র। ড্র হওয়া সিরিজগুলোর মধ্যে ৩টি সিরিজ ছিল ২ ম্যাচের আর একটি ৪ ম্যাচে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ ৩ ম্যাচের। প্রথম ম্যাচে জিতে এগিয়ে যাওয়া সিরিজগুলোর পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পক্ষে গেলেও এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নির্ভার হওয়ার সুযোগ নেই। আর ক্রিকেটে পরিসংখ্যানের প্রভাব তো ম্যাচে প্রথম বল গড়ানোর আগপর্যন্ত!

 

 

 

Leave a Reply